শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা) সম্মন্ধে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে তিনি গরীব ছিলেন। দারিদ্রের কষাঘাতে তিনি ঠিকমত আহার করতে পারতেন না। ক্ষুধার তাড়নায় অনন্যোপায় হয়ে পেটে পাথর বেধে একটু আরাম পাওয়ার চেষ্টা করতেন। তার পরিধান করার মত কোন ভালো জামা কাপড় ছিলনা। ছেড়া জামায় সত্তর তালি দিয়ে তা পরতেন। নিজের জীবিকা নির্বাহের জন্য ইহুদীর বাগানে গভীর কুয়া থেকে পানি তুলতেন এবং এক বালতি পানির বিনিময়ে একটি খুরমা লাভের আশায় কাজ করতেন। দোজাহানের বাদশাহ রাহমাতাল্লিল আলামিন সম্পর্কে এই ধরনের উক্তিকে ইতিহাসের আলোকে যাচাই করলে এর কোন ভিত্তি খুজে পাওয়া যায়না। বরং উদ্দেশ্য মুলক ভাবে তাকে মানুষের কাছে হেয় করার লক্ষ্য এ মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। আল্লাহ নিজে হযরত রাসূল (স) এর সু-উচ্চ মর্যাদার স্বীকৃিত দিয়েছেন। হাদীসে কুদসীতে এরশাদ হয়েছে- " আমি আপনাকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছু্ই সৃষ্টি করতামনা " ( সিররুল আসরার, পৃষ্ঠা- ৭০ ) পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন ঃ "আমি আপনাকে জগত সমুহের রহমত হিসেবে প্রেরন করেছি" ( সূরা আম্বিয়া-১০৭) আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত যাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতেন না, যিনি ছিলেন দো-জাহানের রহমত স্বরুপ তিনি গরীব হন কিভাবে? হযরত রাসূল (স) আরবের সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত ও প্রভাব প্রতিপত্তিশীল কোরায়েশ বংশের হাশেমী গোত্রে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতা হযরত আব্দুল্লাহ ছিলেন তৎকালিন মক্কা নগরীর শাসনকর্তা ও পবিত্র ক্বাবা শরীফের হেফাজতকারী আব্দুল মুত্তালিবের সবচেয়ে আদরের সন্তান। আর মাতা সায়্যিদা আমিনা ছিলেন মদীনার বনু যাহরা গোত্রের খ্যতনামা এবং সম্মানিত নেতা আব্দুল ওহাব এর কন্য। সুতরাং হাযরত রাসূল (স) পিতৃকূল এবং মাতৃকূল উভয় দিক থেকে আরবের সবচেয়ে ধনী, সম্মানীত ও শ্রেষ্ঠ পরিবারের লোক ছিলেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

রাসুল (সাঃ) ধনী ছিলেন, গরিব ছিলেন না। আল্লাহ নিজেই এরশাদ করেন, আমি আপনাকে অসহায় অবস্থায় পেয়েছিলাম, অতঃপর আপনাকে সম্পদশালী করলাম। (সূরা দু'হা, আয়াতঃ ৮) আল্লাহ তায়ালা রাসুল (সাঃ)-কে যাকাত প্রধানের নির্দেশ দিয়ে এরশাদ করেন, নামাজ পড় ও যাকাত দাও। (সূরা-বাকারা আয়াতঃ ১১০) যাকে আল্লাহ নির্দেশ করলেন যাকাত প্রধানের জন্য তিনি গরিব হন কিভাবে? যাকাত গরীবের উপর ফরজ নয় যা ধনীদের উপর ফরজ। এ থেকে বুঝা যায় রাসুল (সাঃ) ধনী ছিলেন, গরিব ছিলেন না। হযরত রাসুল (সাঃ) বিদায় হজ্জ এ ১০০-টি উট কোরবানি করেন। হযরত ইবনে হাইয়ান (রাঃ) ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেন, রাসুল (সাঃ)- নিজ হাতে ৬৩-টি উট কোরবানি করেন। রাসুল (সাঃ)- কখনোই গরীব ছিলেন না। যিনি নিজ খরচে একসাথে ১০০ উঠ কোরবানি করতে পারেন তিনি গরীব হন কিভাবে? হযরত রাসুল (সাঃ)-এর বয়স যখন ২৫ বছর তখন তিনি মা খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ)-কে বিবাহ করেন। মা খাদিজা (রাঃ)- ছিলেন আরবের অন্যতম সেরা ধনী। মা খাদিজা মোহাম্মদ (সাঃ)-কে বিবাহ করার পর এক অনুষ্ঠানে আরবের সকল ধনীদের দাওয়াত করে তার সকল ধন-সম্পত্তি হযরত রাসুল (সাঃ)-এর নামে হস্তান্তর করে দেন। তখন থেকে মা খাদিজা (রাঃ)-এর সকল সম্পত্তির একক কর্ণধার হন হযরত রাসুল (সাঃ) অর্থাৎ রাসুল (সাঃ)-এর বয়স যখন ২৫ বছর তখনি তিনি ছিলেন আরবের সেরা ধনী। রাসুল (সাঃ)-এর পিতা হযরত আব্দুল্লাহ ছিলেন আরবের সেরা ব্যবসায়ী। ব্যবসার উদ্দেশ্যে তিনি সুদূর সিরিয়া, ইয়েমেন, মিশরে বাণিজ্যে যেতেন যা আমরা সবাই জানি। আমরা সবাই জানি রাসুল (সাঃ) যখন মা আমিনা এর গর্ভে ছিলেন তখন রাসুল (সাঃ)-এর পিতা মারা যান। আর তিনি যখন মারা জান তখন ব্যবসা করে কাফেলা নিয়ে মক্কার উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন এবং পথিমধ্যে তিনি ইন্তিকাল লাভ করেন। এ থেকে বুঝা যায় রাসুল (সাঃ)-এর পিতা আব্দুল্লাহ বড় মাপের ব্যবসায়ী ছিলেন । যার পিতা আরবের সেরা ব্যবসায়ী তিনি কিভাবে গরিব হন? রাসুল (সাঃ)-এর দাদা আব্দুল মুত্তালিব ছিলেন আরবের শাসনকর্তা। নবীজির দাদা মারা যাওয়ার পর তার চাচা আবু তালিব আরবের শাসনকর্তা হন এবং ৫ বছর বয়সে মা আমিনা এর মৃত্যুর পর মোহাম্মদ (সাঃ)- এর সমস্ত ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেন চাচা আবু তালিব। এ থেকে বুঝা যায় রাসুল (সাঃ) ধনী ছিলেন, গরিব ছিলেন না। আমরা জানি রাসুল (সাঃ) হজ্জ করেছিলেন। হজ্জ কি গরীবের উপর ফরজ নাকি ধনীদের? এ থেকেও বুঝা যায় রাসুল (সাঃ)-ধনী ছিলেন, গরিব ছিলেন না। হাদীস শরীফ থেকে জানা যায়, হযরত রাসুল (সাঃ) তার লস্কর-খানায় প্রতিদিন প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ লোককে খাওয়াতেন। যিনি এতো লোককে প্রতিদিন খাওয়াতেন তিনি গরীব হন কিভাবে? রাসুল (সাঃ) ২৭টি যুদ্ধের সমস্ত ব্যয় বহন করেন। শত শত সাহাবীর খানার ব্যবস্তা করেন। রাসুল (সাঃ) যদি গরিব হতেন, তাহলে তিনি ২৭টা যুদ্ধের পরিচালনা করতে পারতেন না। হাদীস শরীফ থেকে আরো জানতে পাই, হযরত রাসুল (সাঃ) একবার ২৭ টা উটের বিনিময়ে নিজের জন্য একটা জামা ক্রয় করেন। যিনি একটি জামা ২৭ টি উটের বিনিময়ে কিনতে পারেন, তিনি কি কখনো গরিব হতে পারেন? দুনিয়ার হিসাবে বর্তমানে একটা উটের বাজার-মূল্য প্রায় ৫-৬ লক্ষ টাকা। তাছাড়া রাসুল (সাঃ) যুদ্ধে যে মাথার শিরোস্থান- মোবারক ব্যাবহার করতেন তাও ছিল সম্পূর্ণ স্বর্ণের । যা আজও তুরস্কের যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও নবীজি যে তরবারি মোবারক ব্যবহার করতেন তাও ছিল স্বর্ণ-খচিত । রাসুল (সাঃ)-যে মিম্বরে বসে খুতবা দিতেন, তাও ছিল স্বর্ণের। ইতিহাসের এমন কোন দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না যে যুদ্ধে কোন রাজা-বাদশা স্বর্ণের শিরোস্তান ব্যবহার করেছেন। তাই যার সমস্ত ব্যবহারের জিনিস যদি স্বর্ণের হয়, তিনি কি কখনো গরিব হতে পারেন?

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (সা) সম্মন্ধে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে তিনি গরীব ছিলেন। দারিদ্রের কষাঘাতে তিনি ঠিকমত আহার করতে পারতেন না। ক্ষুধার তাড়নায় অনন্যোপায় হয়ে পেটে পাথর বেধে একটু আরাম পাওয়ার চেষ্টা করতেন। তার পরিধান করার মত কোন ভালো জামা কাপড় ছিলনা। ছেড়া জামায় সত্তর তালি দিয়ে তা পরতেন। নিজের জীবিকা নির্বাহের জন্য ইহুদীর বাগানে গভীর কুয়া থেকে পানি তুলতেন এবং এক বালতি পানির বিনিময়ে একটি খুরমা লাভের আশায় কাজ করতেন। দোজাহানের বাদশাহ রাহমাতাল্লিল আলামিন সম্পর্কে এই ধরনের উক্তিকে ইতিহাসের আলোকে যাচাই করলে এর কোন ভিত্তি খুজে পাওয়া যায়না। বরং উদ্দেশ্য মুলক ভাবে তাকে মানুষের কাছে হেয় করার লক্ষ্য এ মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।
আল্লাহ নিজে হযরত রাসূল (স) এর সু-উচ্চ মর্যাদার স্বীকৃিত দিয়েছেন।
হাদীসে কুদসীতে এরশাদ হয়েছে-
" আমি আপনাকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছু্ই সৃষ্টি করতামনা " ( সিররুল আসরার, পৃষ্ঠা- ৭০ 
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন ঃ
"আমি আপনাকে জগত সমুহের রহমত হিসেবে প্রেরন করেছি" ( সূরা আম্বিয়া-১০৭)
আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত যাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতেন না, যিনি ছিলেন দো-জাহানের রহমত স্বরুপ তিনি গরীব হন কিভাবে?

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ