কে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবে,মাওলানা সবে 40 জন ,আর হাজি সাবে 500 জন  সত্যি কি ? আর কোরানের হাফেজের মর্যাদা কতটুকু ? রেফারেন্স সহ জানাবেন  জাযাকাল্লাহ 
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

একজন কুরআনের হাফেজ কিয়ামতের দিন দশ জন জাহান্নামীকে সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে না। তবে আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেন এবং যাকে শাফায়াত করার অনুমতি দেন তার কথা ভিন্ন। কুরআন ও সুন্নাহতে শাফায়াতের বর্ণনা এসেছে যযে তাওহীদপন্থীগণ শাফায়াতের হকদার হবে। এ প্রকার শাফায়াতের জন্য ৩টি শর্ত রয়েছে। ১। শাফায়াতকারীর উপর আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকা। ২। যার জন্য সুপারিশ করা হবে, তার উপরও আল্লাহর সন্তুষ্টি থাকা। ৩। শাফায়াতকারীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে শাফায়াত করার অনুমতি থাকা। আল্লাহ তাআলা এই শর্তগুলো কুরআন মাজীদে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেনঃ আকাশে অনেক ফেরেশতা রয়েছেন, যাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসু হয়না। কিন্তু আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেন এবং যাকে শাফায়াত করার অনুমতি দেন তার কথা ভিন্ন। (সূরা নাজ্‌মঃ ২৬) আল্লাহ বলেনঃ কে এমন আছে যে, সুপারিশ করবে তার কাছে তার অনুমতি ছাড়া? (সূরা বাকারাঃ ২৫৫) আল্লাহ বলেনঃ দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না। (সূরা ত্বো-হাঃ ১০৯) আল্লাহ তাআলা বলেনঃ তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করবেন, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট। (সূরা আন্বীয়াঃ ২৮) সুতরাং শাফায়াত পাওয়ার জন্য উপরোক্ত তিনটি শর্ত থাকা আবশ্যক। একজন কুরআনের হাফেজের অনেক মর্যাদা। হাফেজ হওয়ার কারনে তাকে সব সময় কুরআন চর্চা করতে হয়, এত সে প্রতি হরফে হরেফ ১০ নেকী করে পেয়ে থাকে। এভাবে সাধারন মানুষ হতে নেকী অর্জনের ক্ষেত্রে সে থাকে অগ্রগামী। কেয়ামাতের দিনও একজন হাফেজে কুরাআন বাড়তী মর্যাদা পেয়ে থাকবেন একজন সাধারন মানুষ হতে। নিচে এ সম্পর্কিত ২টি হাদীস পেশ করা হলো। আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ বলেছেন, কুরআন মাজিদে দক্ষ ব্যক্তি (আখেরাতে) সম্মানিত নেককার লিপিকার ফেরেশতাদের সাথে থাকবে। যে ব্যক্তি ঠেকে ঠেকে কষ্ট করে কুরআন পড়ে সে দু’টি পুরষ্কার পাবে। (বোখারী হা/৪৯৩৭; মুসলীম হা/৭৮৯; তিরমিযী হা/২৯০৪; আবু দাউদ হা/১৪৫৪)। আবু সাঈদ আল খুদরী (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, কোরআনের বাহককে জান্নাতে প্রবেশকালে বলা হবে, তুমি পাঠ করতে থাকো এবং উপরে আহরন করতে থাকো। অত:পর সে পড়তে থাকবে এবং প্রতিটি আয়াত পড়ার সাথে সাথে একটি স্তর অতিক্রম করবে। এভাবে সে তার জ্ঞাত শেষ আয়াতটি পর্যন্ত পড়বে। (আবু দাউদ হা/১৩১৭; আহমাদ হা/১০৯৬৮; আত তালীকুর রাগীব ২/২০৮; সিলসিলা সহীহাহ ২২৪০) উপরোক্ত হাদীস পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় যে, কোরআনের হাফেজ আখেরাতে ফেরেশতাদের সাথে অবস্থান করবে এবং জান্নাতে প্রবেশের পর বিভিন্ন স্তর অতিক্রম করে উপরে দিকে উঠবে। আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোরআন তেলওয়াত ও মুখস্থ রেখেছে এর হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম মেনেছে। তাকে আল্লাহ জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তার পরিবারের এমন দশজন লোক সম্পর্কে তার সুপারিশ কবুল করবেন যাদের প্রত্যেকের জন্য জাহান্নাম আবশ্যক ছিলো। (তিরমিযী হা/২৯০৫; আহমাদ ১২৭১; মিশকাত ২১৪১, তা’লীকুল রাগীব ২/২১০) ►তাহক্বীকঃ হাদীসটি সহীহ নয়, খুবই দূর্বল। কারন এই হাদীসে ২ জন দূর্বল রাবী রয়েছেন। ১। রাবী আবু উমারঃ এই রাবী সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের মন্তব্যগুলো হলোঃ- ওয়াকী ইবনুল জাররাহ সিকাহ বললেও আহামাদ বিন হাম্বাল বলেন, তার হাদীস প্রত্যাখানযোগ্য। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি মিথ্যূক। আলী ইবনুল মাদানী বলেন, তিনি হাদীস বর্ননায় দূর্বল। ইমাম বুখারী তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ২। রাবী কাসীর বিন যাযানঃ এই রাবী সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের মন্তব্যগুলো হলোঃ- ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আমি তাকে চিনি না। আবু হাতেম ও আবূ যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আল-আযাদী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ইমাম যাহাবী বলেন, তার থেকে দলিল গ্রহণযোগ্য নয়। লক্ষনীয় বিষয় হলো ইমাম তিরমিযী এই হাদীস লিপিবদ্ধ করে লিখেছিলেন, হাদীসটি গরীব। আমরা কেবল উল্লেখিত সূত্রে হাদীসটি জানতে পেরেছি। এর সনদসূত্র সহীহ নয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ