শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

 কোরআন-হাদিসের শক্তিশালী দলিলের ভিত্তিতে আহলুসসুন্নাহ ওয়ালজামাতের কোন আলেম এটাকে শিরক কিংবা কুফরি বলেন নি। ”আল-মাউসুআ’তুল ফিকহিয়া”তে (৬/২৯১)এসেছে,চার  মাজহাবের কোন ইমাম আত্মহত্যাকারীকে কাফির বলেন নি।


 আর আমরা জানি, কোন ঈমানদার ব্যক্তি যত বড় গোনাহই করুক না কেন; কিছুতেই চিরকালের জন্য জাহান্নামে যাবে না। 

  • রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি যব পরিমাণও নেকী থাকবে, তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং যে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি অণু পরিমাণও নেকী থাকবে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪৪, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২৫)  সুতরাং আত্মহত্যাকারীও চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে না। 
অতএব, হাদিসে যে আত্মহত্যাকে চিরকাল জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, তা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ। যেমন হাদিসে এসেছে, আবূ হুরাইরাহ রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,‘যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে যাবে। সেখানে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, সে তার বিষ তার হাতে থাকবে। জাহান্নামে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে বিষ খাইয়ে মারতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সে ধারালো অস্ত্র থাকবে যার দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে।(সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৪৪২)

 উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় আহলুসসুন্নাহ ওয়ালজামাতের আলেমগণ বলেন, 

  1. ইবনে খুজাইমা রহ. বলেন, কোরআন-হাদিসে মুমিনদের ব্যাপারে যত প্রকার শাস্তির বিবরণ এসেছে সবগুলো শর্তসাপেক্ষে। আর তা এই যে, বর্ণিত শাস্তি আল্লাহ চাইলে মাফ হয়ে যাবে।  যেমন আল্লাহ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। (সূরা নিসা-১১৬) 

সুতরাং আলোচ্য হাদিসে বর্ণিত শাস্তিও আল্লাহ চাইলে কমিয়ে দিতে কিংবা মাফ করে দিতে পারেন। অন্যথায় আত্মহত্যাকারীর অপরাধটা এমনই যে, সে চিরকালের জন্য জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত। (কিতাবুত তাওহিদ ২/৮৬৯) 

  • আরবের পরিভাষায় خالدا مخلداশব্দ, যার অনুবাদ করা হয়, ‘চিরকাল’। মূলত এর দ্বারা আরবের লোকেরা কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী অবস্থাকে বুঝিয়ে থাকেন। উক্ত হাদীসেও উদ্দেশ্যও দীর্ঘস্থায়ী হওয়া। চিরস্থায়ী হওয়া নয়। (আজইবা মুফিদাহ, সুওয়াল নং ৩১১৭৪) 
  •  হাদীসে যে বলা হয়েছে আত্মহত্যাকারী চিরদিন জাহান্নামে থাকবে, তা ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে যে হালাল মনে করে আত্মহত্যা করেছে। কেননা আহলুসসুন্নাহ ওয়ালজামাতের নিকট যে কবিরা গোনাহকে বৈধ মনে করে সে কাফের হয়ে যাবে। আর কাফের তো চিরদিন জাহান্নামে থাকবে এতে কোন  সন্দেহ নাই।(আদ্দুররুল মুখতার ২/১২৫)
ক্রেডিট → প্রায় এরকমই প্রশ্নে    করেছেন এর উত্তর দেখেতে  
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আত্মহত্যা মানে নিেজকে নিজেই ধ্বংস করা। নিজ আত্মাকে চরম যন্ত্রণা ও কষ্ট দেয়া। নিজ হাতে নিজের জীবনের সকল কর্মকাণ্ডের পরিসমাপ্তি ঘটানোর নামই আত্মহত্যা। ইসলামি দৃষ্টিকোণে আত্মহত্যা একটি জঘন্যতম মহাপাপ। আল্লাহ মানুষকে মরণশীল করে সৃষ্টি করেছেন [সূরা আল-আনকাবূত, ৫৭]। মানুষকে একমাত্র আল্লাহই জন্ম দেন এবং একমাত্র তিনিই মৃত্যু ঘটান [সূরা ইউনুস, ৫৬]। কিন্তু আত্মহত্যার ক্ষেত্রে বান্দা স্বাভাবিক মৃত্যুকে উপেক্ষা করে মৃত্যুকে নিজের হাতে নিয়ে নিজেই নিজকে হত্যা করে ফেলে অনধিকার চর্চা করেন। এ কারণে এটি একটি গর্হিত কাজ, হারাম এবং কবিরা গুনাহ। আল্লাহ তায়ালা এমন কাজকে মোটেই পছন্দ করেন না।

আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন, ‘আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, অবশ্যই আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো, আল্লাহর পক্ষে তা সহজসাধ্য।’ [সূরা আন-নিসা, ২৯-৩০] ‘আর তোমরা নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না।’ [সূরা আল-বাকারা, ১৯৫]


আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে যাবে। সেখানে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, সে তার বিষ তার হাতে থাকবে। জাহান্নামে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে বিষ খাইয়ে মারতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সে ধারালো অস্ত্র থাকবে যার দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে।’ [বুখারী : ৫৪৪২; মুসলিম : ১০৯]

 আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে দোজখে অনুরূপভাবে নিজ হাতে ফাঁসির শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। আর যে বর্শার আঘাত দ্বারা আত্মহত্যা করে- দোজখেও সে সেভাবে নিজেকে শাস্তি দেবে। আর যে নিজেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবে, কিয়ামতের দিন সে নিজেকে উপর থেকে নিক্ষেপ করে হত্যা করবে।’ [ইবন হিব্বান : ৫৯৮৭; তাবরানী : ৬২১

জুনদুব ইবন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের পূর্বেকার এক লোক আহত হয়ে সে ব্যথা সহ্য করতে পারেনি। তাই সে একখানা চাকু দিয়ে নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলে। এর পর রক্তক্ষরণে সে মারা যায়। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা নিজেকে হত্যা করার ব্যাপারে বড় তাড়াহুড়া করে ফেলেছে। তাই আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম।’ [বুখারী : ৩২৭৬; মুসলিম : ১১৩]

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ