আল্লাহর বাণী " তোমাদের অনর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদের পাকড়াও করেন না; কিন্তু যেসব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃত করো, সেসবের জন্য তিনি পাকড়াও করেন। অতএব এর কাফফারা হলো, ১০ জন দরিদ্রকে খাবার দেবে, যা তোমরা নিজ পরিবারকে দিয়ে থাকো।
অথবা তাদের বস্ত্র প্রদান করবে কিংবা একজন দাস মুক্তি করবে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে তিন দিন রোজা রাখবে। তোমরা শপথ করলে এটাই তোমাদের কাফফারা। তোমরা তোমাদের শপথ রক্ষা করো। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর বিধানগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো"।
(সুরা আল মায়েদা : ৮৯)
উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যায় শপথের কয়েকটি প্রকার বর্ণিত হয়েছে। শপথ সম্পর্কিত কিছু আলোচনা সুরা বাকারার ২২৫ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছিল। সবগুলোর সারকথা হলো, শপথ তিন প্রকার। এক. যদি অতীত ঘটনা সম্পর্কে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা শপথ করা হয়, তাকে 'ইয়ামিনে গুমুস' বা পাপে নিমজ্জিত শপথ বলা হয়। উদাহরণত, কেউ কোনো কাজ করে জেনেশুনে শপথ করে বলল যে সে কাজটি করেনি। এ মিথ্যা শপথ কবিরা গুনাহ। তবে এর জন্য কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
দুই. নিজ ধারণায় সত্য মনে করে কোনো অতীত ঘটনা সম্পর্কে শপথ করা। অথচ বাস্তবে তা অসত্য। যেমন- কোনো অসমর্থিত সূত্রে জানা গেল, অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। এর ওপর নির্ভর করে কেউ আল্লাহর নামে শপথ করে বলল, 'অমুক ব্যক্তি এসে গেছে। ' এরপর দেখা গেল, এটি বাস্তবের বিপরীত। এ ধরনের শপথকে 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বলা হয়। এ ছাড়া অনিচ্ছাকৃতভাবে মুখে শপথবাক্য উচ্চারিত হলে একেও 'ইয়ামিনে লগ্ভ' বা অহেতুক শপথ বলা হয়। এ-জাতীয় শপথে কোনো গুনাহ নেই। কাফফারাও দিতে হয় না।
তিন. আল্লাহর নাম নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো কাজ করা বা না করার শপথ করা। এ রকম শপথকে 'ইয়ামিনে মুনআকিদ' বা কার্যকর শপথ বলা হয়। এ শপথ ভঙ্গ করলে কাফফারা ওয়াজিব হবে। এমনকি কোনো কোনো অবস্থায় গুনাহও হয়।
সুতরাং -আলোচনা থেকে বুঝা গেলো-আপনার অনিচ্ছাকৃত শপথ বাক্য পাঠ করার দ্বারা কাফফারা ওয়াজিব হবে না৷যা দুই নাম্বারে আলোচনা হয়েছে৷ কিন্তু..কথায় কথায় অনর্থক শপথ করা থেকও বারণ করেছে ইসলাম৷আবার আপনি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে আপনার কথার সত্যতা প্রকাশ করার জন্য শপথ করেন,তবে অবশ্যই কাফফারা ওয়াজিব হবে এবং গোনাহ হবে৷