নিচে জান্নাত ও জাহান্নাম সম্পর্কে কিছু সহিহ হাদিস বর্ণনা করা হলো৷
কোন লোকই তার ‘আমালের দ্বারা জান্নাতে যেতে পারবে না, বরং আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে জান্নাতে যাবে।
★আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, তোমাদের কোন লোকের ‘আমালই তাকে পরিত্রাণ দিতে পারবে না। এ কথা শুনে এক লোক বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনাকেও না? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমাকেও না। তবে যদি আল্লাহ তা‘আলা তাঁর করুণা দ্বারা আমাকে ঢেকে নেন। তোমরা অবশ্য সঠিক পন্থা অবলম্বন করবে। (ই.ফা. ৬৮৫১, ই.সে. ৬৯০৭)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
★আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের মাঝে এমন কোন লোক নেই, যার ‘আমাল তাকে জান্নাতে দাখিল করাতে পারে। অতঃপর তাঁকে জিজ্ঞস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও কি নন? তিনি বললেন, হ্যাঁ আমিও নই। তবে আল্লাহ যদি তাঁর অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে আবৃত করে নেন। (ই.ফা. ৬৮৫২, ই.সে. ৬৯০৯)
★আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ : তোমাদের কারো ‘আমাল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারবে না। সহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনিও কি নন? তিনি বললেনঃ আমিও নই। তবে যদি আল্লাহ তা‘আলা আমাকে তাঁর অনুগ্রহ ও করুণা দ্বারা ঢেকে নেন। (ই.ফা. ৬৮৫৫, ই.সে. ৬৯১২)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
★জান্নাতিদের সম্পর্কে এসেছে৷ আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ)-এর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সমস্ত ভূখণ্ড কিয়ামাতের দিন একটি রুটির মতো হয়ে যাবে। আল্লাহ সেটি নিজ হাতে এপাশ-ওপাশ করবেন, যেমন তোমাদের মাঝে কেউ সফরের সময় নিজ রুটি এপাশ-ওপাশ করে। এ দিয়ে হবে জান্নাতবাসীর জন্য আতিথেয়তা। এমন সময় এক ইয়াহূদী লোক এসে বলল, হে আবুল কাসিম! রহ্মান আপনার প্রতি বারাকাত দান করুন। কিয়ামাতের দিন জান্নাতবাসীদের আতিথেয়তা সম্পর্কে আপনাকে জানাব কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। ইয়াহূদী হলল, ‘এ পৃথিবীটি একটি রুটির রূপ ধারণ করবে,’ যেমন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন। রাবী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দিকে লক্ষ্য করে এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তাঁর মাড়ির মুবারক দাঁত প্রকাশিত হয়ে পড়েছিল। ইয়াহূদী বলল, তাদের তরকারি কি হবে তা কি আপনাকে বলল? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সে বলল, বালাম এবং নূন। সহাবাগণ প্রশ্ন করলেন, তা কি? সে বলল ষাঁড় এবং মাছ- যাদের কলিজার বাড়তি অংশ থেকে সত্তর হাজার লোক আহার করতে পারবে। (ই.ফা. ৬৮০০, ই.সে. ৬৮৫৪)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
★আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ জাহান্নামের উপযোগী-দুনিয়ায় সর্বাধিক সচ্ছল ও ধন-সম্পদের অধিকারী লোককে কিয়ামাতের দিন উপস্থিত করা হবে। এরপর তাকে জাহান্নামের আগুনে একবার অবগাহন করিয়ে বলা হবে, হে আদাম সন্তান! দুনিয়াতে আরাম-আয়েশ কখনো তুমি ভোগ করেছো কি? কখনো তুমি স্বাচ্ছন্দ্য অবস্থায় দিন অতিবাহিত করেছো কি? সে বলবে, আল্লাহর শপথ! হে আমার প্রতিপালক! না, কক্ষনো করিনি। এরপর জান্নাতের উপযোগী দুনিয়ায় সর্বাধিক দুরাবস্থা সম্পন্ন লোককে আনা হবে। এরপর তাকে জান্নাতে একবার অবগাহন করিয়ে জিজ্ঞেস করা হবে, হে আদাম সন্তান! কখনো তুমি কষ্টে দিনাতিপাত করেছো কি? হৃদয় বিদারক এবং ভয়াবহ অবস্থায় দিনাতিপাত করেছো কি? সে বলবে, আল্লাহর কসম, হে আমার প্রতিপালক! কক্ষনো আমি কষ্টের সাথে দিনাতিপাত করিনি এবং দুঃখ কক্ষনো দেখিনি। (ই.ফা. ৬৮২৯, ই.সে. ৬৮৮৫)
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ أَنَسًا، قَالَ ذُكِرَ لِي أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِمُعَاذٍ " مَنْ لَقِيَ اللَّهَ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ ". قَالَ أَلاَ أُبَشِّرُ النَّاسَ قَالَ " لاَ، إِنِّي أَخَافُ أَنْ يَتَّكِلُوا
আনাস (রাঃ)
তিনি বলেন, আমার নিকট বর্ণনা করা হয়েছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু‘আয (রাঃ)-কে বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোনরূপ শির্ক না করে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। মু‘আয (রাঃ) বললেন, ‘আমি কি লোকদের সুসংবাদ দেব না?’ তিনি বললেন, ‘না, আমার আশংকা হচ্ছে যে, তারা এর উপরই ভরসা করে বসে থাকবে।’
(১২৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১২৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৩১)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১২৯
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস