জ্বীন বাতাসের সাথে উড়ে,অত্যন্ত দ্রুত,শক্তিশালী, ক্ষমতাবান। এছাড়াও জ্বীনের অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে, তাহলে আমরা সৃষ্টির সেরা জীব কেমনে?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

মানুষ জীনকেও বশ করতে পারে। নিঃসন্দেহে মানুষই সৃষ্টির সেরা জীব।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
HMMOBAROKBD

Call

মানুষ কেন সৃষ্টির সেরা জীব?এবিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমি কিছগ দলীল পেশ করছি৷  ইসলামী বিশ্বাস মতে, জিনদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানবজাতির আগে। বলা হয়েছে, মানবজাতির আবির্ভাবের আগে জিনরাই এই পৃথিবীতে রাজত্ব করত; পরে অবাধ্যতার অপরাধে এদেরকে উৎখাত করা হয়েছে; তাই বর্তমানে এরা পৃথিবীতেই নির্জন স্থানসমূহে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করছে। আল্লান বলেন- وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً قَالُوا أَتَجْعَلُ فِيهَا مَن يُفْسِدُ فِيهَا وَيَسْفِكُ الدِّمَاءَ وَنَحْنُ نُسَبِّحُ بِحَمْدِكَ وَنُقَدِّسُ لَكَ قَالَ إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُون ( 30 ) সূরা বাকারা – আয়াত 30 আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না। এরথেকে স্পষ্ট যে,আল্লাহ তায়ালা যদিও জিনও মানব জাতিকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু আগে সৃষ্টি করেছেন জিনকে,আর এরা অবাধ্যতার কারণে শাস্তি প্রাপ্ত, এবং এরপরই আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে তার ইবাদত করার জন্য ও খলিফা হিসেবে সৃষ্টি করেছেন৷ সুতরাং -নিশ্চয় আল্লাহর কাছে মানুষ ই শ্রেষ্ঠ৷  ইবলিস’ – আদম (আঃ) কে সিজদা না করার মাধ্যমে  যেই জ্বীন আল্লাহর আনুগত্য থেকে তাকে বিচ্যুত হয়েছিলো– তার নাম হচ্ছে ইবলিস। আল্লাহ তাকে সরাসরি আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন, সে হচ্ছে প্রথম জ্বীন যেমন আদম (আঃ) হচ্ছেন প্রথম মানুষ। আদম (আঃ) কে সিজদা করতে অস্বীকার করে সে আল্লাহর সামনে অহংকার প্রদর্শন করে – এই কারণে সে ‘কাফের’ হয়ে চির জাহান্নামী ও আল্লাহর অভিশপ্রাপ্ত। সুতরাং -আল্লাহ আদমকে মানে মানুষকে জিনের উপর প্রধান্য দিয়েছেন৷  তার সন্তানদের কেউ ঈমানদার মুসলিম, আবার কেউবা কাফের, তাদের পিতা ইবলিসের অনুসারী। যারা কাফের জিন, তাদেরকে সাধারণভাবে ‘শয়তান’ বলা হয়। ২. ‘খানজাব’ – খানজাব হচ্ছে বিশেষ একপ্রকার জ্বীন, যারা মানুষ যখন সালাতে দাঁড়ায় তাদেরকে নানান রকম চিন্তা মাথায় ঢুকিয়ে নামাজ থেকে অমনোযোগী ও উদাসীন করে তুলে। মুয়াত্তা মালিক :স্বলাত অধ্যায় ৩, হাদিস ১৫২ ৩. ‘ওলহান’ – এরা হচ্ছে একপ্রকার শয়তান জ্বীন যারা মানুষকে ওযুর সময় ওয়াসওয়াসা দেয়। ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ মানুষেরা ওযুতে ভুল করে বেশি। ৪. ‘ক্বারীন’ – ক্বারিন অর্থ হচ্ছে সংগী, প্রত্যেক মানুষের সাথেই শয়তান জ্বীন লেগে থাকে, সংগী হিসেবে। এরা সবসময় বান্দার অন্তরে খারাপ চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়ে পাপ কাজ করতে উতসাহিত করে। ক্বুরানে আল্লাহ এদের কথা উল্লেখ করেছেন সুরাতুল ক্বাফ-(১৯-২৯) এ। কুরআন এবং হাদীসের মতে জিনদের তৈরি করা হয়েছে ধোঁয়াবিহীন আগুন (আরবি শব্দ- ‘নার’) হতে। ‘নার’ শব্দটির কয়েকটি অর্থ আছে। ইবনে আব্বাসের (রাঃ) মতে, নার বলতে অগ্নিশিখার শেষ প্রান্ত বোঝানো হয়েছে। অন্য অনেকে মনে করেন, এর মানে হচ্ছে বিশুদ্ধ আগুন। আবার কেউ কেউ একে তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ বা অন্য কোনো তরঙ্গ-জাতীয় অস্তিত্ব বলে থাকেন। ইসলামী বিশ্বাস মতে, জিনদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানবজাতির আগে। বলা হয়েছে, মানবজাতির আবির্ভাবের আগে জিনরাই এই পৃথিবীতে রাজত্ব করত; পরে অবাধ্যতার অপরাধে এদেরকে উৎখাত করা হয়েছে; তাই বর্তমানে এরা পৃথিবীতেই নির্জন স্থানসমূহে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করছে। উল্লেখ্য যে, আরব্য রজনীর কাহিনীর মতো সবসময় জিন অসাধ্য সাধন করতে পারে না। কেননা ঝড়-বাদলের দিনে জিনরা চলতে পারে না। কারণ তারা আগুনের তৈরি বিধায় বৃষ্টির সময় আয়োনাজাইশেন ও বজ্রপাতের তীব্র আলোক ছটায় তাদের ক্ষতি হয়ে থাকে এবং কোন ঘরে যদি নির্দিষ্ট কিছু দোয়া-কালাম ও কাঁচা লেবু থাকে, তাহলে ঐ ঘরে জিন প্রবেশ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আর একটি কথা মানুষ মাটি দিয়ে সৃষ্টি হলেও, শেষ পর্যন্ত এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। কারণ মানুষ মূলত মাটি, পানি, বায়ু ও অগ্নির সংমিশ্রণ। আর তাই জিন আগুনের শিখা দিয়ে পয়দা হলেও তাদের দেহে জলীয় পদার্থের সমাবেশ লক্ষণীয়। এর স্বপক্ষে যুক্তি হলো: রসুল (স.) একদা উল্লেখ করেছিলেন যে, শয়তান বলে একটি জিন একদা নামাজের সময় তাঁর সাথে মোকাবিলা করতে এলে তিনি ঐ জিনকে গলা টিপে ধরলে, সেইক্ষণে জ্বিনের থুথুতে শীতলতা অনুভব করেছিলেন।[সুরা সাদ ৩৮:৩৫] এতে প্রতীয়মান হয় যে, জিন যদি পুরোপুরি দাহ্য হতো, তাহলে ঠাণ্ডা থুথুর থাকার কথা নয়। এদিকে জিন তিন প্রকারের আওতায় বিদ্যমান, প্রথমত. জমিনের সাপ, বিচ্ছু, পোকা-মাকড়, ইত্যাদি; দ্বিতীয়ত. শূন্যে অবস্থান করে এবং শেষত সেই প্রকারের জিন, যাদের রয়েছে পরকালে হিসাব। পূর্বেই বলেছি, এরা সূক্ষ্ম, তাই স্থূল মানুষ বা পশু-পাখি জিনদের দেখতে পারে না। তবে কুকুর ও উট এদের হুবহু দেখতে পারে। এ প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য যে, রাতে কোন অপরিচিত বস্তু বা জীব চোখে না দেখা গেলেও কুকুর কি যেন দেখে ছুটাছুটি ও ঘেউ ঘেউ করলে তাতে জ্বিনের আবির্ভাব হয়েছে বলে বুঝতে হবে। জিন বহুরূপী। এরা মানুষ, পশু-পাখি, ইত্যাদি যে কোন সুরত ধরতে পারে। সেই ক্ষণে উক্ত জীবের বৈশিষ্ট্যের আদলে তার ঘনত্ব কম-বেশি হয়ে থাকে এবং মানুষের দৃষ্টির মধ্যে আসে। সুতরাং -জিন ক্ষমতাবান সত্য! কিন্তু মানুষকে তারাও ভয় পায়৷জিন মানুষের দৃষ্টির অগোচরে হওয়ায় হয়তো ভয়ের কারণ হয়েছে, আর তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা কিছু স্পেশাল ক্ষমতাও দিয়েছে৷ কিন্তু মানুষের আছে এসব প্রতিহত করার অস্ত্র বা বাণী!সর্বদিক দিয়ে বিবেচনা করলে মানুষ ই শ্রেষ্ঠ ৷ 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

কে বলেছে মানুষ জ্বিনদের সাথে পারে না? সুরা ফালাক আর নাস পড়বেন, এটা এটম বোমার চেয়েও বেশি কার্যকর অস্ত্র।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

৭২:৬ সূরা জ্বীন:অনেক মানুষ অনেক জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের আত্নম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।


এখন আসি মূল কথাতে সূরা নমল(২৭)১৭ সুলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে এবং আমাকে সব কিছু দেয়া হয়েছে। নিশ্চয় এটা সুস্পষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব।

সুলায়মানের সামনে তার সেনাবাহিনীকে সমবেত করা হল। জ্বিন-মানুষ ও পক্ষীকুলকে, অতঃপর তাদেরকে বিভিন্ন ব্যূহে বিভক্ত করা হল। আমি এক নারীকে সাবাবাসীদের উপর রাজত্ব করতে দেখেছি। তাকে সবকিছুই দেয়া হয়েছে এবং তার একটা বিরাট সিংহাসন আছে। আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সেজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলী সুশোভিত করে দিয়েছে। অতঃপর তাদেরকে সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। অতএব তারা সৎপথ পায় না। তারা আল্লাহকে সেজদা করে না কেন, যিনি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের গোপন বস্তু প্রকাশ করেন এবং জানেন যা তোমরা গোপন কর ও যা প্রকাশ কর। সুলায়মান বললেন, এখন আমি দেখব তুমি সত্য বলছ, না তুমি মিথ্যবাদী।

তুমি আমার এই পত্র নিয়ে যাও এবং এটা তাদের কাছে অর্পন কর। অতঃপর তাদের কাছ থেকে সরে পড় এবং দেখ, তারা কি জওয়াব দেয়।বিলকীস বলল, হে পরিষদবর্গ, আমাকে একটি সম্মানিত পত্র দেয়া হয়েছে।

সেই পত্র সুলায়মানের পক্ষ থেকে এবং তা এইঃ সসীম দাতা, পরম দয়ালু, আল্লাহর নামে শুরু;

আমার মোকাবেলায় শক্তি প্রদর্শন করো না এবং বশ্যতা স্বীকার করে আমার কাছে উপস্থিত হও

বিলকীস বলল, হে পরিষদবর্গ, আমাকে আমার কাজে পরামর্শ দাও। তোমাদের উপস্থিতি ব্যতিরেকে আমি কোন কাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি না।

তারা বলল, আমরা শক্তিশালী এবং কঠোর যোদ্ধা। এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আপনারই। অতএব আপনি ভেবে দেখুন, আমাদেরকে কি আদেশ করবেন।

সে বলল, রাজা বাদশারা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে, তখন তাকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানকার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গকে অপদস্থ করে। তারাও এরূপই করবে।

আমি তাঁর কাছে কিছু উপঢৌকন পাঠাচ্ছি; দেখি প্রেরিত লোকেরা কি জওয়াব আনে।

অতঃপর যখন দূত সুলায়মানের কাছে আগমন করল, তখন সুলায়মান বললেন, তোমরা কি ধনসম্পদ দ্বারা আমাকে সাহায্য করতে চাও? আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন, তা তোমাদেরকে প্রদত্ত বস্তু থেকে উত্তম। বরং তোমরাই তোমাদের উপঢৌকন নিয়ে সুখে থাক।ফিরে যাও তাদের কাছে। এখন অবশ্যই আমি তাদের বিরুদ্ধে এক সৈন্যবাহিনী নিয়ে আসব, যার মোকাবেলা করার শক্তি তাদের নেই। আমি অবশ্যই তাদেরকে অপদস্থ করে সেখান থেকে বহিষ্কৃত করব এবং তারা হবে লাঞ্ছিত

সুলায়মান বললেন, হে পরিষদবর্গ, তারা আত্নসমর্পণ করে আমার কাছে আসার পূর্বে কে বিলকীসের সিংহাসন আমাকে এনে দেবে


জনৈক দৈত্য-জিন বলল, আপনি আপনার স্থান থেকে উঠার পূর্বে আমি তা এনে দেব এবং আমি একাজে শক্তিবান, বিশ্বস্ত।

কিতাবের জ্ঞান যার ছিল, সে বলল, আপনার দিকে আপনার চোখের পলক ফেলার পূর্বেই আমি তা আপনাকে এনে দেব। অতঃপর সুলায়মান যখন তা সামনে রক্ষিত দেখলেন, তখন বললেন এটা আমার পালনকর্তার অনুগ্রহ, যাতে তিনি আমাকে পরীক্ষা করেন যে, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, না অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে নিজের উপকারের জন্যেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং যে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সে জানুক যে, আমার পালনকর্তা অভাবমুক্ত কৃপাশীল।

উপরোক্ত বিষয়ে জিন বলেছে এনে দিবে কিন্তু কুরআনের বলছে কিতাবে একজন মানুষ চোখের পলকে এনে দেয় রাজসিংহাসন।  আশা করি জীন জাতীকে মানব জাতীর চেয়ে শক্তি শালী ভাববেন না। কারণ আল্লাহ নিজেই মানুষকে আশ্রাফে মাখলুকাত বলেছে। আর হাদিসে আছে জিনেরা জান্নাতি মানুষদের জন্য কাপড় তৈরি  করে।  




ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ