আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক মানুষের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য নির্ধারিত করে রেখেছেন।
আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত রিজিক মানুষ লাভ করে
বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যমে। এই রিজিক
তিনি দান করেন নিজ অনুগ্রহে। ইরশাদ
হয়েছে, আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি
অতি দয়ালু।
তিনি যাকে ইচ্ছা রিজিক দান করেন।
তিনি প্রবল পরাক্রমশালী। (সুরা শুরা
আয়াতঃ ১৯)
তবে এই রিজিক কাউকে কম আবার কাউকে বেশি দিয়েছেন তার নিজ অনুগ্রহে।
এ
বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, যদি আল্লাহ তার
সব বান্দাকে প্রচুর রিজিক দিতেন, তাহলে
তারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করত। কিন্তু
তিনি যে পরিমাণ ইচ্ছা, সেই পরিমাণ
'রিজিক' অবতীর্ণ করেন। (সুরা শুরাঃ
আয়াতঃ ২৭)
আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের পরীক্ষা
করার জন্য রিজিক বৃদ্ধি বা হ্রাস করেন।
রিজিক বৃদ্ধি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রমাণ
নয়, অনুরূপ রিজিকের সংকীর্ণতাও তার
অসন্তুষ্টির কারণ নয়। অধিকাংশ মানুষ এ
বিষয় জানে না। দুনিয়ার সচ্ছলতা কারো
শুভ লক্ষণের দলিল নয়। কেননা আখিরাতের
সাফল্য নির্ভর করে নেক আমলের ওপর।
দুনিয়ায় আল্লাহ কখনো অবাধ্যকে দেন
সচ্ছলতা, অনুগতকে দেন সংকীর্ণতা। আবার
কখনো এর বিপরীত করেন। কখনো উভয়কে
সচ্ছলতা দেন, কখনো দেন সংকীর্ণতা।
কখনো অবাধ্য বা অনুগত ব্যক্তিকে এক সময়
দেন সচ্ছলতা, অন্য সময় দেন অসচ্ছলতা।
এসব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন আল্লাহ তাআলা
নিজ প্রজ্ঞা ও হিকমতের ভিত্তিতে।
রিজিকের এই হ্রাস-বৃদ্ধি পরীক্ষাস্বরূপ।
আপনার প্রশ্ন! আমি যদি এখন বেশি বেশি
খেয়ে আমার নির্দিষ্ট নির্ধারিত পরিমাণ
খাদ্য শেষ করে ফেলি তবে কি ভবিষ্যতে খাবার পাব না?
জনাব! আপনার নির্দিষ্ট নির্ধারিত পরিমাণ
খাদ্য শেষ করে ফেললেও অধিক
পরিমাণে দোয়া এসতেগফার পড়লে আল্লাহ তায়ালা
ধারণাতীতভাবে জীবিকা দান
করবেন। এবং ভবিষ্যতেও খাবার পাবেন।
বিস্তারিতঃ দুনিয়াতে
সব মানুষই তার বরাদ্দকৃত সময় ও জীবিকা শেষ
করেই দুনিয়া থেকে বিদায় হবে। আল্লাহ
তায়ালা মানুষকে দুনিয়াতে পাঠানোর আগেই
তার জীবিকা লিখে রেখেছেন। ইবনে মাসউদ
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ)
বলেন, তোমাদের প্রত্যেকে তার মায়ের
পেটে ৪০ দিন শুক্র হিসেবে থাকে। অতঃপর
রক্তপিণ্ড হয়ে থাকে। অতঃপর মাংসপিণ্ডে
রূপান্তরিত হয়। এরপর তার কাছে ফেরেশতা
পাঠানো হয়, সে তার মাঝে রুহ প্রবেশ করে
আর তাকে চারটি বিষয় লিখে দেয়ার জন্য
নির্দেশ দেয়া হয় জীবিকা, তার সময় বা
বয়স, সে কি সৌভাগ্যবান না
দুর্ভাগ্যবান। (বোখারি ও মুসলিম)
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে লোক সকল! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা অন্বেষণ করো। কেননা কোন ব্যক্তিই তার জন্য নির্দ্ধারিত রিজিক পূর্ণরূপে না পাওয়া পর্যন্ত মরবে না, যদিও তার রিজিক প্রাপ্তিতে কিছু বিলম্ব হয়। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা অন্বেষণ করো, যা হালাল তাই গ্রহণ করো এবং যা হারাম তা বর্জন করো।
(সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস নম্বরঃ ২১৪৪
হাদিসের মানঃ সহিহ)
রিজিক শেষ হলে কিছু আমল রয়েছে, যা মানুষের রিজিক
বাড়ায়। জীবিকার ক্ষত্রে স্বয়ং আল্লাহ
তায়ালা এর শিক্ষা দিয়েছেন।
হাদিস শরিফে এসেছে, যে ব্যক্তি অধিক
পরিমাণে এসতেগফার পড়বে আল্লাহ তায়ালা
তাকে সব দুশ্চিন্তা ও সঙ্কটাপন্ন অবস্থা
থেকে মুক্ত করে দেবেন এবং তার
ধারণাতীতভাবে তাকে জীবিকা দান
করবেন। (আবু দাউদ)।