"জীবনেও নামাজের ধারের কাছেও যায় না , আর বলে , I wish  কালেমা পড়ে যেন আমার মৃত্যু হয়!!" একজন পোস্ট করেছে , আমার পোস্ট টা ভুল মনে হয়েছে , আচ্ছা যদি কোন ব্যক্তি এটা আসা করেন , যেন তিনি মৃত্যুর আগে কালেমা পরে মারা যান তাহলে কি সেটা ভুল? যদিও সে নামাজি না , আল্লাহ কোথায় বলেছেন এই কথা যে এমন আসা করা টা ভুল । আমরা এটাও জানি কোন নেক আমল বা কাজ করার চিন্তা কারীর আমল নামায়ায় সাথে সওয়াব প্রদান করে।  এখন তিনি বলতেছেন তিনি সম্পূর্ণ রাইট। কারণ তার বাবা বলছেন , তিনি যে গ্রূপে কাজ করেন সেখান কার এডমিন রা বলেছেন। এখন তাকে বুঝানোর মতো কোন দলিল সহ কেউ আমাকে সাহায্য করতেএ পারবেন?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

এমন ব্যক্তি ফাসেক অর্থাৎ পাপাচারি। কালিমার সাথে মৃত্যু হলে পরকালে মুক্তি মিলবে এ কথা সঠিক। কারণ হাদীসে এসেছে- যার শেষ কথা কালিমা হবে সে জান্নাতী। সুনানে আবি দাউদ; হা. নং ৩১১৬, মুসনাদে আহমাদ; হা. নং ৬৫৮৬। তবে আরেকটি কথা মনে রাখতে হবে যে, এমন সৌভাগ্য তারই হতে পারে যে মহান আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে না  এবং সর্বদা ঈমান-আমলের সাথে থাকে। তাছাড়া দুনিয়ার নিয়মও হলো ফ্রি পণ্য সেই পায় যে, মূল পণ্য ক্রয় করে। তাছাড়া অন্য হাদীসে এসেছে- প্রকৃত বুদ্ধিমান ঐ ব্যক্তি যে নিজের প্রবৃত্তিকে দমন করে এবং পরকালের জন্য আমল করে। আর নির্বোধ-বোকা ঐ ব্যক্তি যে নিজের খেয়াল-খুশি মত জীবন যাপন করে এবং পরকালে মুক্তির আশা করে। জামে তিরমিযী; হা. নং ২৪৫৯, সুনানে ইবনে মাযা; হা. নং ৪২৬০।

তাই আপনার বন্ধুর কালিমার সহিত মৃত্যু কামনা করাটা রাইট। কিন্তু তার জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এমন অলিক আশা করা হাদীসের ভাষায় বোকামি। তবে এতটুক সত্য যে, আপনার বন্ধু সজ্ঞানে কোন স্পষ্ট কুফরী বা শিরকে লিপ্ত না হলে সে জান্নাতী হবে। তবে পাপের কারণে তাকে পরকালে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আশাকরি বোঝেছেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। আল্লাহতায়ালার সঙ্গে বান্দার যোগাযোগের অন্যতম এক মাধ্যম। নামাজ এমন একটা ইবাদত যা মুমিনের ইমানের প্রথম পরিচায়ক, যার মাধ্যমে বান্দা তার রবের সবচেয়ে নিকটবর্তী হতে পারে। হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম এই ইবাদতের হিসাব গ্রহণ করা হবে এবং নামাজ পরিত্যাগকারী কাফের হিসেবে পরিগণিত হবে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলকে (সা.) বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে সর্বপ্রথম তার নামাজের হিসাব নেয়া হবে। তার নামাজ যদি যথাযথ প্রমাণিত হয় তবে সে সাফল্য লাভ করবে। আর যদি নামাজের হিসাব খারাপ হয় তবে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ -সুনানে তিরমিজি। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজকে ইমানের মূল পরিচায়ক হিসেবে ঘোষণা করেছেন এভাবে, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে যে নামাজ ছেড়ে দেয় সে কাফের।’ অর্থাৎ নামাজ ত্যাগকারীর মুসলমান থাকার কোনো অবকাশই নেই। সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বোঝা যায়, নামাজ একটি মহা মূল্যবান ইবাদতের নাম। মহান আল্লাহ সুনির্দিষ্ট সময়ে সুনির্ধারিত নিয়মে সমাজকে বান্দার ওপর ফরজ করেছেন। আমরা জানি ইবাদত অর্থ আনুগত্য, মেনে নেয়া, অধীনতা স্বীকার করা। দৈনন্দিন জীবনের প্রত্যেকটি পদক্ষেপে আল্লাহতায়ালার বিধানের আনুগত্য করাই হলো ইবাদতের মূল অর্থ। বান্দা তার আইন মেনে নিবে, তার দাসত্বে নিজেকে আবদ্ধ রাখবে, তার অধীনতা স্বীকার করে জীবন-যাপন করবে এটাই আল্লাহ চান। এটাই সৃষ্টির উদ্দেশ্য। তাই জীবনের এ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করতে বান্দার কঠোর পরিশ্রম দরকার। দরকার নিরবচ্ছিন্ন সাধনা, নিয়মিত অধ্যবসায়, নিয়মনিষ্ঠ দৈনন্দিন জীবন। দরকার একটি অনুগত অন্তর, বিনম্র হৃদয়। সূক্ষ্ম দায়িত্ববোধ, পবিত্র নৈতিকতা, বিশুদ্ধ ইমান এবং মজবুত প্রচেষ্টা। বিস্ময়করভাবে লক্ষণীয় যে, একমাত্র নামাজই উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো মানুষের মধ্যে তৈরি করতে পারে। দৈনন্দিন কর্মমুখর জীবনে শত ব্যস্ততার মাঝে দৈনিক পাঁচবার ধ্বনিত হওয়া আজান বান্দাকে মনে করিয়ে দেয়, ‘আমি আমার রবের দাস’ যত কাজই থাকুক না কেন, আমার রবের ডাকে সাড়া দিতে হবে। আর নামাজের মধ্যে প্রত্যেকটি আরকান-আহকাম যেমন আল্লাহ ও তার রাসুলের (সা.) এর নির্ধারিত নিয়ম মেনে সম্পাদন করতে হয়, তেমনি জীবনের বাকি ক্ষেত্রেও আল্লাহর হুকুমের বাইরে যাওয়া যাবে না। আর এভাবে নামাজ একজন মুমিনকে কর্মমুখর জীবন-বিধান, দীন ইসলাম পরিপালনের জন্য কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্ববান করে গড়ে তোলে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ