ওজু করার সঠিক নিয়ম বলুন প্লিজ 
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

ওযু করার সঠিক নিয়ম হলোঃ

  • নিয়তঃ আমি পবিত্রতা অর্জন করা বা ইবাদত করা অথবা, আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার জন্য অজু করছি।
  • প্রথমে উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত ধোয়াঃ ডান হাতে পানি নিয়ে ডান হাতের কব্জি তিনবার ধৌত করা। এরপর ডান হাতে পানি নিয়ে বাম হাতের কব্জির উপর পানি ফেলে তিন বার ধৌত করা।

লক্ষ্যণীয়ঃ হাতে নাপাকী থাকলে যে কোন উপায়ে প্রথমে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

  • মিসওয়াক করাঃ কুলি করার পূর্বে মিসওয়াক করা সুন্নত। মিসওয়াক অজু শুরু করার পূর্বেও করা যায়। মিসওয়াক না থাকলে কিংবা মুখে ওজর থাকলে বা দাঁত না থাকলে আঙ্গুল দিয়ে হলেও ঘষে নিতে হবে।
  • কুলি করাঃ ডান হাতে পানি নিয়ে কুলি করবে। রোজাদার না হলে গড়গড়া করা সুন্নত। তিনবার কুলিকরা সুন্নত। তিনবারের জন্য আলাদা আলাদা তিনবার পানি নিতে হবে।
  • নাকে পানি দেওয়াঃ ডান হাতে নাকে পানি দিবে এবং বাম হাত দ্বারা নাক ঝাড়া। বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলের অগ্রভাগ দিয়ে নাক পরিস্কার করবে। তাছাড়া কনিষ্ঠ ও বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়েও নাক পরিস্কার করা যায়। তিনবার নাকে পানি দেওয়া সুন্নত। রোজাদার না হলে নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো উত্তম। নাকে অলংকার এবং হাতে আংটি থাকলে তা নারা—চাড়া করে নিচে পানি পৌঁছে দেওয়া ওয়াজিব।
  • মুখমন্ডল ধোয়াঃ উভয় হাতে পানি নিয়ে সমস্ত মুখমন্ডল ধৌত করা। অর্থাৎ, কপালের চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ এবং উভয় কানের লতি পর্যন্ত এমনভাবে পানি পৌঁছানো, যাতে উক্ত অঙ্গ থেকে পানি ফোঁটা ফোঁটা নিচে গড়িয়ে পড়ে। একবার ধোয়া, তিনবার ফরয, তিন বার ধোয়া সুন্নাত।
  • দাড়ি ও গোঁফ : দাড়ি ও গোঁফ খুব ঘন হলে শুধু ধোয়া ফরয। চামড়ায় পানি পৌঁছানো ফরয নয়। দাড়ির ভেতরে আঙ্গুল চালিয়ে খিলাল করা।
  • উভয় হাত কনুই উভয় হাত কনুই সহ ধৌত করা। একবার ধোয়া ফরয, তিনবার ধোয়া সুন্নাত। হাত ধোয়ার সময় আঙ্গুল খিলাল করবে, যাতে আঙ্গুলের গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়। অর্থাৎ এক হাতের আঙ্গুল অপর হাতের আঙ্গুল সমূহের মধ্যে প্রবেশ করানো। বিঃদ্রঃ কারো আঙ্গুলের মধ্যে যদি ফাঁক না থাকে এবং আঙ্গুলের সাথে অপর আঙ্গুল এমনভাবে লেগে থাকে যার কারণে আঙ্গুলের সাথে পানি না পৌঁছার আশঙ্কা থেকে যায়, এ অবস্থায় খিলাল করা ওয়াজিব।
  • মাথা মাসেহ করাঃ মাথার চার ভাগের একভাগ মাসেহ করা ফরয, সমস্ত মাথা মাসেহ করা সুন্নাত।

মাথা মাসেহের নিয়মঃ বৃদ্ধ ও তর্জনী আঙ্গুলদ্বয় ব্যতীত অবশিষ্ট উভয় হাতের আঙ্গুলের পেট মাথার মধ্যে ভাগে সামনে হতে পিছন দিকে টেনে নিয়ে আসতে হবে। অতঃপর দুই হাতের তালু মাথার দুই পাশে রেখে পেছন দিক থেকে সামনে টেনে নিয়ে আসতে হবে।

  • কান মাসেহ করাঃ উভয় হাতের বৃদ্ধ আঙ্গুলের পেট দ্বারা দুই কানের পেছনের অংশ মাসেহ করা। এরপর কনিষ্ট আঙ্গুলের অগ্রভাগ দ্বারা কানের ছিদ্র এবং তর্জনী আঙ্গুলের সাহায্য কানের পাতার ভেতরে অংশ মাসেহ করা সুন্নাত।
  • গোড়ালী ও টাখনুসহ পা ধোয়াঃ ডান হাত দিয়ে পায়ের অগ্রভাগে পানি ঢালা সুন্নাত। বাম হাত দিয়ে পায়ের সামনে পেছনে এবং তলদেশ মর্দন করা। পা দিয়ে ঘষে এবং বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে পায়ের আঙ্গুলসমূহ খিলাল করে নেয়া। অজুর শেষে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া মুস্তাহাব। ওজু শেষ হবার পর নিচের দু’আ পড়তে হবে-আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু-লা-শারীকা লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আ’বদুহু-ওয়া রাসূলুহু।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও; এবং যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। (মায়েদাঃ ৬ সংক্ষিপ্ত) আয়াতে ওযূর ছয়টি ফরয উল্লেখ করা হয়েছেঃ ১. সমস্ত মুখমণ্ডল ধৌত করা। ২. উভয় হাত কুনই পর্যন্ত ধৌত করা। ৩. সম্পূর্ণ মাথা মাসেহ করা। ৪. উভয় পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধৌত করা। এছাড়াও দুটি ফরয রয়েছেঃ ৫. ধারাবাহিকতা রক্ষা করা এবং ৬. একটি অঙ্গ ধৌত করার পর দ্বিতীয় অঙ্গ ধৌত করতে দেরি না করা এবং এক অঙ্গ শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বে অন্য অঙ্গ ধৌত করা। এসব হল ওযূর ফরয। অসংখ্য সহীহ হাদীসে ওযূর পদ্ধতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওযূ কেমন ছিল অথবা তিনি যেভাবে ওযূ করতেন। আবু হাইআ (রাহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ)-কে ওযূ করতে দেখেছি। তিনি উভয় হাতের কজি পর্যন্ত ধুলেন এবং ভাল ভাবে পরিষ্কার করলেন। তিনবার কুলি করলেন, তিনবার নাকে পানি দিলেন, তিনবার মুখমণ্ডল ধুলেন, তিনবার করে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধুলেন, একবার মাথা মাসেহ করলেন এবং উভয় পা গোছা পর্যন্ত ধুলেন। এরপর তিনি দাড়ালেন এবং ওযূর অবশিষ্ট পানি তুলে নিয়ে তা দাড়ানো অবস্থায় পান করলেন। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওযু কিরূপ ছিল তা তোমাদের দেখানোর জন্যই আমি এরূপ করা পছন্দ করলাম। (সূনান আত তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৮ হাদিসের মানঃ সহিহ) জনাব! এটাই ওযূ করার সঠিক নিয়ম।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ