গোল্ডেন ব্লাড তথা Rhnull

পৃথিবীর সবচেয়ে বিরলতম রক্তের গ্রুপ Rhnull ব্লাড। এই রক্তের গ্রুপধারী ব্যাক্তির শরীরে Rh সিস্টেমের কোন এন্টিজেন থাকে না। এধরণের মানুষদের পৃথিবীর আলো দেখারই কথা না। এন্টিজেন ছাড়া জীবিত থাকা সত্যিই অসম্ভব। যেসব মানুষদের মায়ের গর্ভে মারা যাওয়ার কথা তারা পৃথিবীর বুকে বিচরণ করছে। এটাই সবচেয়ে আশ্চর্যজনক।

১৯৩৯ সালে প্রথম Rhnull ব্লাডের কথা গবেষকদের মাথায় আসে। তবে এটা শুধুই তত্ত্ব ছিলো। যদি কারো শরীরে Rh সিস্টেমের কোন এন্টিজেন না থাকে তবে তার ব্লাডগ্রুপ হবে Rhnull। কিন্তু বাস্তবে যে এটা সম্ভব তা কেউ ভাবেনি। মূলত এধরণের মানুষের শরীরে Rh এন্টজেন বহনকারী জিন অনুপস্থিত থাকে। অনেক সময় স্বাভাবিক ভাবে জন্মগ্রহণকারী মানুষের শরীরে জিন জনিত পরিবর্তন এর কারণেও হয়। এই পরিবর্তন হতে পারে দুটি উপায়ে।

Amorph: এক্ষেত্রে RSD জিন শরীর থেকে মুছে যায়। সেই স্থলে RHCE জিনের আগমন ঘটে যা এন্টজেন বিরোধী।

আরেকটি হল Regular: এক্ষেত্রে RHAG জিনের বিলুপ্তি ঘটে।

প্রথম ১৯৬১ সালে এই বিরল রক্তের মানুষ জগতের সামনে আসে। কিন্তু তখন তাকে বাঁচানো সম্ভব হয় নি। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান এক মহিলা। তার মৃত্যুর পরই সব রহস্য উন্মোচিত হয়। পরে থমাস নামের এক ১০ বছরের শিশুর মধ্যে এই রক্ত পাওয়া যায়। ১৯৬১ সালের পর থেকে এই গ্রুপের রক্তের জন্য মোট ৯ জন সক্রিয় ডোনার পাওয়া যায়। প্রতি ৬ মিলিয়নে ১ জন থাকে এই Rhnull গ্রুপের রক্ত বহনকারী। অফিসিয়াল মোট ৪৩ মানুষ পৃথিবীতে এই রক্ত নিয়ে বেঁচে আছে।

Dr.Theirry Peyard, Director of The National Immunohematology (Reference Laboratory in Paris) বলেছেন, ” Rhnull সত্যিই খুবই আশ্চর্যজনক এবং অনেক মূল্যবান রক্ত। এতে কোন এন্টিজেন না থাকায় একে ইউনিভার্সাল রক্ত বলা যায়। যেকারো শরীরে প্রবেশ করানো যাবে এবং এতে কোন ক্ষতিও হবে না। এটা গোল্ডেন ব্লাড।”

কোন এন্টিজেন না থাকা সত্ত্বেও এই রক্ত মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে সম্ভব এবং অন্য সকলের দেহের জন্যেও উপযোগী। এ কারণেই একা গোল্ডেন ব্লাডের আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এজন্য বিশেষভাবে আধুনিকতম প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এই রক্তের সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে।এই হলো গোল্ডেন ব্লাড-এর সাতকাহন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ