উত্তরঃ- অবশ্যই নাজায়েজ। কেননা, রাসূল (সঃ) যেকোন বস্তুর বিকৃতি কোনকিছু পছন্দ করতেন না। তার প্রমাণ হল- ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ "আমাকে এত এত পরিমাণ সম্পদ দিলেও আমি কারো বিকৃত করে নকল করা পছন্দ করি না।" (সহীহঃ মিশকাত তাহক্বীক্ব ছানী ৪৮৫৭- জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ২৫০৩)।
মানুষকে বিকৃত নামে সম্বোধন করা বড় ধরনের অপরাধ। এ সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত আছে- "তোমরা একে অপরকে দোষারোপ করবে না এবং একে অপরকে মন্দনামে ডাকবে না। ঈমান গ্রহণের পরে মন্দ নামে ডাকা বড় অপরাধ। যারা তওবা করে না তারাই জালিম।"-(সূরা হুজুরাত, ১১) এর থেকেই বোঝা যায় যে মন্দনামে ডাকা নাজায়েজ। আল্লাহ একে তওবা না করলে ক্ষমা করবেন না।
কোন ব্যক্তিকে নিয়ে উপহাস করা, ঠাট্টা করা, মন্দ নামে ডাকা, সম্মানের হানি করা এবং তুচ্ছ ও হেয় প্রতিপন্ন করার সকল পন্থা ইসলামে হারাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করেন, তখন সেখানকার অধিকাংশ লোকের দুই তিনটি করে নাম ছিল। তন্মধ্যে কোনো কোনো নাম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে লজ্জা দেয়া ও লাঞ্ছিত করার জন্য লোকেরা খ্যাত করেছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা জানতেন না। তাই মাঝে মাঝে সেই মন্দ নাম ধরে তিনিও সম্বোধন করতেন। তখন সাহাবায়ে কেরাম বলতেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ সে এই নাম শুনলে অসন্তুষ্ট হয়। তখন আয়াতটি নাযিল হয় যে, তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। মানুষকে ব্যঙ্গ ও তুচ্ছজ্ঞান করে মানুষের এমন নাম রেখো না বা এমন খেতাব বের করো না, যা সে পছন্দ করে না। অথবা তার ভাল ও সুন্দর নামকে বিকৃত করে ডেকো না। অর্থাৎ, এইভাবে নাম বিকৃত করে অথবা মন্দ নাম বা খেতাব রেখে সেই নামে ডাকা, কিংবা ইসলাম গ্রহণ বা তওবা করার পর তাকে অতীত ধর্ম বা পাপের সাথে সম্পৃক্ত করে সম্বোধন করা, যেমন, এ কাফের! এ ইয়াহুদী! এ লম্পট! এ মাতাল! ইত্যাদি বলে সম্বোধন করা অতীব মন্দ ও গর্হিত কাজ। অবশ্য কোন কোন গুণগত নাম কারো কারো নিকট এ নিষেধের আওতাভুক্ত নয়, যা লোক মাঝে প্রসিদ্ধ হয়ে যায় এবং সে এ নামে স্বীয় অন্তরে কোন দুঃখ বা রাগও অনুভব করে না। এমন নামে ডাকা দোষের কিছু নয়।