মানুষের ঈমান বৃদ্ধির জন্য আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। এটা এমন একটা কিতাব যাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। যা মুত্তাকীগনের জন্য হেদায়াত স্বরূপ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, মুত্তাকী তারাই যারা ঈমান এনেছে গায়েব বা অসৃশ্ব্য বস্তসমূহের উপর। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১-৪)। পবিত্র কোরআন সম্পূর্নটিই ঈমান, নেক আমল , জান্নাত , জাহান্নাম, আসমান , জমীন , গাছপালা , জীব জন্তু , মানুষের জীবন বিধান, হারাম , হালাল, করনীয় , বর্জনীয়, নবী রাসুল গনের বিভিন্ন ঈমানী ঘটনাবলী, ইত্যাদি মনোরম ও মনোমুগ্ধকর আলোচনায় ভরপুর। যাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। এবং ইহা ঈমানদার বান্দাগনের জন্য হেদায়াত চাবীকাঠি। আসুন দেখা যাক মানুষের হেদায়াতের জন্য আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআন কিভাবে সাজিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে সর্বমোট কমবেশী ৬৬৬৬ আয়াত রয়েছে। তম্মধ্যে ৬০০০ আয়াত ঈমান ও রাসূলগনের ঘটনা বলী সম্পর্কীত এবং বাকী মাত্র কমবেশী ৬৬৬ আয়াত আহকাম বা আদেশ নিষধ সম্পর্কীত। তাহলে বুঝা গেল আল্লাহ পাক সর্বপ্রখম মানুষের ঈমান বৃদ্ধির জন্য বেশী অায়াত নাজিল করেছেন। তাহলে বুঝা গেল ঈমান বৃদ্ধির জন্য আমাদেরকেও বেশী পরিমানে ঈমানের আলোচনা করতে হবে। ১১৪ টি সুরা রয়েছে। তম্মধ্যে মক্কী ও মাদানী সুরা সমূহ রয়েছে। মক্কী সুরা সমূহে ছোট ও ঈমান সম্পর্কীত এবং মাদানী সুরা সমূহ বড় এবং আহকাম বা আদেশ নিষেধ সম্পর্কীত। তম্মধ্যে ছোট ছোট সুরা সমুহ মক্কী সুরা যা ঈমান, পরকাল,আল্লাহ ও রাসুলের পরিচিতি সম্বলিত। যাহা মানুষের ঈমান বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। আল্লাহ পাককে চিনতে সহজ। জান্নাত ও জাহান্নামের পরিচিতি। ইহার মূল কারন হলো। মানুষ জন্মের পর প্রথমেই তাকে ঈমানদার হতে হবে। ঈমান দার হলে তার পক্ষে আল্লাহ পাকের আদেশ নিষেধ, পালন করা সহজ হবে। ঈমান দার না হলে তার পক্ষে নেক আমল করা সহজ নয়। মুসলমান নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, ইত্যাদি আমল করে তা মুসলমানগন নিজেরাও জানে এমন কি বর্তমান বিশ্বে মোনাফেক, কাফের মোশরেকরাও জানে। কিন্ত প্রকৃত ঈমানদার বান্দা ব্যতিত অন্য কেহ আল্লাহ পাকের হুকুম মানতে পারছে না। ইহার মূলে রয়েছে ঈমানদার হওয়া। আর আল্লাহ পাক ঈমানদারগনকে সম্বোধন করে অনেক আয়াতও নাজিল করেছেন। হে ঈমানদারগন তোমরা বেশী বেশী ঈমানের আলোচনা কর তবে তোমাদের ঈমান বৃদ্ধি পাবে এবং কাফের মোশরেকরাও ইসলামে দাখেল হবে। এখানে আর একটি বিষয়ের গুরুত্ব রয়েছে যে, কালেমা পাঠ করলে সে সবে মাত্র ইসলামে দাখেল হলো। পরিপূর্ন ঈমানদার হয়নি। ঈমানের মেহনত করে পূর্ন ঈমানদার হতে হবে। মুসলিম সন্তানগনের ক্ষেত্রেও একই শর্ত। মুসলমানের ঘরে জন্ম নিলেই সে পূর্ন মুসলমান হতে পারবে না যতক্ষন না সে ঈমানের মেহনত করে নিজের ঈমান বৃদ্ধি করবে। যেমন: ডা্ক্তারের সন্তান ডাক্তার হতে পারেনা নিজে ডাক্তারী না পড়া পর্যন্ত, কোরআনে হাফেজের সন্তান জন্মসূত্রে হাফেজ হতে পারবে না নিজে মেহনত করে হেফজ না শিখা পর্যন্ত তেমনি ঈমান আনা সত্বেও প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবেনা ঈমানের জন্য মেহনত না করে। আর ঈমান বৃদ্ধি পাবে দাওয়াতের মাধ্যমে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক ক্কুল অর্থ বলুন শব্দটি ব্যবহার করেছেন কমবেশী ৩১৩ বারেরও অধিক।কারন দাওয়াত দিতে হলে অন্যকে বলতে হবে। একাধিক ব্যক্তির প্রয়োজন দাওয়াত দিতে হলে। ইহা ছাড়া পবিত্র কোরআনে আসমান জমীন এবং সমস্ত সৃষ্টিকুলের সৃষ্টি সহ মানব জাতীর সৃষ্টি নিয়ে এবং হযরত আদম আ: থেকে শুরু করে নবী রাসুল গনের জীবনী, এবং প্রত্যেক জামানার উম্মতের হালত (ঈমানদার ও বেঈমানী হালত ) সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে। অনেক অলৌকিক ঘটনাবলী (ঈমান সম্পর্কীত) আলোচনা করা হয়েছে মানুষের ঈমানকে বৃদ্ধির জন্যই।