আসসালামু আলাইকুম । ব্মিলতে গেলে  দিন দিন কুফরির ওয়াসওয়াসার দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছি , মাথায় চিন্তা আনতে চাই না তাও আসে , এখন আমার এমন অবস্থা হয়েছে যে নিজেকে পুরাই অমুসলিম মনে হচ্ছে । আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করি , আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করি তাও এমন হয় কেন ??? প্রশ্নঃ আমি কিভাবে আমার ঈমান বাড়াতে পারব ?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Habib96

Call

ঈমান বৃ্দ্ধি ও সুদৃঢ় রাখার কিছু উপায়ঃ [১] অর্থ বুঝে কুর’আন তেলাওয়াত করুন। তেলাওয়াত করার সময় প্রতিটি আয়াতের মর্মার্থ উপলব্ধি করে সেগুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করুন। দেখবেন হৃদয়ে আপনি এক অকৃত্রিম প্রশান্তি বোধ করবেন। হৃদয়ের কোমলতা বাড়বে। কুর’আন তেলাওয়াতের সময় মনে মনে কল্পনা করুন আপনি বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের সাথে কথা বলছেন। মনের ভিতর এমন ধরনের অনুভুতি সৃষ্টি করতে পারলে কুর’আন তেলাওয়াতের সর্বোত্তম সুফল অর্জন করা সম্ভব হবে। কুর’আন আল-কারীমে আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন বিভিন্ন ধরনের মানুষের কথা বলেছেন। নিজেকে মিলিয়ে দেখুন আপনি কোন শ্রেনীর মানুষ।  [২] আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের মহত্ত্বকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। বিশ্বচরাচরে যা কিছু আছে সবকিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন। আমরা চোখ খুলে যা কিছু দেখি সমস্ত কিছুর মাঝেই রয়েছে তাঁর নিদর্শন যা প্রতিনিয়ত তাঁরই মহীমা ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে চলেছে; তাঁর হুকুম ছাড়া কোন কিছুই ঘটে না; তিনি সর্বদ্রষ্টা; কোন কিছুই তাঁর দৃষ্টি সীমার বাইরে নয়। গহীন অন্ধকার রাতে কালো পাথরের উপর কালো পিঁপড়াটিও নয়।  [৩] জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করুন। অন্তত প্রত্যাহিক জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গলো সম্পর্কে আপনার জ্ঞান থাকা লাগবে। যেমনঃ সঠিক আকীদাহ, তাওহীদ, শিরকসম্পর্কে।  সঠিক পদ্ধতিতে উত্তমরূপে নামায পড়া ও ওজু করতে জানা। আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের গুণবাচক নামগুলোর অর্থসহ সেগুলোর তাৎপর্য জানুন। কারণ আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনকে তারাই বেশী ভয় করতে পারে যারা জ্ঞানী, যারা তাঁর সম্পর্কে জানে।  [৪] দ্বীনের আলোচনা হয় এমন বৈঠকে যোগদিন। কারণ আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন সম্পর্কে আলোচনা হয় এমন অনুষ্ঠানে ফেরেশতারাও সমবেত হয়ে থাকেন।  [৫] বেশী বেশী সৎকর্ম করুন। একটি সৎকর্ম অন্যান্য সৎকর্মসমূহের দুয়ার খুলে দেয়। বেশী বেশী দান সাদাকাহ্‌ করুন। এমনটি করলে আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীন আপনার জীবনের চলার পথকে সহজ করে দেবেন। ফলে আপনি আরো বেশী সৎকর্ম সম্পাদনের জন্য উৎসাহ বোধ করবেন। সৎকর্ম সম্পাদন আপনার জন্য সহজ হয়ে উঠবে। সৎকর্ম সম্পাদনের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে অনেক ভাল কাজ করার চেয়ে অল্প অল্প করে প্রতিদিন কিছু না কিছু ভাল কাজ করা আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের কাছে বেশী পছন্দনীয়।  [৬] আপনার জীবনের চূড়ান্ত পরিণতি তথা মৃত্যু হতে পারে অত্যন্ত মর্মান্তিক। কাজেই প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুকে ভয় করে পৃথিবীতে বেঁচে থাকুন। পার্থিব খেল-তামাশা থেকে বেঁচে থাকার জন্য বেশী বেশী মৃত্যুকে স্মরণ করুন।  [৭] আমাদের পরকালীন জীবনে বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। পরকালীন জীবনের শুরু হয় মৃত্যু দিয়ে। এরপর কবরের জীবন, হাশরের ময়দানে বিচার, বিচার শেষে হয় জান্নাত না হয় জাহান্নাম। এছাড়াও রয়েছে পুলসিরাত। বিষয়গুলো নিয়ে ভাবুন। এমন পরকালীন ভাবনা আপনার ইহকালীন জীবনকে পরিশুদ্ধতা দান করবে। ফলে আপনার ঈমান সুদৃঢ় হবে।  [৮] প্রতিনিয়তই আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের সাহায্য প্রার্থনা করুন। বোঝার চেষ্টা করুন আমাদের অস্তিত্বের জন্য, আমাদের স্বার্থেই আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনকে আমাদের প্রয়োজন। ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করা থেকে বিরত থাকুন। বিনয়ী জীবন যাপন করুন। জড়বাদী এই পৃথিবীর মোহে অন্ধ হয়ে যাওয়া থেকে বেঁচে থাকুন।  [৯] আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের দেয়া জীবন বিধান পালনের মাধ্যমে প্রমান করুন আপনি আপনার স্রষ্টাকে ভালবাসেন। তাঁর কাছে প্রার্থনার ক্ষেত্রে সর্বদায় আশাবাদী হউন। আশা করুন, আপনি যা চান তিনি তাই কবুল করবেন। তবে যে কোন সময় অপরাধ বা ভুল হয়ে যেতে পারে এই ভয়ে সদা সতর্ক ও ভীত থাকতে হবে। আত্ম-সমালোচনা করুন। সারাদিন কি করলেন তা পর্যালোচনা করে রাতে ঘুমানোর আগে কিছু সময় ব্যয় করুন।  [১০] উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন, আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের বিধান অমান্য করে আমারা যে পাপ  করি তার পরিণতি কি। আমাদের মন্দকর্মগুলো ঈমানকে দুর্বল করে দেয়। পক্ষান্তরে, সৎকর্মসমূহ আমাদের ঈমানকে সুদৃঢ় করে তোলে। এই বিশ্ব চরাচরে কোন কিছুই আল্লাহ্‌ রাব্বুল ‘আলামীনের ইচ্ছা ছাড়া সংঘটিত হয়না। আর আমাদের উপর যে বিপদ-আপদ আসে তা আমাদের নিজের হাতের কামাই ছাড়া কিছুই নয়। আমরা তাঁর অবাধ্য হয়ে নানান পাপে লিপ্ত হই যে পাপ আমাদের সকল দুর্দশার কারণ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

প্রথমে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি, কিয়ামতের বিষয়ে এবং পুরোপুরি তাকদীরে প্রতি বিশ্বাষ আনতে হবে। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণীঃ তোমাদের দুআই তোমাদের ঈমান। আর ইয়াকীন হল পূর্ণ ঈমান। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ যারা সৎপথে চলে আল্লাহ তাদের অধিক হিদায়াত দান করেন। (সূরাহ মারইয়ামঃ ৭৬) এবং যারা সৎপথ অবলম্বন করে আল্লাহ তাদের হিদায়াত বাড়িয়ে দেন এবং তাদের সৎপথে চলার শক্তি বাড়িয়ে দেন। (সূরাহ মুহাম্মাদঃ ১৭) এজন্য আল্লাহর হুকুম রাসুলের সুন্নাত যথার্থভাবে পালন করতে হবে। এছাড়া অন্তরের বিশ্বাষ এবং তার স্থিরতা ও প্রশান্তির দিক থেকে ঈমান বৃদ্ধি পায়। এবং জিকিরের কারণেও ঈমান বৃদ্ধি পায়। তাই আল্লাহর নিকট দোয়া করুন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ