আপনি যদি খাঁটি দিলে তাওবা করে থাকেন তাহলে কোন ভয় নেই। মহান আল্লাহ তাআলা আপনার পাপ মার্জনা করবেনই। কারণ হাদীস শরীফে এসেছে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, (খাঁটি দিলে) গুনাহ থেকে তাওবাকারী কেমন যেন তার কোন গুনাহই নেই। -সুনানে ইবনে মাযা: হা. ৪২৫০। এবং হাদীসটি সহীহ।
عن أبي عبيدة بن عبد الله عن أبيه قال قال رسثول الله صلى الله عليه و سلم: التائب من الذنب كمن لا ذنب له. (سنن ابن ماجه)
সাথে সাথে যে কোন উপায়ে আপনি সেই কাজের মেয়ে থেকেও ক্ষমা চেয়ে নিবেন। কারণ কোন মুসলমানকে কষ্ট দেওয়া হারাম। হাদীসে এসেছে- প্রকৃত মুসলমান ঐ ব্যক্তি যার হাত ও মুখ থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। - সহীহ বুখারী: হা. ৯; সহীহ মুসলিম: হা. ৪১
عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال المسلم من سلم المسلمون من لسانه ويده (متفق عليه)
"আবূ যর গিফারী (রাঃ) হতে বর্ণিত–তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সঃ) বলেছেনঃ একজন আগন্তুক [জিব্রীল (আঃ)] আমার প্রতিপালকের নিকট হতে এসে আমাকে খবর দিলেন বা আমাকে সুসংবাদ দিলেন, আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে? তিনি বললেনঃ যদিও সে যিনা করে থাকে এবং যদিও সে চুরি করে থাকে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১২৩৭)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর 'তোমরা' ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। (বনী ইসরাঈলঃ ৩২) ইসলামে দৃষ্টিতে যিনা সুস্পষ্ট হারাম এবং বৃহত্তম অপরাধ। যারা ব্যভিচার করে তারা অবশ্য-ই শাস্তির সম্মুখীন হবে। কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে। কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তন করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। জনাব! যেহেতু আপনি পাপ কাজ করে কান্নাকাটি করে নিজের ভূল বুঝতে পেরেছেন এক্ষেত্রে ক্ষমা পাওয়ার একটি পথ-ই রয়েছে তা হলো খাঁটি তওবা। আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইলে ক্ষমা পাবেন। তবে তার কিছু শর্ত রয়েছে। তওবা শুদ্ধ হবার শর্তাবলী তিনটি। (১) ঐ পাপ থেকে বিরত থাকতে হবে। (২) কৃত অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হবে। (৩) ঐ পাপ পুনরায় না করার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হবে। দোআঃ أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِيْ لآ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাই। আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক এবং আমি তাঁর দিকেই ফিরে যাচ্ছি।
লক্ষ্য করুন নিচের আয়াত গুলো আপনার বিষয়ে কিছু বলে কিনা। আপনি নিজেই বের করতে পারবেন আপনার অবস্থান কি।
আল ফুরকান ৬৮
وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ ۚ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَٰلِكَ يَلْقَ أَثَامًا
এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
আল ফুরকান ৬৯
يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।
আল ফুরকান ৭০
إِلَّا مَنْ تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَٰئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا
কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
আয্-যুমার ৫৩
۞ قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।