সমস্ত গায়েবের চাবিকাঠি তাঁর কাছে, তিনি
ছাড়া আর কেউ তা জানে না, জলে-স্থলে যা আছে তা তিনি জানেন, এমন একটা পাতাও পড়ে না যা তিনি জানেন না। যমীনের গহীন অন্ধকারে কোন শস্য দানা নেই, নেই কোন ভেজা ও শুকনো জিনিস যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই। (সূরা আনয়ামঃ ৫৯)
আকাশ ও পৃথিবীর মাঝে যারা আছে, তাদের কেউই গায়েব সম্পর্কে জানে না। শুধু জানেন আল্লাহ। (সূরা নামলঃ ৬৫)
আল্লাহ বলেন, আল্লাহ ছাড়া আর
কেউই জানে না আগামীকাল সে কী
অর্জন করবে। (সূরা লুকমানঃ ৩৪)
আপনার প্রশ্ন আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না তাহলে আপনি কী করে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতেছেন?
স্বপ্নের ব্যাখ্যা খুবই কঠিন এবং জ্ঞানতাত্ত্বিক একটি বিষয়। যে কেউ ইচ্ছা করলেই এই কাজটি করতে পারেন না। তবে আল্লাহ তাআলা যাকে স্বপ্নের তাবীর ''ব্যাখ্যা'' করার বিশেষ জ্ঞান ও ক্ষমতা প্রদান করেন একমাত্র সেই পারে স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে। যেমন করেছিলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এবং ইউসুফ (আঃ) এবং সাহাবীগণ।
তাইতো রাসুল
(সাঃ) বলেছেন, যদি কেউ অপছন্দনীয় তথা
ভয় বা খারাপ কোনো স্বপ্ন দেখে তাহলে
সে যেন তাড়াতাড়ি অজু করে নামাজে
দাঁড়িয়ে যায় এবং দর্শিত স্বপ্নের
ব্যাপারে অনভিজ্ঞ কাউকে কিছু না বলে।
তিনি আরো বলেন তোমাদের
কেউ স্বপ্ন দেখলে আলেম কিংবা
কল্যাণকামী ব্যতীত কারো কাছে তা
বর্ণনা করবে না।
সুরা ইউসুফ আয়াত ৩৬ এর ঘটনাঃ ইউসুফ (আঃ) আল্লাহর পয়গম্বর ছিলেন। দাওয়াত ও তবলীগের সাথে সাথে ইবাদত ও আচরণ, পরহেযগারী ও সচ্চরিত্রতার দিক থেকে জেলখানার অন্যান্য বন্দীদের থেকে স্বতন্ত্র ছিলেন। এ ছাড়া আল্লাহ তাআলা তাঁকে স্বপ্নের তাবীর ব্যাখ্যা করার বিশেষ জ্ঞান ও ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন। উক্ত বন্দীদ্বয় যখন স্বপ্ন দেখল, তখন তারা ইউসুফ (আঃ)-এর নিকট এল এবং বলল, আমরা আপনাকে সৎকর্মপরায়ণ দেখছি। আপনি আমাদেরকে আমাদের স্বপ্নের তাৎপর্য বলে দিন।
আরেকটি ঘটনাঃ এক ব্যক্তি ওমর
রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর কাছে এসে বলল,
আমি স্বপ্নে দেখেছি, জমিন তরু-তাজা
সবুজ হয়েছে। এরপর আবার শুকিয়ে গেছে।
আবার সবুজ-তরুতাজা হয়েছে, আবার
শুকিয়ে গেছে। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু
বললেন, এর ব্যাখা হল তুমি প্রথমে মুমিন
থাকবে পরে কাফের হয়ে যাবে। আমার
মুমিন হবে, এরপর আবার কাফের হয়ে যাবে
আর কাফের অবস্থায় তুমি মৃত্যু বরণ করবে। এ
কথা শুনে লোকটি বলল, আসলে আমি এ রকম
কোনো স্বপ্ন দেখিনি। ওমর বাদিয়াল্লাহু
আনহু বললেন, যে বিষয়ে তুমি প্রশ্ন
করেছিলে তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।
তোমার বিষয়ে ফয়সালা হয়ে গেছে যেমন
ফয়সালা হয়েছিল, ইউসূফ আলাইহিস
সালামের সাথীর ব্যাপারে।
যারা স্বপ্ন ব্যাখ্যা করার বিশেষ জ্ঞান লাভ করেছিলেন তারা অনেক স্বপ্ন ব্যাখ্যা করে গেছেন এমনকি কিছু পুস্তক রুপে রচিত হয়েছে। তার-ই সুবাদেই আমাদের মত মানুষ স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পারেন।
(দেখুন সুরা ইউসুফ এবং বুখারী এর স্বপ্নের ব্যাখ্যা অধ্যায়)