নফল মুসলমানদের এমন নামায বোঝায় যা আদায় করলে সওয়াব রয়েছে কিন্তু আদায় না করলে কোনো গুনাহ নেই। তবে ফরয সালাত যেমন মুমিন জীবনের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত, তেমনি নফল সালাতও সর্বশ্রেষ্ঠ নফল ইবাদত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায়। ফরযের অতিরিক্ত কর্মকে ‘‘নফল’’ বলা হয়। কিছু সময়ে কিছু পরিমাণ ‘‘নফল’’ সালাত পালন করতে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উৎসাহ দিয়েছেন, বা তিনি নিজে তা পালন করেছেন। যে সকল নফল সালাতের বিষয়ে তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন সেগুলোকে ‘‘সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ’’ বলা হয়। এ ধরনের কিছু সুন্নাত সালাত সম্পর্কে হাদীসে বেশি গুরুত্ব প্রদানের ফলে কোন ফকীহ তাকে ওয়াজিব বলেছেন। আর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যে সুন্নাত গুলো মাঝে মাঝে পড়তেন সেগুলোকে সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা বলে। সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদা না পড়লে গুনাহ হয় না কিন্তু সুন্নতে মুয়াক্কাদা না পড়লে গুনাহ হয়। বিভিন্ন সহীহ হাদীসে সাধারণভাবে যত বেশি পারা যায় নফল সালাত আদায়ের উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এক সাহাবী প্রশ্ন করেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কর্ম কী? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: ‘তুমি আল্লাহর জন্য বেশি বেশি সাজদা করবে 'বেশি বেশি নফল সালাত আদায় করবে' কারণ তুমি যখনই আল্লাহর জন্য একটি সাজদা কর, তখনই তার বিনিময়ে আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং তোমার একটি পাপ মোচন করেন।
নফল নামাজ না পড়লে গোনাহ হবে না। কেননা এটা ইচ্ছাধীন ইবাদাত পড়লে অনেক সাওয়াব না পড়লে গোনাহ হবে না তবে সমস্ত নফল ইবাদতের মধ্যে নফল নামাজ অন্যতম একটা ইবাদাত ।
বোখারি শরিফের হাদিসে নফল নামাজ আদায়কারীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাদের প্রার্থনা যেমন কবুল করেন এবং তাদের আশ্রয়ও দেন। 'নফল ইবাদত ব্যতীত বান্দা আল্লাহ পাকের মহব্বত লাভ করতে পারে না।' (বোখারি শরিফ)।
সহিহ হাদিস দ্বারা যেসব নফল নামাজ সাব্যস্ত সেগুলোর মধ্যে ইশরাক, চাশত, আওয়াবিন, তাহাজ্জুদ ও সালাতুত তাসবিহর নামাজ অন্যতম। তাই দৈনন্দিন অজিফার মধ্যে প্রাথমিক সালেকদের এসব নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। যাবতীয় ইবাদত-বন্দেগির মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ পাকের মহব্বত ও নৈকট্য লাভ করা। আর এ উদ্দেশ্য নফল ইবাদত ও অজিফা আদায়ের মাধ্যমে অতি সহজেই লাভ করা সম্ভব হয়।