Share with your friends
rjrahman

Call

হারপিস এক ধরনের ডিএনএ ভাইরাস যা প্রধানত লালা এবং শরীরের অন্যান্য নিঃসৃত রসের মাধ্যমে দেহে সঞ্চালিত হয়ে সংক্রমণ সৃষ্টি করে থাকে। হারপিস ভাইরাস আট ধরনের হয়ে থাকে। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস দুই ধরনের হয়ে থাকে। ১. হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ বা ওরাল হারপিস। ২. হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-২ বা জেনিটাল হারপিস। হারপিস ভাইরাস শরীরে ট্রাইজেমিনাল গ্যাংলিয়াতে সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। হারপিস ভাইরাসগুলোর মধ্যে কিছু ভাইরাস অনকোজেনিক অর্থাৎ ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে বা ক্যান্সার সৃষ্টিতে প্রণোদনা দিয়ে থাকে। হারপিস ভাইরাস টাইপ-১ মুখ ও ঠোঁটের পাশে ক্ষত সৃষ্টি করে যা জ্বরঠোসা বা কোল্ড সোর নামে পরিচিত। এর দ্বারা প্রাথমিক সংক্রমণের ফলে মাড়ি ও ঠোঁটের প্রদাহ দেখা দিতে পারে যা জিনজাইভো স্টোমাটাইটিস নামে পরিচিত। অনেক সময় শিশুদের মাড়িতে এ ভাইরাসের কারণে মনে হতে পারে, শিশুর দাঁত উঠছে। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের প্রাথমিক সংক্রমণ চলে যাওয়ার পর অনেক রোগী আর কোনো কষ্ট অনুভব করেন না। শতকরা ৩০ ভাগ রোগী পরে বারবার সংক্রমণের শিকার হন। এ রোগীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঠোঁট আক্রান্ত হতে দেখা যায় যা হারপিস ল্যাবিয়ালিস নামে পরিচিত। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের বারবার সংক্রমণের কারণে ঠোঁটে ফুসকুড়ি হতে পারে যা চিলাইটিস নামে পরিচিত। এ ফুসকুড়ি জ্বরঠোসা নামেই পরিচিত। সিফিলিসের কারণেও ঠোঁটে ঘা দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে বেশি সিফিলিসের লক্ষণ দেখা যায় প্রজনন অঙ্গের বাহিরে এবং পুরুষদের ওপরের ঠোঁটে এবং মহিলাদের নিচের ঠোঁটে। এতে ঠোঁটে ক্ষত দেখা যেতে পারে। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের প্রকোপ বেশি হলে জিহ্বার কিছু স্থানে আলসার বা ঘা দেখা দিতে পারে যার চিকিৎসা প্রদান না করলে সহজে ভালো হয় না। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ এর লক্ষণ *ছোট ব্যথাযুক্ত ব্লিস্টার যার মধ্যে রস বিদ্যমান যা ঠোঁটে এবং মুখের কোণায় থাকে। ব্লিস্টারগুলো জ্বরঠোসা নামে পরিচিত। *মুখের অভ্যন্তরে বা জিহ্বার জ্বালাপোড়া। *হালকা জ্বর। *গলায় ক্ষত। *ঘাড়ের লসিকাগ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-২ এর লক্ষণ *লাল রং-এর ব্লিস্টার যৌনাঙ্গ, উরু এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গের ভেতরেও থাকতে পারে। *ব্যথা হতে পারে। *জ্বর। *মাথাব্যথা। *প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস যেভাবে ছড়ায় *চুমুর মাধ্যমে। *একই পাত্রে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে। *দাঁড়ি কামানোর সময় রেজারের মাধ্যমে যদি আক্রান্ত রেজারটি কেউ পূর্বে ব্যবহার করে থাকেন। *হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ আক্রান্ত ব্যক্তির নিকট থেকে ওরাল সেক্স গ্রহণ করলে। হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-১ ও জেনিটাল হারপিস সৃষ্টি করতে পারে কিন্তু অধিকাংশ জেনিটাল হারপিস সৃষ্টি হয়ে থাকে হারপিস ভাইরাস টাইপ-২ দ্বারা। জেনিটাল হারপিস পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের বেশি দেখা যায়। ওরোজেনিটাল সেক্সের মাধ্যমেই জেনিটাল হারপিস বিস্তার লাভ করে। জেনিটাল হারপিসের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় যৌনাঙ্গ, পায়ুপথ বা মুখের পাশে এক বা একাধিক ব্লিস্টার দেখা দিতে পারে। ব্লিস্টারগুলো ফেটে ব্যথাযুক্ত ক্ষতস্থানের সৃষ্টি করে থাকে। তখন রোগীর শরীরে ব্যথা, জ্বর এবং গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। যে কারণে হারপিস ভাইরাস বিস্তার লাভ করে তা পরিহার করলে সৃষ্ট রোগগুলো থেকে সহজেই পরিত্রাণ লাভ করা যায়। বিবাহ বহির্ভূত দৈহিক মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। হারপিস ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কোনো আলসার বা ঘা ভালো না হলে বা বারবার দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; যেহেতু কিছু কিছু হারপিস ভাইরাস অনকোজেনিক ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হয়ে থাকে।

Talk Doctor Online in Bissoy App