মাসিক ঋতুস্রাবের সময় সামান্য ব্যথা

হওয়া স্বাভাবিক। এটা প্রায় সব নারীরই

হয়ে থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যথা ক্ষতিকর 

হওয়ার সম্ভাবনা। এমতাবস্থায় ডাক্তারের 

সঙ্গে যোগাযোগ করাই শ্রেয়।

.

আমাদের দেশে মহিলাদের একটা কমন ব্যাপার হল মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা। কিন্তু একটু সচেতন হলেই এই ব্যথা এড়িয়ে চলা যায়। আসুন তাহলে জেনে নিই কীভাবে মাসিকের সময় তলপেটের ব্যথা নিরাময় কার যায়।

টিপস নাম্বার ১:  মাসিকের সময় তলপেটের ব্কোযাথা নিরাময়ে একটা বোতলে গরম পানি ভরুণ এবার এই বোতলের গাঁয়ে কাপড় গরম করুন।এই গরম কাপড় তলপেটে কমপক্ষে ২০-২৫ মিনিট ছ্যাকা লাগান।এইভাবে সপ্তাঞে ৩-৪ দিন করুন। দেখবেন ধীরে ধীরে তলপেটের ব্যাথা দূর হবে।

টিপস নাম্বার ২: আরেকটা পদ্ধতি আছে-এই পদ্ধতিটাও বেশ ফলদায়ক। একটা গরম পনির পাতে মিনিট ৩ মিনিট কমর ডুবিয়ে রাখুন এবয় পরবর্তী ২ বা ১ মিনিট ঠান্ডা পানিতে কমর ডুবান। দেখবেন গরম পানি এমন হবে যাতে আপনার শরীর সহ্য পায়। এই পদ্ধতিটাও করুন সপ্তাহে ৩-৪ দিন। তবে গরম পানিতে লবন, বেকিং সোডা বা ভিনেগারও ব্যবহার করতে পারেন এত ভালো ফল পাবেন।


উপরের পদ্ধতি অনুসরণ করলে যোনি পথের অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে এবং তলপেটের ব্যাথা দূর হবে। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

মাসিক চলাকালীন সময়ে বা মাসিক শুরু হওয়ার আগে তলপেট, মেরুদন্ড ও পায়ে ব্যথা হয়ে থাকে। এই ব্যথা খুব তীব্র না হলেও কোনো কোনো মহিলার ক্ষেত্রে খুব বেশি ব্যথা হতে পারে। এমনকি ব্যথার ফলে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হতে পারে।

এন্ডোমেট্রিয়োসিস (endometriosis) বা ইউটেরাইন ফাইব্রোয়েডস (uterine fibroids) এর কারণে মাসিকের সময় ব্যথা হয়ে থাকে। তবে কোনো সুনিদির্ষ্ট কারণে এই ব্যথা না হলে সময়ের সাথে সাথে, বিশেষ করে একবার সন্তান প্রসবের পর এই ব্যথা অনেক কমে আসে। মাসিকের সময় যে ব্যথা হয়ে থাকে তা মেনোর্যালজিয়া (Menorrhalgia), মেন্সট্রুয়াল ক্রাম্পস (Menstrual cramps) এবং ডিসমেনোরিয়া (Dysmenorrhea) নামে পরিচিত।

মাসিকের সময় ব্যথা হওয়ার কী কী কারণ থাকতে পারে?

নিম্নলিখিত কারণে এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে-

ইডিওপ্যাথিক পেইনফুল মেন্সট্রুয়েশন বা অজানা কারণে মাসিকের সময় ব্যথা।

ইডিওপ্যাথিক এক্সেসিভ মেন্সট্রুয়েশন বা অজানা কারণে স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশী দিন মাসিক হওয়া।

ওভারিয়ান সিস্ট।

অনিয়মিত মাসিক চক্র।

এনডোমেট্রিয়সিস।

ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড।

ভলভোডাইনিয়া।

যোনিপথে সিস্ট।

কোন কোন বিষয়গুলো মাসিকের সময় ব্যথা হওয়ার প্রবণতাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে?

যেসকল ক্ষেত্রে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় সেগুলো হলো-

যেসব মহিলার বয়স ৩০ বছরের নিচে।

যাদের মাসিক ১১ বছর বা তার আগে শুরু হয়েছে।

মাসিকের সময় রক্তপাত বেশি হলে।

মাসিক অনিয়মিত হলে।

পরিবারের অন্য কারো এ সমস্যা থাকলে।

পূর্বে কখনো সন্তান প্রসব না করলে।

ধূমপানের কারণে।

প্রত্যেক মেয়েরই কী এ সমস্যা হয়ে থাকে?

না, প্রত্যেকেরই মাসিকের সময় ব্যথা হয় না। তবে অধিকাংশ মেয়েরই মাসিকের সময় মেরুদন্ড ও তলপেটে ব্যথা ও টান অনুভূত হয়। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তি বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। হিটিং প্যাড ব্যবহারের মাধ্যমে বা হালকা গরম পানিতে গোসল করলে এক্ষেত্রে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। আবার হালকা ব্যায়ামও করা যেতে পারে।

মাসিকের সময় ব্যথা হওয়ার কোন পর্যায়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?

নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে-

টানা তিন মাস পর্যন্ত এ ব্যথা স্থায়ী হলে।

তলপেটে খিঁচুনি/টানের সাথে ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাব দেখা দিলে।

মাসিকের সময় ছাড়াও তলপেটে ব্যথা হলে।

আই-ইউ-ডি প্রতিস্থাপনের পর ব্যথা হলে।

এই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে করণীয় কী?

মাসিকের সময় ব্যথা হলে বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যেমনঃ

পিঠ ও পেল্ভিক অংশে হিটিং প্যাড বা হট ওয়াটার ব্যাগের সাহায্যে সেঁক দিতে হবে।

তলপেটে হালকাভাবে ম্যাসাজ করতে হবে।

গরম পানিতে গোসল করতে হবে।

প্রতিবার টয়লেটে গিয়ে সাধারণ পানির পরিবর্তে উষ্ণ পানি ব্যবহার করুন। এতে আপনার তলপেটের ব্যথা অনেকাংশে কমে আসে।

শরবত বা ফলের রস পান করুন।

নিয়মিত ব্যায়াম ও অনুশীলন করতে হবে।

পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

বিভিন্ন রিলাক্সেশন টেকনিক যেমনঃ যোগব্যায়াম করতে হবে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

মাসিকের সময় কিছু পরিমাণে পেটে ব্যাথা করতেই পারে, এতে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু যদি এমন ব্যাথা হয় যেটা সহ্য করায় কঠিন ব্যাপার হয়ে দাড়ায় তাহলে চিন্তার ব্যাপার। কিশোরী বয়সে মাসিক সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে মা, বড় বোন কিংবা অন্য নিকটাত্মীয়ের দায়িত্ব অনেক। বিষয়টি সেকেন্ডারি স্কুলপর্যায়ে পাঠ্য রয়েছে ঠিকই, তবে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষিকার খোলামেলা বৈজ্ঞানিক আলোচনা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক তথ্য জানা থাকলে ভীতি কমবে। ভীতি কমলে ব্যথার তীব্রতা কম অনুভূত হবে। এ ছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, অশান্তির সঠিক সমাধান করা ইত্যাদি বিষয়ে খেয়াল রাখা।




মাসিকে পেটে ব্যাথা

ঋতুস্রাব বা মাসিকের সময় তলপেটে কোনো ব্যাথা বা কষ্টদায়ক অনুভূতি হয় না, এমন নারীর সংখ্যা কম। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এ ব্যাথার পরিমাণ যখন এমন হয় যে তা দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত করে, তখনই কেবল এটাকে অসুস্থতা বা ডিজমেনোরিয়া বলে গণ্য করা হয়। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ