Call

স্বামীর সাথে বিয়ের আগে যদি শারিরীক সম্পর্ক হয় এবং পরে বিয়ে হয় ইসলাম সেটা সমর্থন করে।

যিনাকারী বা ব্যভিচারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার হুকুম: যে মুসলমান তার ঈমানী দুর্বলতার কোন এক মূহূর্তে যেনায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে তার উচিত অনতিবিলম্বে তওবা করা এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসা। যেনার গুনাহ অতি জঘন্য হওয়ার কারণে আল্লাহ তাআলা যেনাকারী নারী-পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম করেছেন

আল্লাহ তাআলা বলেন: “ব্যভিচারী কেবল ব্যভিচারিণী অথবা মুশরিক নারীকে ছাড়া বিয়ে করবে না এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক ছাড়া বিয়ে করবে না। আর মুমিনদের উপর এটা হারাম করা হয়েছে।”(সূরা আন-নূর: ৩)।

তবে যেনাকারী নারী বা পুরুষ খালেস তওবা করলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন ও তার গুনাহগুলোকে নেকীতে পরিবর্তন করে দেন।

 সূরা ফুরকানে আল্লাহ তাআলা যেনাসহ আরও কয়েকটি কবিরা গুনাহের শাস্তি উল্লেখ করার পর বলেন: “তবে যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু”। (সূরা ফুরকান, আয়াত: ৭০)।

 তাই যেনাকারী নারী খালেস তওবা করলে এবং এ পাপ থেকে ফিরে আসলে তাকে বিয়ে করা জায়েয। শাইখ মুহাম্মদ বিন ইব্রাহিমকে যিনাকারিনীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন: তওবা না করা পর্যন্ত যিনাকারিনীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েয নেই। যদি কেউ যিনাকারী নারীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় তাহলে একটি হায়েয এর মাধ্যমে তার গর্ভাশয় খালি কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে হবে। আর যদি তার গর্ভধারণ সাব্যস্ত হয় তাহলে সন্তান প্রসবের আগে বিয়ে করা জায়েয হবে না। (দেখুন আল-ফাতাওয়া আল-জামেয়া লিল মারআ আল-মুসলিমাঃ ২/৫৮৪)।

 অবৈধ মেলামেশার কারণে যদি সন্তান এসে যায় উক্ত সন্তানের জন্মগ্রহণ দুই অবস্থায় হতে পারে।

১। সন্তানটি জন্ম নেয়ার আগেই ব্যভিচারী ব্যভিচারিনীকে বিয়ে করে নিয়েছে। যদি এমনটি হয় তাহলে বিয়ের কমপক্ষে ছয় মাস পর বাচ্চা জন্ম নিলেই উক্ত সন্তান স্বামী-স্ত্রীর বৈধ সন্তান হিসেবে গণ্য হবে। তখন স্বামী একে নিজের সন্তান না বলে অস্বীকার করতে পারবে না। (মাবসুত সারাখসি ১৭/১৫৫)। 

আলী ইবন আসিম ইমাম আবু হানিফা রহ থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, অবৈধ মেলামেশার কারণে যদি সন্তান এসে যায় তারপর তারা যদি একে অপরকে বিয়ে করে নেয় তাহলে বিষয়টি গোপন রাখার ও সন্তানটির পিতা উক্ত স্বামী; একথা বলার মাঝে আমি মন্দ কিছু দেখি না। (আলমুগনি ৯/১২২)।

 ২। আর যদি ব্যভিচারী ব্যভিচারিনীকে বিয়ে না করে থাকে অথবা বিয়ে করলেও বিয়ের আগেই ব্যভিচারিনী সন্তান প্রসব করে দেয় তাহলে তখন উক্ত সন্তান বৈধ সন্তান বলে বিবেচিত হবে না; বরং তখন সে উক্ত মহিলার জারজ সন্তান হিসেবে বিবেচিত হবে। এমনকি এই অবস্থায় ব্যভিচারী-পুরুষটি নিজের সন্তান দাবী করলেও সে তার সন্তান হবে না। তাই বিয়ের আগে যদি গর্ভে সন্তান আসে তাহলে ঐ সন্তান জারয হবে।

কেননা, আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  কোন লোক যদি কোন স্বাধীন স্ত্রীলোক অথবা দাসীর সাথে যিনায় (ব্যভিচারে) লিপ্ত হয় তাহলে (জন্মগ্রহণকারী) সন্তান জারয সন্তান বলে গণ্য হবে। সে কারো উত্তরাধিকারী হবে না এবং তারও কেউ উত্তরাধিকারী হবে না। (সূনান আত তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২১১৩ মিশকাত, তাহকীক ছানী ৩০৫৪ হাদিসের মানঃ সহিহ)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ