আসসালামু আলাইকুম আমার নাম মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, জেলা কিশোরগঞ্জ আমার প্রশ্ন হল কোন এক মেয়ের বিবাহ হচ্ছে না কি কারণে জানিনা। অনেক বয়স হয়ে যাচ্ছে। এখন কি আমল করা যায়? তার বিবাহ হয়ে যাবে এমন কোন আমল আছে কি?  জানালে অনেক উপকৃত হব ।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ وَرَحْمَةُاللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

 بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ ঘরে বিবাহের উপযুক্ত মেয়ে আছে, কিন্তু মেয়ের বিবাহ হচ্ছে না- যদি এমন হয়, তবে নিম্নোক্ত দেয়া আমলগুলো নিয়মিত করুন। ইংশা আল্লাহ্ মেয়ের বিবাহ হয়ে যাবে। 

১. يَا لَطِيْفُ ( ইয়া লাতীফু, অর্থঃ- হে সুক্ষ্মদর্শক।) ক) কারও কুমারী মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব না আসলে মেয়ের অভিভাবক প্রত্যহ অযু করে মেয়ের বিয়ে হওয়ার নিয়ত করে দুই রাকায়াত নফল নামাজ পড়ে ১০০ বার يَا لَطِيْفُ ইয়া লাতীফু এই নামের যিকির করতে থাকবে। প্রতিদিন এই আমলটা করতে থাকলে এক মাসের ভেতর ইংশা আল্লাহ্ মেয়ের বিবাহ হবে। 

খ) মেয়ে হোক ছেলে হোক, যাদের বিয়ে হচ্ছে না, বিয়ে হতে দেরী হচ্ছে, এমন ছেলে এবং মেয়ে নিজেরা يَا لَطِيْفُ ইয়া লাতীফু এই নামের যিকির অযু সহকারে প্রতিদিন ৫০০ বার পাঠ করবে।

 ইংশা আল্লাহ্ দ্রুত বিবাহ হবে। গ ২. يَا مُغْنِيْ ( ইয়া মুগনী, অর্থঃ- হে ধনাঢ্যতা দানকারী ) যেই অভিভাবকের কুমারী মেয়ের বিয়ে হতে দেরী হচ্ছে, এমন অভিভাবক একাধারে ১১ দিন পর্যন্ত এশার নামাজের পর يَا مُغْنِيْ ইয়া মুগনী এই নাম মুবারক ১১০০০ ( এগার হাজারবার) পাঠ করবে। এই আমলটা শুক্রবার রাত অর্থ্যাৎ বৃহস্পতিবার দিনগত রাত থেকে শুরু করবে। ইংশা আল্লাহ্ নিজেই দেখবে গায়েব থেকে কি প্রকাশ পায়। 

উপরে বর্ণিত আমলগুলো হলো, মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত হওয়ার পরও বিয়ে না হলে বা বিয়ে হতে দেরী হলে কি আমল করবে তার বিশেষ কিছু আমল। এছাড়াও নিচের এই আমলটি করলে আল্লাহ্ পাকের পক্ষ থেকে গায়েবী সাহায্যপ্রাপ্ত হবে এবং তার মনোবাসনা পূরণ হবে ইংশা আল্লাহ্।

 يَا مُؤَخِّرُ ( ইয়া মুআখখিরু) যে ব্যক্তি প্রত্যহ ১০০ বার করে এই নামের যিকির করবে, আল্লাহ্ তা'য়ালা তাঁর সমস্ত কাজের জামিন হয়ে যাবেন এবং তার কঠিন থেকে কঠিন কাজ গায়েবী সাহায্যে সহজ হয়ে যাবে। 

আমলকারীর জন্য কিছু করণীয়ঃ- ১. আমলকারী ব্যক্তি হারাম কাজ, হারাম খানাপিনা, মিথ্যা, গালিগালাজ ইত্যাদি গুনাহের কাজ অবশ্যই পরিহার করে চলবে। ২. আমল করার সময় কুচিন্তা থেকে দিল অর্থাৎ অন্তরকে সম্পূর্ণ বিরত রাখবে।৩. আমল করার সময় উদ্দেশ্যের প্রতি অর্থাৎ কি উদ্দেশ্যে এই আমল সে করছে সেই উদ্দেশ্যের প্রতি অবশ্যই খেয়াল রাখবে। যদি আমলকারী ব্যক্তি আমলের সময় আমলের প্রতি একাগ্র মন না রাখে তবে কোন উপকার হবে না। ( হল্লে মুশকিলাত) ৪. আমল করার সময় অথবা আমল করার আগে আমলকারী ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ রসুন খাবে না এবং মুখে দুর্গন্ধ হতে দিবে না। ৫. আমল করার সময় কারো সাথে কথা বলবে না। ৬. যেকোনো বিষয়ের আমল শুরু করতে চাইলে চন্দ্র মাসের প্রথম ১৪ দিনের ভিতরে শুরু করলে বেশি ফল পাবে ইংশা আল্লাহ্। (হল্লে মুশকিলাত) ৭. সকল ধরনের আমল শুরু করার পূর্বে পরিপূর্ণভাবে পবিত্র হবে, সুগন্ধি ব্যবহার করবে, আমলের প্রথমে দুরুদ শরীফ পাঠ করবে। কেননা দুরুদ শরীফ পাঠ করা আমল কবুল হওয়ার জন্য মহর স্বরূপ। ৮. এরপর বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম সম্পূর্ণ পাঠ করে আমল শুরু করবে। 

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

বিয়ের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করতে হবে। আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ ছাড়া উত্তম জীবনসঙ্গী লাভ সম্ভব নয়।

আল্লাহর কাছে উত্তম জীবনসঙ্গী লাভে প্রত্যেক নারী-পুরুষের দোয়া করা একান্ত কর্তব্য। এ কারণেই মানুষ আল্লাহর কাছে উত্তম জীবনসঙ্গী ধরনা ধরে দোআ করে যেন আল্লাহ তাআলা মানুষকে উত্তম জীবনসঙ্গী দান করেন।

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের একটি আয়াতে মুমিন নারী-পুরুষের জন্য সে রকমই একটি দোয়া তুলে ধরেছেনঃ-

رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

উচ্চারণঃ ‘রাব্বানা হাব্লানা মিন আযওয়াঝিনা ওয়া জুর্রিয়াতিনা কুর্রাতা আইয়ুনিও ওয়াঝআলনা লিলমুত্তাক্বিনা ইমামা।’ (সুরা ফুরক্বান : আয়াত ৭৪)।

বিয়ের জন্য হতে পারে একটি সুন্দর ও কার্যকরী দুআ। দুআটি করেছেন সাইয়িদিনা মূসা আলাইহিসসালাম। তিনি ফিরআউনের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে মিশর থেকে বের হয়ে দূর দেশে রওনা হলেন। অচেনা পথ, অজানা দেশ। কারো সাথে কোন পরিচয় নেই। খাবারের মত কোন ভাল ব্যবস্থা নেই। ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত দেহ। তখন ভরসা কেবল একমাত্র আল্লাহ তাআলা। সময় তিনি দুআ করেছিলেন,

رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ

“হে আমার রব, আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাযিল করেন আমি তার প্রতি মুখাপেক্ষী।” (ক্বাসাস : ২৪)।

পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তার জন্য উত্তম ব্যবস্থা করেন। হযরত শুআইব আলাইহিস সালাম-এর কন্যার সাথে বিয়ের ব্যবস্থা করে দেন। তার মাথা গোজার মত একটি জায়গা হয়। দূর দেশে অপরিচিত পরিবেশে আপন কিছু মানুষ পান।

এই দুআর মধ্যে সবকিছু আল্লাহর ওপর ন্যস্ত করার বিষয় আছে। যেহেতু আমরা জানি না, কে আমাদের সুখময় দাম্পত্যজীবনের জন্য কল্যাণকর হবে। কিন্তু আল্লাহ হলেন আলিমুল গায়ব। ভবিষ্যতের সবকিছু সম্পর্কে তিনি অবগত। তাই কার জন্য কোন বিষয়টি কল্যাণকর হবে, এটি তার চেয়ে ভালভাবে আর কেউ জানে না। তাই নিজে কোন কিছু সিলেক্ট না করে বরং পুরো ব্যাপারটাই আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেওয়া। তিনি যা কল্যাণকর বলে মনে করেন সেটাই যাতে করেন।

দুআর ভাষা হওয়া উচিত এমন ‘হে আল্লাহ, কল্যাণকর হয়ে থাকলে তুমি অমুকের সাথে আমার বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও। আর কল্যাণকর না হয়ে থাকলে সুন্দরভাবে এর একটা বিহিত করে কল্যাণকর কাউকে এনে দাও।’

বিবাহ মানবজীবনের সবচে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি। একজন ব্যক্তির বাকী জীবন কেমন কাটবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে এর ওপর। তাই সবসময় দুআর মধ্যে এই বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা কর্তব্য।

বিয়ে ও উত্তম সঙ্গী লাভের জন্য তাই বেশি বেশি দুআ করার কোন বিকল্প নেই। মনের কথা রবের কাছে তুলে ধরলে তিনিই সর্বোত্তম অভিভাবক। তিনিই তার জন্য যথেষ্ট। ©


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ