১. 'একবার এক লোক একটি দোকানে গিয়ে কিছু সওদা করে একটি ৫০০ টাকার নোট দিলেন মূল্য পরিশোধের জন্য। দোকানি লোকটিকে জানালেন যে লোকটির প্রদত্ত ৫০০ টাকার নোটটি একটি জাল নোট। একথা শুনে লোকটি তাৎক্ষণিক মূর্ছা গেলেন। লোকটির জ্ঞান ফিরে আসলে তাকে মুর্ছা যাওয়ার কারন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানালেন-দোকানি আমাকে জানালেন মালামালের মূল্য পরিশোধের জন্য প্রদত্ত নোটটি জাল, যেহেতু নোটটি জাল তাই আমি এখন না হয় বাড়ি গিয়ে একটি ভাল ৫০০ টাকার নোট তাকে এনে দিলেই ল্যাঠা চুকে গেল, কিন্তু আমার মৃত্যুর পর আমার সৃষ্টিকর্তা যদি জিজ্ঞেস বলেন দুনিয়াতে তুই যা করেছিস তর সব জাল তখন আমি কির করব? দোকানির কথা শুনার পর আমার মাঝে যখন এই ভয় উদ্রেক হলো সেই ভয়েই আমি মুর্ছা গেলাম।'
২. ড. আফিয়া সিদ্দিকী যিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিখ্যাত একজন স্নায়ুবিজ্ঞানী। সুযোগ পেলে তার জীবনী একটু পাঠ করবেন। আপনি একটু যাচাই করে দেখুন তো আপনি কি তার চেয়েও বেশি খারাপ অবস্থায় আছেন?
৩. বার্নাকল নামক এক প্রকার হাঁস রয়েছে, জন্মের পর থেকেই যাদের জীবন যুদ্ধের মাঝে বড় হতে হয়। একটু খোঁজ নিয়ে দেখুনতো ঐ নিষ্পাপ হাঁসগুলোকে কেন এত কঠিন পরীক্ষার সন্মুখিন হতে হয়?
৪. 'হযরত উমর একবার সংবাদ পেলেন তার অধিনস্ত কোন এক গভর্ণর মদ নারী ইত্যাদিতে লিপ্ত, প্রজাদের কোন খবরাখবর নিচ্ছেন না। তাই তিনি শুধু এই সংবাদের উপর ভরসা না করে ছদ্মবেশে সেই রাজ্যে গিয়ে হাজির হলেন। ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গেলো এবং মাগরিবের নামাজের আজান দিয়েছে। তাই তাড়াহূড়ো করে মসজিদের সামনে মাঠে খেলাধুলা করছিলো এমন এক শিশুর জিন্মায় তার উটটি রেখে নামাজ আদায় করতে গেলেন। নামাজ শেষে বের হয়ে দেখেন তার উটও নেই এবং সেই শিশুটিও নেই। তিনি খুজতে শুরু করলেন এবং কিছুক্ষনের মধ্যে উট পেয়ে গেলেন তবে উটের পিঠে জিন ছিলনা। তাই তিনি জিন কেনার জন্য দোকান খোঁজ করছিলেন এবং অনতিদূরে তা পেয়েও গেলেন। সেটি ছিল একজন ইহুদির দোকান। খেয়াল করে দেখলেন দোকানে একটি জিন ঝুলানো রয়েছে এবং সেটি তারই সদ্য হারানো জিন। তিনি ইহুদিকে সবকিছু বললে ইহুদিও তার কথায় সম্মত হয়ে বললেন, হ্যাঁ কিছুক্ষণ পূর্বেই একটি শিশু এই জিন আমার কাছে ৫ কিয়াত বিক্রি করে গিয়েছে। আর আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে এগুলো আপনার। তাই আপনি যদি এগুলোর জন্য আমাকে ৫ কিয়াত মূল্য দেন তবে আমি আপনাকে তা দিয়ে দেব। উমর নিজের পরিচয় গোপন রেখে ৫ কিয়াত দিয়ে জিন কিনে নিলেন এবং বললেন-আমি যখন শিশুটির জিন্মায় আমার উট রেখে নামাজ আদায় করতে যাই তখনই মনে মনে ইচ্ছা পোষণ করেছিলাম শিশুটিকে ৫ কিয়াত হাদিয়া তথা বকশিশ দেব। তো শিশুটি তার জন্য নির্ধারিত ৫ কিয়াত সে পেয়ে গেছে তবে একটু ধৈর্য ধারণ করলে তা হালাল ভাবেই অর্জন করতে পারত।'
সবশেষঃ
১. প্রথম ঘটনার আলোকে বলছি, মৃত্যু পরবর্তি জীবনের জন্য কি পরিমাণ অর্জন করেছেন? যদি পর্যাপ্ত হয়ে থাকে সেগুলো জাল কিনা তা যাচাই করুন। যদি সব পরিশুদ্ধ থাকে তবে তা খুবই ভাল। কিন্তু আত্নহত্যার জন্য যে জীবন সেটি কি আসলেই আপনার জীবন। সেখানে কি আপনার বাবা মা ভাই বোন এবং সেই সাথে এই দেশ ও সমাজের কোন দায় নেই? একটি মেয়ের কথা বলছেন, আপনার মৃত্যুতে তার তো কিছুই যাবে আসবে না। সে তো কাউকে না কাউকে বিয়ে করে বহাল তবিয়তে থাকবে। তার চেয়ে নিজের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করে একজন এমন মেয়েকেই ভালবাসুন না যিনি তার জীবন দিয়ে হলেও আপনাকে ভালবাসবে।
২. ড. আফিয়া সিদ্দিকীর উল্লেখ করলাম এইজন্য যে, কি পরিমান নির্যাতন তার উপর নেমে এসেছিল, তিনি এমনও বলেছেন-পবিত্র কোরআনের পাতা ছিড়ে বিছিয়ে দেয়া হতো এবং একপাশে তাকে উলংগ করে অন্য পাশে তার কাপড় রেখে বলা হতো তার লজ্জা নিবারণের জন্য (বলা বাহূল্য তিনি একজন কোরআনের হাফেজ ছিলেন)। সে অবস্থায় তার বারবার আত্নহত্যার কথা মনে হলেও তিনি তার সৃষ্টীকর্তার প্রতি সবর করেছেন। আপনি কি তার চেয়েও অধিক ঈমানি পরিক্ষায় অবতীর্ন? তারপরও বলব সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভরসা করুন ও সবর করুন।
৩. আমরা অনেক সময়ই বলে থাকি কি এমন পাপ করলাম যে সৃষ্টিকর্তা আমাকে এমন পরীক্ষায় ফেললেন? বার্নাকল হাঁসের কথা বললাম এইজন্য যে, নিষ্পাপ হওয়া সত্বেও এই পৃথিবীতে আপনাকে অনেক পরীক্ষার সন্মুখিন হতে হবেই। সে অবস্থায় অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভরসা করুন ও সবর করুন।
৪. ৪র্থ সত্য ঘটনাটি এই জন্য উল্লেখ করা হলো যে, যা আপনার জন্য নির্ধারিত তা যে কোনভাবেই আপনার কাছে আসবে। তা পৃথিবীর কোন শক্তিই কেড়ে নিতে পারবে না। আর যা আপনার জন্য নয় তা পৃথিবীর কোন শক্তিই আপনার নিকট পৌছে দিতে পারবে না। আপনাকে তো কেবল সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভরসা ও সবর করতে হবে।
মনে রাখবেন 'রাত যত গভীর হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে।'
ধন্যবাদ