আধুনিক বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার হচ্ছে মাইক্রোওয়েভ ওভেন। সাধারণত খাবার গরম করার ক্ষেত্রে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণ ওভেনে খাবার গরম করতে যেখানে বেশ খানিকটা সময় লাগে সেখানে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে খুব দ্রুত খাবার গরম করা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাডার প্রযুক্তির যে উন্নতি হয় তাকে কাজে লাগিয়ে মার্কিন রেথিয়ন কোম্পানি রাডারেঞ্জ নামে বাণিজ্যিকভাবে প্রথম মাইক্রোওয়েভ ওভেন তৈরি করে। তবে বর্তমানে যেসব মাইক্রোওয়েভ ওভেন ব্যবহৃত হতে দেখা যায়, ১৯৬৭ সালে আমানা করপোরেশন তা বাজারজাত করে। এই যন্ত্রে মাইক্রোওয়েভ বা অতি ক্ষুদ্র কম্পাঙ্কের তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে খাদ্যবস্তুকে গরম করা হয়। মাইক্রোওয়েভ ওভেন দিয়ে যে খাবার গরম করা হয় তার মধ্যে পানির অংশ থাকতে হয়। মাইক্রোওয়েভ ওভেনের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড পানির কণাগুলোকে খুব দ্রুত দিক পরিবর্তন করাতে থাকে এবং প্রতি সেকেন্ডে ২৪৫০ মিলিয়ন বার কাঁপাতে সাহায্য করে। দ্রুত পানির কণাগুলো কাঁপুনির ফলে যে শক্তি তৈরি হয় তা দিয়ে খাবার গরম হয়। অর্থাৎ খাবারের ভেতর যে পানি থাকে তাই গরম হয় এবং এইভাবেই পুরো খাবারটি গরম হয়ে যায়। তাই যেসব খাবারে খুব কম পানি থাকে তা তুলনামূলক কম গরম হয়। কাচের গ্লাস কিংবা চিনামাটির প্লেট মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম হয় না; কারণ এগুলোর মধ্যে পানির কণা থাকে না। আর লোহা কিংবা ধাতুজাতীয় বস্তু মাইক্রোওয়েভ প্রতিফলন করে বলে খাবার গরম করার সময় চামচ কিংবা কোনো ধাতু দিতে হয় না। মাইক্রোওয়েভ ওভেনে খাদ্যকে দ্রুত এবং সুষমভাবে গরম করা যায় বলে আগের রান্না করা খাবার আবার গরম করতে এবং ঝোলজাতীয় বিভিন্ন খাবার রান্না করতে এটি বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে খাদ্যকে ভাজা বা পোড়ানো যায় না বলে পেশাদার রান্নার জগতে এর ব্যবহার সীমিত।