শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
tipu

Call

কম্পিউটারের জন্ম কিন্তু আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় তিন হাজার বছর আগে চীন দেশে গণনা কাজের জন্য এক ধরণের যন্ত্র ব্যবহার করা হতো। যার নাম ছিল এ্যাবাকাস(Abacus)। এই Abacus নামের যন্ত্রের সাহায্যে প্রাচীন যুগে বিভিন্ন গণনার কাজ করা হতো। আবার এই Abacus থেকেই আধুনিক ক্যালকুলেটর তৈরীর ধারণা এসেছে এটা অনস্বীকার্য।এই যন্ত্রে গণনার কাজের জন্য ব্যবহার করা হতো কতকগুলো গোল চাকতি। এই চাকতি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গণনার কাজ সম্পন্ন করা হতো। কম্পিউটারকে যদি বড় আকারের গণনা যন্ত্র হিসেবে ধরা হয় তাহলে এই Abacus-ই কম্পিউটারের প্রথম চিন্তার সূত্রপাত। (২) মধ্যযূগঃ Abacus আবিষ্কারের পর পার হয়ে যায় কয়েক হাজার বছর। সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষের চিন্তা চেতনা, জ্ঞান ও জানার ক্ষেত্রও হয়ে উঠে বড়ো ও উন্নত। Abacus তৈরী হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় তিন হাজার বছর আগে চীন দেশে। আর প্রথম যান্ত্রিক গণনা যন্ত্র তৈরি হয় ১৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দে। স্যার ব্লায়াস প্যাসকেল নামের একজন ফরাসি বিজ্ঞানী এটা তৈরি করেন। বিজ্ঞানীর নাসানুসারে এই যন্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছিল প্যাসকেলাইন। এটার কার্যপ্রণালী কিন্তু ছিল Abacus এর মতই।তবে এতে চাকতির পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছিল দাঁতযুক্ত চাকা বা গিয়ার। মানুষ প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে ব্যবহার করলো এই যন্ত্র। ১৬৯৪ সালের দিকে প্যাসকেলাইন যন্ত্রের কিছুটা উন্নত সংষ্করণ তৈরি করলেন গটফ্রেড উইলহেম ভন লেইবনিজ।এই যন্ত্রে নাম দিলেন তিনি স্টেপড রেকোনার। পেরিয়ে গেল প্রায় আরও সোয়া এক’শ বছর। ১৮২০ সালের মাঝামাঝি স্টেপড রেকোনার যন্ত্রকে আরও একটু উন্নত করলেন টমাস দ্যা কোমার। ততদিনে মানুষও বেশ আধুনিক হয়েছে।নতুন নতুন প্রযুক্তির দিকে তাদের অনুসন্ধান অব্যহত রয়েছে। আর এরই ফলশ্রুতিতে ১৮২১ সালে ঘটে গেল এক বিপ্লব। চার্লস ব্যাবেজ নামের একজন ইংরেজ গণিতবিদ অংকের বিভিন্ন তথ্যের সহজ সমাধানের জন্য তৈরি করে ফেললেন একটি যন্ত্র। যার নাম দেওয়া হলো ডিফারেন্স ইঞ্জিন। অনতিকাল পরে এই যন্ত্রটিকে আরও আধুনিক করা হলো, নাম দেওয়া হলো এনালাইটিক্যাল ইঞ্জিন। ১৮২১ সালের পূর্বে যেসব যন্ত্র তৈরি হয়েছিল সেগুলো শুধু অংক আর সংখ্যা নিয়ে কাজ করা হতো কিন্তু চার্লস ব্যাবেজের উদ্ভাবিত এই যন্ত্রে অংকের পাশাপাশি তথ্য নিয়েও কাজ করা যেত। তবে এই যন্ত্রের কিছু বাধ্যবাধকতাও ছিল। যন্ত্রটি চালাতে হতো একধরণের ছিদ্রযুক্ত পাঞ্চকার্ড দিয়ে এবং এই পাঞ্চকার্ডটি একবারই মাত্র ব্যবহার করা যেত। দ্বিতীয়বার ব্যবহার করতে হলে আবার নতুন কার্ড প্রয়োজন হতো। ব্যাভেজের যন্ত্রে ছিল তিনটি অংশ। সেগুলো হলো- (ক)তথ্য বা নির্দেশ প্রদাণের অংশ- এই অংশে থাকবে যন্ত্রটি চালানোর সমস্ত তথ্য বা নির্দেশ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের ফলাফল। (খ)ফলাফল প্রদানের অংশ- এই অংশে গণনার উপযুক্ত ফলাফল প্রদান করবে। (গ)তথ্য সংরক্ষণ-এই অংশে তথ্যগুলো সংরক্ষণ করা যাবে। বর্তমানের আধুনিক একটি কম্পিউটারে যেসব অংশ দেখা যায় বা বিদ্যমান রয়েছে চার্লস ব্যাবেজের এনালাইটিক্যাল ইঞ্জিনে তার সবগুলোই বিদ্যমান ছিল। তাছাড়া এই প্রথম কোন যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে গণনা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করতে পারতো। সুতরাং এটা নিশ্চিত করে বলা যায় যে, চার্লস ব্যাবেজই হচ্ছেন কম্পিউটারের আদি পিতা।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ