শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

স্বাভাবিক দৃষ্টিতে যে সকল বস্তু দেখা যায় না, এমন বস্তুকে বর্ধিত আকারে দেখার জন্য– অনেক আগে থেকে লেন্সের ব্যবহার হতো। সবচেয়ে প্রাচীন যে লেন্সের কথা জানা যায়, তার নাম ল্যানিয়ার্ড লেন্স (Lanyard Lens)। এই লেন্সটি খ্রিষ্ট-পূর্ব ৭২১-৭০৫ অব্দে আবিষ্কার করেছিলেন Lanyard নামক একজন গবেষক। উল্লেখ্য ল্যানিয়ার্ডের লেন্সটি ছিল উত্তল লেন্স। কিন্তু এই লেন্সের উপরিভাগ অনেকটাই সরল ছিল। খ্রিষ্টীয় প্রথম শতাব্দীর দিকে এই লেন্সের উপরিভাগকে গোলাকার করা শুরু হয়। এই লেন্সগুলো ছিল বেশ ঘোলাটে। ফলে বস্তুকে বর্ধিত আকারে দেখালেও তার মান খুব ভালো ছিল না। বেশিরভাগ ক্ষেত্র গহনার সাথে এই লেন্সগুলো ব্যবহার করা হতো। তাই তখন পর্যন্ত ঠিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গীতে লেন্সকে বিচার করা হতো না। লেন্সের ভিতর দিয়ে দৃশ্যমান কেন পরিবর্তিত হয়, এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য গবেষণা শুরু হয় অনেক পরে। প্রথম দিকে আরবের বিজ্ঞানী আলহাজেন মানুষের চোখ ও আলোর আচরণ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছিলেন। তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র ছিল– চোখের লেন্স, এর ফোকাস ও চোখের রেটিনা। কাছের জিনিস বড় করে দেখার জন্য লেন্সের ব্যবহার করে চশমা তৈরির পদ্ধতি শুরু হয়েছিল চীনে। কিন্তু ভালো লেন্স তৈরির পদ্ধতি না জানার কারণে, এই চশমার ব্যবহার ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠে নি। আধুনিককালের চশমা এবং এর লেন্সের বিকাশ ঘটে ১২৮০-১২৮৫ খ্রিষ্টাব্দের ভিতর ইটালির ফ্লোরেন্স শহরে। তবে কে এই চশমার উন্নয়ন করেছিল তা জানা যায় না। অনেকে মনে করেন আমাটি (Amati) নামক জনৈক গবেষক এই চশমা তৈরি করেছিলেন। উল্লেখ্য আমাটি ১৩১৭ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম দিকে ধীরে ধীরে ফ্লোরেন্স শহরে এর ব্যবহার ছড়িয়ে পড়তে থাকে। হ্যানস এবং তাঁর পুত্র জ্যাকারিয়াস জ্যানেসন অনুবীক্ষণযন্ত্র এই সময়ে চশমা তৈরির পাশাপাশি কেউ কেউ এমন বিবর্ধক কাঁচ তৈরির চেষ্টা করেছিলেন– যেগুলো চোখে না লাগিয়েই বস্তুকে বড় করে দেখা যেতে পারে। এই সূত্রে তৈরি হয়েছিল সরল অনুবীক্ষণ যন্ত্র। ১৫৯০ -১৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ডাচ্ লেন্স প্রস্তুতকারক হ্যানস এবং তাঁর পুত্র জ্যাকারিয়াস জ্যানেসন (Zacharias Jansen) এক জোড়া উত্তল লন্স ব্যবহার করে একটি যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র তৈরী করেন। মূলত এই সময়ে জ্যাকারিয়াস ছোট ছিলেন। ইনি পরে বড় হয়ে এই যন্ত্রটির ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ১৬১১ খ্রিষ্টাব্দে কপলার লেন্স বিন্যাসরূপ এই অনুবীক্ষণ যন্ত্রটি কেমন ছিল তার কোন নমুনা কোথাও পাওয়া যায় না। তবে হল্যান্ডর জাদু ঘরে এর একটি নমুনা রক্ষিত আছে বলে অনেকে দাবী করে থাকেন। ১৬০০-১০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে অনুবীক্ষণ যন্ত্রে তিনটি লেন্স ব্যবহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সম্ভবত ১৬১১ খ্রিষ্টাব্দে কপলার নামক অপর একজন বিজ্ঞানী আইপিসের সংযোজন করেন। এটি তৈরি করেছিলেন Giuseppe Campani এটি তৈরি করেছিলেন Eustachio Divini অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে জীববিজ্ঞানের নূতন নূতন বিষয় আবিষ্কৃত হতে থাকলে, গবেষণার জন্য এই যন্ত্রের জনপ্রিয়তা ও চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ফলে এই যন্ত্রের উন্নয়নে অনেকেই এগিয়ে আসেন। ১৬১০-১৭০০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতর অণুবীক্ষণ যন্ত্রের বেশ কিছু উন্নত সংস্করণ বাজারজাত হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ