শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

কৃত্রিমভাবে দ্বিমাত্রিক চলমান ছবি তৈরির কৌশল আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৮৬০-এর দশকে। তখন জোট্রোপ এবং প্র্যাক্সিনোস্কোপ নামক যন্ত্র দিয়ে এ ধরণের ছবি তৈরি করা যেতো। একেবারে সাধারণ আলোক যন্ত্রের (ম্যাজিক লণ্ঠন) উন্নতি সাধন করে এগুলো তৈরি করা হয়েছিল। এগুলোর মাধ্যমে ধারাবাহিক কতগুলো স্থিরচিত্র একটার পর একটা এতো দ্রুত পরিবর্তন করা যেতো যে দর্শকের চোখে পরিবর্তন খুব একটা ধরা পড়তো না। ছবিগুলোকে খুব যত্ন সহকারে ডিজাইন করতে হতো যাতে কোন খুঁত না থাকে। এই ধারণাটিই পরবর্তীতে এনিমেশন চিত্র নির্মাণের মূলনীতি হয়ে দেখা দিয়েছিলো।

স্থির চিত্রগ্রহণে সেলুলয়েড ফিল্ম আসার পর চলমান বস্তুর সরাসরি ছবি তোলা সম্ভব হলো। প্রাথমিক যুগে একটি ড্রামের মধ্যে বেশ কিছু ছবি লাগিয়ে ড্রামটিকে জোড়ে ঘুরানো হতো। একটা বিশেষ দিক থেকে দর্শক ড্রামের দিকে তাকালে চলমান চিত্র দেখতে পেতো। ড্রামের গতি ছিল সাধারণত সেকেন্ডে ৫ বা ১০ বার এবং ড্রামগুলো কয়েনের মাধ্যমে অর্থ আদায় করতো। ১৮৮০'র দশকে চলচ্চিত্র ক্যামেরা উদ্ভাবিত হয়। এর মাধ্যমে অনেকগুলো স্থিরচিত্রকে একটি মাত্র রিলে সংরক্ষণ করা যেতো। এই রিলগুলোকে পরবর্তীতে চলচ্চিত্র রূপে দেখানো হতো প্রজেক্টরের মাধ্যমে। প্রজেক্টরের আলো রিলের উপর ফেলা হতো এবং রিলের ছবিগুলোকে বিবর্ধিত করে একটি বড় পর্দার উপর ফেলা হতো যা দর্শকরা দেখতে পেতো। প্রথম দিককার চলচ্চিত্রগুলো সবই ছিল বাস্তব ঘটনার সরাসরি দৃশ্যায়ন এবং প্রদর্শন। সেখানে কোন সম্পাদনা বা চলচ্চিত্ররূপী উপস্থাপনার সুযোগ ছিল না।

১৮৯৪ সালের দিকেই ডিকসন শব্দ এবং ছবি একসাথে ধারণের পরীক্ষা শুরু করেছিলেন। কিন্তু তার সে প্রচেষ্টাকে এড়িয়ে গিয়ে নির্বাক চলচ্চিত্র প্রাধান্য বিস্তার করে এবং জনমনে বিশেষ ছাপ ফেলতে সক্ষম হয়। উনবিংশ শতকের শেষ পর্যন্ত নির্বাক চলচ্চিত্রই ছিল একমাত্র চলমান শিল্প মাধ্যম। বিংশ শতকের শুরুতে চলচ্চিত্র বর্ণনামূলক ধারায় রূপ নিতে শুরু করে। অনেকগুলো দৃশ্যকে একসাথে জোড়া লাগিয়ে এবং প্রত্যেকটির জন্য বর্ণনাভঙ্গি নির্দিষ্ট করে, প্রচার করা হতে থাকে। ধীরে ধীরে দৃশ্যগুলোকে বিভিন্ন আক্র এবং কোণ থেকে নেয়া অনেকগুলো শটে ভাগ করা হয়। এছাড়া চলমান ক্যামেরার মাধ্যমে চলচ্চিত্র গল্প ফুটিয়ে তোলার কৌশল আবিষ্কৃত হয়। তখনও ছবি নির্বাক ছিল। কিন্তু, প্রতিটি শটের সাথে মিল রেখে সঙ্গীত এবং বাজনা বাজানোর জন্য সিনেমা হলে বা মঞ্চে অর্কেস্ট্রা দল থাকতো। বড় বড় প্রযোজনা কোম্পানিগুলো এসবের ব্যবস্থা করতো।

Georges Méliès পরিচালিত Le Voyage dans la Lune (চন্দ্রাভিযান) (১৯০২) চলচ্চিত্রের একটি শট। প্রাচূন বর্ণনামূলক চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম

হলিউডের উত্থানের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলচ্চিত্র বিকশিত হয়ে উঠলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে ইউরোপে এই শিল্পটি ততোটা বিকশিত হয়ে উঠতে পারেনি। অবশ্য ১৯২০-এর দশক থেকে সের্গে আইজেনস্টাইন, এফ ডব্লিউ মার্নো এবং ফ্রিৎস ল্যাং এর মতো ইউরোপীয় পরিচালকরা ডি ডব্লিউ গ্রিফিথ, চার্লি চ্যাপলিন, বুস্টার কিটন প্রমুখ মার্কিন পরিচালক ও অভিনেতাদের সাথে মিলে ইউরোপে চলচ্চিত্র বিস্তারের কাজ শুরু করেন। এই দশকেই প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে চলচ্চিত্রের শটগুলোর সাথে ঐকতান বজায় রেখে শব্দ, সঙ্গীত এবং কথোপকথন যুক্ত করা সম্ভব হয়। উদ্ভব হয় সবাক চলচ্চিত্রেরইংরেজতে এগুলোকে "টকিং পিকচার" বা সংক্ষেপে "টকি" (talky) বলা হতো ।

তথ্যসূত্র উইকিপিডিয়া


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

প্রাচীন যুগের "গুহাচিত্র" থেকেই আধুনিক চিত্রকলার সূত্রপাত। গুহাযুগে যারা খাদ্য যোগানে বা কর্মে বিমুখ বা অপটু ছিল তারা কায়িক পরিশ্রমের দিকটা পরিহার করে নান্দনিকতার সুপ্ত দিক প্রকাশের ব্যপারে আগ্রহী ছিল। এদের এই গুনকে সেই সময় যথেষ্ট সমীহ করা হতো। তাই এরা ইচ্ছামত চিত্রআঁকতো দেয়ালের গায়ে। পরবতর্ীকালে রেড ইন্ডিয়ানদের "ধোঁয়া সঙ্কেত" (Smoke Signal ) চীনাদের "ছায়া নাটক" (্লShadow Drama) বা মধ্যযুগীয় ম্যাজিক লন্ঠনের (Magic Lamp) মাধ্যমে ছায়াকে গতিতে রূপ দেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। এই ভাবেই আধুনিক চলচ্চিত্রের সূত্রপাত। 1671 সাল ঃ এথানাসিয়াস কার্চার (Athanasius Kircher) কর্তৃক ম্যাজিক লন্ঠনে "যীশুর জীবনী" প্রদর্শন। পরের শতকটি মূলতঃ "চলচ্চিত্র দৃষ্টি বিজ্ঞান" বা "সিনেম্যাটিক ভিজ্যুয়াল সাইন্স"র "অবিরত দৃষ্টিতত্ত্ব" ("Persistence of Vision" বা সংক্ষেপে "POV") এর আবিষ্কার ও সূত্রায়ন। 1816 সাল ঃ নিসেফোর নীপসে (Nicophere Niepce) কতর্ৃক সাফল্যজনকভাবে ফটোগ্রাফিক ইমেজ সৃষ্টি (স্বল্পকালের জন্য)। 1829 সাল ঃ জোসেফ এ এফ প্লাটু কর্তৃক প্রথম শাটার (Shutter Release Mechanism) (ক্যামেরায় আলো প্রবেশ নিয়ন্ত্রন করার পদ্ধতি) আবিস্কার। 1830 সাল ঃ ডাবি্লউ এইচ ফক্স ট্যালবোট কর্তৃক প্রথম ইমেজ ধারণ করার উপযুক্ত নেগেটিভ আবিষ্কার। 1837 সাল ঃ লুই দ্যাগুয়ে ও নিসেফোর নীপসের সহযোগিতায় আলোকচিত্রের জন্ম দিলেন। 1845-53 সাল ঃ কেরোসিনের বাতি ও লেন্স ব্যবহার করে ব্যারন ফানজ ভন ইউকেটিয়াস প্রথম চিত্র প্রক্ষেপনের এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। 1880 সাল ঃ মায় ব্রিজ (Muy Bridge)কতর্ৃক প্রথম পর্দায় আলো প্রপেনের মাধ্যমে চলন্ত জীবজন্তুর ছবি দেখানোর প্রক্রিয়া আবিষ্কার। 1882-85 সাল ঃ মায় ব্রিজ দীর্ঘ পরীক্ষা নিরিক্ষার পর "ড্রাই- প্ল্লেট ফটোগ্রাফি" (Dry Plate Photography) পদ্ধতির উন্নয়ন সাধন করলেন। জু্যলে এতিঁয়েন মারে প্রথম হাতে ধরা ক্যামেরা বা "ফটোগ্রাফিক গান" (Photographic Gun) তৈরী করলেন। প্রতি সেকেন্ডে 12 টি ফ্রেম। 1887 সাল ঃ আলোকচিত্রের ইমেজ ধারণে কাঁচের বদলে কাগজের ব্যবহার প্রবর্তন করলেন। 1889 সাল ঃ টমাস আলভা এডিসন মারে'র ধারণাকে গ্রহন করে কাগজ-নির্ভর সেলুলয়েড সৃষ্টি করলেন। 1892 সাল ঃ মারে আধুনিক ধরণের প্রক্ষেপন যন্ত্র আবিষ্কার করলেন। 1893 সাল ঃ ইষ্টম্যান নমনীয় ফিল্ম আবিষ্কার করলেন যা আধুনিক চলচ্চিত্র নিমর্ানের পথকে সুগম করে দিল। 1895 সাল ঃ লুমিয়ের ভ্রাতৃদ্বয় (August and Luis Lumier) প্রথম চলচ্চিত্র ক্যামেরা (প্রতি সেকেন্ডে 16 টি ফ্রেম) ও "আর্ক ল্যাম্প" প্রক্ষেপন যন্ত্রও নিমর্ান করলেন। 1895 সালের 28 শে ডিসেম্বব প্যারিসে দর্শকদের সামনে প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হলো। ছবিগুলো ছিল "বেবী এ্যাট দ্যা ব্রেকফাস্ট" (Baby at the Breakfast) ও "দ্যা গার্ডেনার এ্যান্ড দ্যা হাউস" (The Gardener and the House)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ