হিন্দি আর উর্দু ভাষার পার্থক্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আক্ষরিকভাবে হিন্দি ও উর্দু খাড়িবুলি ভাষার দুইটি রূপ। বিশেষত উত্তর ও মধ্য ভারতে এই ভাষার প্রচলন বেশি। খাড়িবুলি ভাষার ফারসি প্রভাবিত রূপ উর্দু বলে পরিচিত। দিল্লি সালতানাত (১২০৬-১৫২৬) ও মুঘল সাম্রাজ্যের (১৫২৬-১৮৫৮) সময়কালে উর্দুউপমহাদেশে গড়ে উঠে।[২] ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৎকালীন সরকারি ভাষা ফারসিকে বদলে ইংরেজি করার পর ফার্সি লিপিতে লিখিত উর্দু ভাষা ফারসির স্থলে অতিরিক্ত সরকারি ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হত।
উনিশ শতাব্দীর শেষ কয়েক দশক ভারতের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ এবং আওধে হিন্দি ও উর্দু নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। হিন্দির পৃষ্ঠপোষকরা দেবনাগরী হরফে হিন্দুস্তানি ভাষা লেখার দাবি জানায়। উত্তর ভারতে দেবনাগরী হরফের সরকারি স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন গড়ে উঠে। বাবু শিব প্রসাদ ও মদন মোহন মালব্যছিলেন এই আন্দোলনের প্রথমদিককার নেতা। এর ফলশ্রুতিতে উর্দুর সরকারি মর্যাদা রক্ষার জন্য পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে উর্দু আন্দোলন গড়ে উঠে। সৈয়দ আহমদ খান ছিলেন উর্দুর পক্ষের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি।
১৯০০ সালে সরকার উর্দু ও হিন্দির জন্য সমান মর্যাদা ঘোষণা করে ফরমান জারি করে। হিন্দুরা একে স্বাগত জানালেও মুসলিমরা এর প্রতিবাদ জানায়। উৎপত্তিগতভাবে এক হলেও হিন্দি সংস্কৃত থেকে এবং উর্দু আরবি ও ফারসি থেকে শব্দ গ্রহণের কারণে পৃথক রূপের ছিল। এই হিন্দি-উর্দু বিভক্তির কারণে মহাত্মা গান্ধী দেবনাগরী বা উর্দু হরফ ব্যবহার করে প্রথাগত নাম হিন্দুস্তানি ব্যবহারের প্রস্তাব করেন। কংগ্রেস ও ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যান্য নেতাদের সমর্থনপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৫০ সালের সংবিধান অনুযায়ী ভারতে দেবনাগরী লিপিতে লিখিত হিন্দি ইংরেজির পাশাপাশি সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষিত হয় এবং উর্দু প্রতিস্থাপিত হয়।