শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

সত্যি বলতে কি, আজকাল ভীষণ অশান্ত হয়ে গেছে আমাদের জীবনগুলো। এবং যতদিন যাচ্ছে এই অশান্ত অবস্থা কেবলই বাড়ছে। আর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমাদের মানসিক অশান্তি। রাজনৈতিক পরিস্থিতি হোক কিংবা পেশাগত জীবনের ইঁদুর দৌড়- সবকিছুর সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে গেছে জীবন যে মানসিকভাবে সুস্থ থাকাটা রীতিমতন একটা “চ্যালেঞ্জের” বিষয়। আসুন, আজ আলোচনা করি মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার ১০টি উপায় নিয়ে।

কথা বলুন নিজের অনুভবের ব্যাপারে

- আপনি মানুষ, আর মানুষ মাত্রই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করবে। পরিবেশ পরিস্থিতির নানান চাপে অনেক সময়েই আমরা নিজের মনের কথাটা চাপা দিয়ে দেই। এই চাপা আবেগ গুলো জমতে জমতেই একসময় বিশাল একটা মানসিক সমস্যা হয়ে যায়। সুতরাং, এই ব্যাপারটা থেকে বেরিয়ে আসুন। জীবনে ২/১জন মানুষ এমন খুঁজে নিন যাদের কাছে মনের সব কথা বলে দেয়া যায়। নিদেন পক্ষে ডায়রি লেখার চর্চা করতে পারেন। তাতেও শান্তি মিলবে।

ঠিকমত খাবেন ও ঘুমাবেন

-কেবল শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্যও ঠিকমত খাওয়া এবং ঘুমের বিকল্প নেই। কেননা এই দুটো বস্তুর অভাবে নিশ্চিত রূপেই মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়ে, বিষণ্ণতা ভর করে। লক্ষ্য করে দেখবেন, তীব্র মন খারাপের সময় ভালো কিছু খাওয়া কিংবা আরাম করে একটু ঘুম অনেক কাজ দেয়। দীর্ঘদিন যাবত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে থাকলে গুরুতর শারীরিক অসুখ ছাড়াও নানান প্রকার মনের অসুখ দেখা দেয়।

বন্ধু নির্বাচন করুন বুঝে

- জীবনে যন্ত্রণার অভাব নেই। সুতরাং বন্ধু বান্ধবের কারণে বাড়তি যন্ত্রণা পোষার কোনও মানে নেই। মানুষ বন্ধুত্ব করে ভালো থাকার জন্য। আর সেই উদ্দেশ্য পূরণ করতে গেলে অবশ্যই প্রয়োজন ভালো বন্ধু। একজন খারাপ বন্ধু দশ জন শত্রুর চাইতে খারাপ। বাস্তব জীবন, ফেসবুক ইত্যাদি যে কোনও জায়গাতেই বন্ধু বানান বুঝে শুনে।

যেমন আছেন, নিজেকে সেভাবেই ভালবাসুন

- মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য এই ব্যাপারটা কিন্তু অত্যন্ত জরুরী। আমাদের বেশিরভাগ হতাশা, বেদনার জন্ম হয় নিজের ব্যাপারে অতৃপ্তি থেকে। আমি পেলাম না, আমার নেই, হয়তো আমি যোগ্য নই ইত্যাদি ভাবনা তৈরি করে গভীর বেদনা ও হীনমন্যতার। একটা ব্যাপার কখনও ভুলে যাবেন না যে, পৃথিবীতে কেউ কারো মতন নয়। সবাই-ই তাঁর নিজ নিজ দিক হতে বিশেষ। তাই নিজেকে কারো তুলনায় ছোট মনে করে মনে মনে কষ্ট পাবেন না বা নিজেকে গুটিয়ে রাখবেন না না। একটাই জীবন, বাঁচুন মন খুলে।

প্রার্থনা করুণ নিয়মিত-

মানুষের মনের উপরে ওষুধের মতন কাজ করে এই প্রার্থনা। আপনি যে ধর্মের অনুসারীই হয়ে থাকুন না কেন, প্রতিদিন নিজ ধর্ম অনুযায়ী খানিকটা সময় প্রার্থনা করুন। কেবল করতে হবে বলে নয়, মনের গভীর থেকে করুন। নিজের একান্ত গোপন ব্যথা, বেদনা, ক্ষোভের কথা বলুন সৃষ্টিকর্তাকে। দেখবেন মনটা নিমিষে হাল্কা হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, দেখবেন অনেক ক্ষোভ মুছে গিয়ে অন্যকে ক্ষমা করতে পারছেন। নিজেকে একজন মজবুত মানুষ মনে হচ্ছে।

করুন অবসর যাপন-

কাজ আমরা করবোই, বেঁচে থাকতে গেলে কাজ করতেই হবে। কিন্তু কাজ করাটাই কেবল জীবন নয়। বরং জীবনটা যে আসলে কি, সেটা অনুধাবন করতেই কাজ হতে অবসর নেবার প্রয়োজন। নিজের সুবিধা মতন সময়ে অবসর পালন করুন। পরিবার, বন্ধুরা কিংবা একান্তই নিজের সাথে। নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য এই নিরিবিলি আরামটুকুন ভীষণ প্রয়োজন।

সব শেষে বলতে চাই- সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। ছোট্ট একটা জীবন, অহেতুক কাজে নষ্ট করবেন না। আপনার মানসিক- শারীরিক সুস্থতা শোবায় আগে। কেননা সেগুলো বজায় থাকলেই তবেই না জীবনটা সুন্দর আর উপভোগযোগ্য।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ