Jamiar

Call

  মহান আল্লাহ তাআলা পুরুষকে স্ত্রীর উপর দায়িত্ববান ও কর্তৃত্ব শীল হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,

الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّـهُ بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ وَبِمَا أَنفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ
"পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্ব শীল (দায়িত্ববান) এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে।" (সূরা নিসা: ৩৪)
 তাছাড়া আল্লাহ তাআলা পুরুষকে আদেশ করেছেন যেন, সে নিজে জাহান্নাম থেকে বাঁচার পাশাপাশি যেন তার স্ত্রী-পরিবারকেও বাঁচায়। আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا "হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর।" (সূরা তাহরীম: ৬)
 মহান আল্লাহ কেবল দায়িত্ব দিয়েই ক্ষান্ত হন নি বরং তিনি তাকে কিয়ামতের দিন তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। যেমন: হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
ইবনে উমর রা.সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন,أَلاَ كُلُّكُمْ رَاعٍ وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ : وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ"‏ ‏
“জেনে রাখো, তোমাদের প্রত্যেকেই একেকজন দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ...একজন পুরুষ তার পরিবার (স্ত্রী-সন্তানদের) উপর দায়িত্বশীল। সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।" [সহিহ মুসলিম]
সুতরাং স্বামীর দায়িত্ব হল, সে স্ত্রীকে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী চলার তথা নামাজ, রোজা, পর্দা, হালাল-হারাম মেনে চলা, স্বামীর আনুগত্য সহ আল্লাহর হুকুম-আহকাম মেনে চলার নির্দেশ দিবেন, নামাজ, রোজা, পাক-পবিত্রতা, কুরআন পড়া বা ইসলাম সম্পর্কে না জানলে তাকে শিখতে সাহায্য করবে, তাকে ইসলামি জ্ঞানার্জনের সুযোগ দিবে এবং দীনের উপর পরিচালিত হতে এবং গুনাহ থেকে বাঁচতে একজন অভিভাবক, দায়িত্বশীল ও কল্যাণকামী হিসেবে সাহায্য করবে।
অনুরূপভাবে তাকে হারাম কাজ করতে দেখলে বাধা দিবে। যেমন: পর্দা হীনতা, বাইরে যেখানে সেখানে বেপরোয়া চলাফেরা করা, নন মাহরাম পুরুষদের সাথে মেলামেশা, দুষ্টামি ও হাসি-কৌতুক, পরপুরুষকে বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া, সুগন্ধি ব্যবহার করে বাইরে যাওয়া, গানবাজনা, নাটক-সিনেমা দেখা, অনুমতি ছাড়া দূরে যাওয়া ইত্যাদি। 
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যায় দেখলে তা হাত দ্বারা প্রতিহত করার নির্দেশ দিয়েছেন যদি ক্ষমতা থাকে। সুতরাং স্বামী যদি তার স্ত্রীকে অন্যায়-অপকর্ম ও আল্লাহর নাফরমানি করতে দেখে তাহলে তার জন্য আবশ্যক হল, তাকে বাধা দেয়া বা নিষেধ করা। প্রয়োজনে এ ক্ষেত্রে সে ক্ষমতা প্রয়োগেরও অধিকার রাখে। এটি তার আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার।
এই দায়িত্ব পালন করা স্বামীর জন্য ফরজ। সে যদি এ ক্ষেত্রে অবহেলা প্রদর্শন করে তাহলে গুনাহগার হবে এবং আখিরাতে আল্লাহর কাঠগড়ায় বিচারের মুখোমুখি হবে। 
 স্ত্রী যদি স্বামীর এসব বাধা-নিষেধের ক্ষেত্রে অবাধ্যতা করে তাহলে কুরআনের আলোকে স্বামীর করণীয় হল:
  •  প্রথমে তাকে সুন্দর ভাষায় নসিহত করবে এবং আন্তরিকতা ও ভালবাসা দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করবে। 
  • কিন্তু এতে সংশোধন না হলে ২য় পদক্ষেপে বিছানা আলাদা করে দিবে (অর্থাৎ একই ঘরে পৃথক বিছানায় শয়ন করবে)। 
  • এতেও সে ফিরে না এলে তাকে হালকা ভাবে প্রহারেরও অনুমতি আছে। 
  • তাতেও কাজ না হলে উভয় পক্ষের জ্ঞানী লোকদের মাধ্যমে সমঝোতা অথবা বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটাবে। 
  • মহান আল্লাহ বলেন,
وَاللَّاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ ۖ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا ۗ إِنَّ اللَّـهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيرًا وَإِنْ خِفْتُمْ شِقَاقَ بَيْنِهِمَا فَابْعَثُوا حَكَمًا مِّنْ أَهْلِهِ وَحَكَمًا مِّنْ أَهْلِهَا إِن يُرِيدَا إِصْلَاحًا يُوَفِّقِ اللَّـهُ بَيْنَهُمَا ۗ إِنَّ اللَّـهَ كَانَ عَلِيمًا خَبِيرًا
“আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ। যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত।”(সূরা নিসা: ৩৪ ও ৩৫)।আসা করি বুঝতে পারছেন।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ