শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
MmiMomin

Call

১. স্বামীর আনুগত্য :
স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য। তবে যে কোন আনুগত্যই নয়, বরং যেসব ক্ষেত্রে আনুগত্যের নিম্ন বর্ণিত তিন শর্ত বিদ্যমান থাকবে।

ভাল ও সৎ কাজ এবং আল্লাহর বিধান বিরোধী নয় এমন সকল বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন সৃষ্টির আনুগত্য বৈধ নয়।
স্ত্রীর সাধ্য ও সামর্থ্যরে উপযোগী বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা। কারণ আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্বারোপ করেন না।
যে নির্দেশ কিংবা চাহিদা পূরণে কোন ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, সে ব্যাপারে স্বামীর আনুগত্য করা।

আনুগত্য আবশ্যক করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ •‘নারীদের উপর পুরুষগণ শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্বের অধিকারী।’ [বাকারা : ২২৭]

আল্লাহ তাআলা আরো বলেন:
• ‘পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী। কারণ আল্লাহ তাআলা-ই তাদের মাঝে তারতম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের বিধান রেখেছেন। দ্বিতীয়ত পুরুষরাই ব্যয়-ভার গ্রহণ করে।’ [নিসা : ৩৪]

উপরন্তু এ আনুগত্যের দ্বারা বৈবাহিক জীবন স্থায়িত্ব পায়, পরিবার চলে সঠিক পথে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বামীর আনুগত্যকে এবাদতের স্বীকৃতি প্রদান করে বলেন--

# যে নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, রমজান মাসের রোজা রাখে এবং নিজের লজ্জাস্থান হেফাজত করে ও স্বীয় স্বামীর আনুগত্য করে, সে,নিজের ইচ্ছানুযায়ী জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে। [আহমাদ : ১৫৭৩]

স্বামীর কর্তব্য, এ সকল অধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে আল্লাহর বিধানের অনুসরণ করা। স্ত্রীর মননশীলতা ও পছন্দ-অপছন্দের ভিত্তিতে সত্য-কল্যাণ ও উত্তম চরিত্রের উপদেশ প্রদান করা কিংবা হিতাহিত বিবেচনায় বারণ করা।উপদেশ প্রদান ও বারণ করার ক্ষেত্রে উত্তম আদর্শ ও উন্নত মননশীলতার পরিচয় দেয়া । এতে সানন্দ চিত্তে ও স্বাগ্রহে স্ত্রীর আনগত্য পেয়ে যাবে।

২. স্বামী-আলয়ে অবস্থান:
নেহায়েত প্রয়োজন ব্যতীত ও অনুমতি ছাড়া স্বামীর বাড়ি থেকে বের হওয়া অনুচিত।মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ নারীদের ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীদের সম্বোধন করে বলেন—সকল নারীই এর অন্তর্ভুক্তঃ
• ‘তোমরা স্ব স্ব গৃহে অবস্থান কর, প্রাচীন যুগের সৌন্দর্য প্রদর্শনের মত নিজেদের কে প্রদর্শন করে বেড়িও না। ’ [আহজাব : ৩৩]

স্ত্রীর উপকার নিহিত এবং যেখানে তারও কোন ক্ষতি নেই, এ ধরনের কাজে স্বামীর বাধা সৃষ্টি না করা। যেমন পর্দার সাথে, সুগন্ধি ও সৌন্দর্য প্রদর্শন পরিহার করে বাইরে কোথাও যেতে চাইলে বারণ না করা।
# ইবনে উমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহর বান্দিদেরকে তোমরা আল্লাহর ঘরে যেতে বাধা দিয়ো না। [বুখারী: ৮৪৯ ]

# আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা: এর স্ত্রী যয়নব সাকাফী রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে বলতেন: তোমাদের কেউ মসজিদে যাওয়ার ইচ্ছে করলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে না। [মুসলিম : ৬৭৪]

৩. নিজের ঘর এবং সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা
স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করা। স্বামীর সাধ্যের অতীত এমন কোন আবদার কিংবা প্রয়োজন পেশ না করা।
# রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ঘরের জিম্মাদার। এ জিম্মাদারির ব্যাপারে তাকে জবাবদেহিতার সম্মুখীন করা হবে।’ [বুখারী: ২৫৪৬]

৪. নিজের সতীত্ব ও সম্মান রক্ষা করা
পূর্বের কোন এক আলোচনায় আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর একটি হাদিস এ মর্মে উল্লেখ করেছি যে, নিজেকে কখনো পরীক্ষা কিংবা ফেতনার সম্মুখীন না করা।

৫. স্বামীর অপছন্দনীয় এমন কাউকে তার ঘরে প্রবেশের অনুমতি না দেয়া
হোক না সে নিকট আত্মীয় কিংবা আপনজন। যেমন ভাই-বেরাদার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
# ‘তোমাদের অপছন্দনীয় কাউকে বিছানায় জায়গা না দেয়া স্ত্রীদের কর্তব্য।’ [মুসলিম : ২১৩৭]

স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা না রাখা। কারণ, রোজা নফল—আনুগত্য ফরজ।
# রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ নারীর জন্য স্বামীর উপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া রোজা রাখা বৈধ নয়। অনুরূপ ভাবে অনুমতি ব্যতীত তার ঘরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়াও বৈধ নয়। [বুখারী : ৪৭৬৯]

আল্লাহ আমাদের সকলের অধিকার রক্ষায় সহায়তা করুন আমিন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ