শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

তথ্য বহুল রচনায় হলো প্রবন্ধ। যেখানে কোন চরিত্র থাকবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

প্রবন্ধ হলো গদ্যে লিখিত এমন রচনা যা পাঠকের জ্ঞানতৃষ্নাকে পরিতৃপ্ত করে । প্রবন্ধে বিভিন্ন অজ্ঞাত তথ্যসমূহ থাকে যার ফলে পাঠক তা সহজেই জানতে পারে । আবার শুধুমাত্র তথ্য থাকলেই প্রবন্ধ হবেনা ।এতে থাকতে হবে সৃজনশীলতা । এক কথায় কল্পনা শক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগিয়ে লেখক যে নাতিদীর্ঘ সাহিত্য রূপ সৃষ্টি করেন তাই প্রবন্ধ ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
MethuParvez

Call

আমরা সকলেই অস্পষ্টভাবে ঝুকি ‘প্রবন্ধ’ কাকে বলে বা কী রকম। গদ্যে লিখিত এমন রচনা যার উদ্দেশ্য পাঠকের জ্ঞানতৃষ্ণাকে পরিতৃপ্ত করা। কোনো সন্দেহ নেই-এজাতীয় লেখায় তথ্যের প্রাধান্য থাকবে যার ফলে অজ্ঞাত তথ্যাদি পাঠক জানতে পারবে। ধরা যাক, সংবাদপত্রের যাবতীয় খবরাখবর-দেশের, বিদেশের, মহাকাশের ইত্যাদি। সবই গদ্য ভাষায় রচিত এবং যার লক্ষ্য পাঠকের অজানা বিষয় পাঠককে জানানো।

গদ্যসাহিত্যের অন্তর্গত হলেও তথ্যবহুল রচনা হলেই তাকে প্রবন্ধসাহিত্যের উদাহরণরূপে গণ্য করা চলবে না, যদি না লেখাটি সাহিত্য পদবাচ্য হয়। সাহিত্যের প্রধান লক্ষণ সৃজনশীলতা। লেখকের সৃজনীশক্তির কোনো পরিচয় যদি পরিস্ফূটিত না হয় তো তেমন কোনো লেখাকে প্রবন্ধসাহিত্যের লক্ষণযুক্ত বলা যাবে না। এ কারণে খবরের কাগজে প্রকাশিত সমস্ত লেখাই গদ্যে রচিত হলেও তাদের প্রবন্ধসাহিত্যের নমুনা হিসেবে বিবেচনা করা সঙ্গত নয়। তাহলে তো জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত সকল রচনাই প্রবন্ধসাহিত্য বলে গণ্য হতে পারত। তানা হওয়ার কারণ ঐ সৃজনশীলতার অভাব। মনে রাখা প্রয়োজন-সাহিত্যের যা চিরন্তন উদ্দেশ্য-সৌন্দর্যসৃষ্টি ও আনন্দদান প্রবন্ধের সেই একই উদ্দেশ্য। সাধারণত কল্পনাশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিকে আশ্রয় করে লেখক কোনো বিষয়বস্তু সম্পর্কে যে আত্মসচেতন নাতিদীর্ঘ সাহিত্যরূপ সৃষ্টি করেন তাকেই ‘প্রবন্ধ’ নামে অভিহিত করা হয়। প্রবন্ধের ভাষা ও দৈর্ঘ্য নানা রকম হতে পারে ঠিকই তবে তা গদ্যে ও নাতিদীর্ঘ আকারে লিখিত হয়।

প্রবন্ধের দুটি মুখ্য শ্রেণিবিভাগ আছে। যেমন :

১. তন্ময় (objective) প্রবন্ধ

২. মন্ময় (subjective) প্রবন্ধ

বিষয়বস্তুও প্রাধান্য স্বীকার করে যেসকল বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ লিখিত হয় সেসকলকে তন্ময় বা বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ বলে। এ ধরনের প্রবন্ধ কোনো সুনির্দিষ্ট সুচিন্তিত চৌহদ্দি বা সীমারেখার মধ্যে আদি, মধ্য ও অন্তসমন্বিত চিন্তাপ্রধান সৃষ্টি। এজাতীয় রচনায় লেখকের পাণ্ডিত্য, বুদ্ধি ও জ্ঞানের পরিচয়ই মুখ্য হয়ে দেখা দেয়। আরেক শ্রেণির রচনাও সম্ভব যেখানে লেখকের মেধাশক্তি অপেক্ষা ব্যক্তিহৃদয়ই প্রধান হয়ে ওঠে। এদের মন্ময় প্রবন্ধ বলে। রবীন্দ্রনাথের অধিকাংশ প্রবন্ধ এই পর্যায়ের। ফরাশি ভাষায় ‘বেল লেতর’ (belle letre) বলে একটি শব্দ আছে। ইংরেজিতেও ‘বেল লেতর’ই বলে। এর বাংলা নেই। বাংলায় বলা যেতে পারে চারুকথন। ‘বেল’ শব্দের অর্থ হলো সুন্দর ও চমৎকার। আর ‘লেতর’ অর্থ হলো letter /বর্ণ। ‘বেল লেতর’ মন্ময় প্রবন্ধের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। রবীন্দ্রনাথের ‘বিচিত্র প্রবন্ধ’ বইটির সকল রচনাই এজাতীয় মন্ময় প্রবন্ধের পর্যায়ভুক্ত। অনেকে এ ধরনের লেখাকে ‘ব্যক্তিগত প্রবন্ধ’ বলারও পক্ষপাতী। বাংলাভাষায় রচিত প্রবন্ধ সাহিত্য আয়তনে বিশাল এবং গুণগত মানে অতি উত্তম। রাজা রামমোহন রায় থেকে শুরু করে অদ্যাবধি তার প্রবহমাণতা কখনো ব্যাহত বা বাধাপ্রাপ্ত হয়নি।

‘রম্যরচনা’ নামে একটা কথা অনেক দিন যাবত ব্যক্তিগত প্রবন্ধ বোঝাতে ‘রম্যরচনা’ ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ ‘রম্যরচনা’ শব্দদ্বয়ের ‘রম্য’ শব্দের ভিতরে এমন ইঙ্গিত রয়ে যায় যে, লেখাটি সিরিয়াস বা গুরুগম্ভীর বিষয় নিয়ে নয় অথচ রম্যরচনার বিষয় খুবই গুরুগম্ভীর হতে পারে কিন্তু প্রকাশভঙ্গি ও ভাষা গুরুগম্ভীর হলে চলবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ