পানি চক্র প্রক্রিয়ায় পানি পৃথিবী থেকে যখন জলীয় বাষ্প আকারে আবহমণ্ডলে যায় তখন সেটা ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে শুরু করে। জলীয়বাষ্পের সমষ্টিকে মেঘ বলা হয়। যখন জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডা হয়ে পানি নিজের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে তখন সে মধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে মাটিতে নেমে আসে। অর্থাৎ বাষ্পীভবন প্রক্রিয়া থেকে ঘনীভবন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জলীয়বাষ্প বৃষ্টির পানিতে উৎপন্ন হয় এবং মাটিতে পতিত হয়।
বর্ষাকালে বৃষ্টি হয় সাধারণত বর্ষাকালে সূর্যের তাপ অনেক বেশি থাকে বলে পুকুর,নদ-নদীর পানি সেই তাপে বাষ্পীভুত হয় । আর তারপর শুরু হয় বাষ্পীভবন -> ঘনীভবন -> বৃষ্টি ।
একবার যদি সূর্যের তাপে পানি বাষ্পে পরিণত হতে পারে তবে এখানে মুটামুটি সূর্যের কাজ আর নেই বললেই চলে। কেননা ঘনীভনের ক্ষেত্রে সূর্যের তাপ দরকার নেই। তাই সূর্য থেকে আসা তাপে সাধারণত মেঘ গলে গিয়ে বৃষ্টিতে পরিনত হয় না।
মূখ্য বিষয় হলো ট্রপোস্ফিয়ারে থাকা জলীয়বাষ্পগুলো যত উপরে উঠতে থাকে, তাদের তাপমাত্রাও তত কমতে থাকে। কারণ ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমতে থাকে , কমতে কমতে এর তাপমাত্রা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছিতে যায়। যার কারণে সূর্যের তাপের প্রভাব খুব একটা পরে না। এবং যদি মেঘ অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে বরফ তৈরি করে তবে সেক্ষেত্রে সূর্যের তাপ নয় বং সে মেঘের প্লাবনতাকে ছেড়ে মাটিতে আসবে যাকে শীলা বৃষ্টি বলি। বরফের টুকরা নিচে আসার সময় যদি পরিবেশের তাপমাত্রা বেশি হয় (০ ডিগ্রির থেকে বেশী) তবে বরফ গলে পানিতে পরিণত হতে পারে। এই পরিবেশ মাটি না হয়ে বায়ুর কোন এক স্থানও হতে পারে। আবার মেঘের উপরের পৃষ্ঠে সূর্যের তাপ পতিত হয়ে তা বরফকে গলতে সাহায্য করে ফলে আরও দ্রুত বৃষ্টি হতে থাকে। কিন্তু সূর্যের তাপ উপরের হালকা স্তরে বাষ্প বা শিশিরাংক কে উত্তপ্ত করতে পারেনা কারন বিকিরন পদ্ধতিতে তাপ গ্যাসীয় মেঘ ভেদ করেই চলে যায়। সামান্য যেটুকু উত্তপ্ত করে তার চেয়ে বেশি তাপ মহাশুন্য শুষে নেয়। যার কারণে বরফ গলাটা সম্ভব হয় না।
প্রতিদিন সাধারণত সম্ভব নয় কারণ জলীয়বাষ্পের সম্পৃক্ত অবস্থা সৃষ্টি হতে সময় লাগে ।
সূর্যের তাপে প্রতিদিন মেঘ গলে বৃষ্টি হয় না কারনঃ
বৃষ্টিপাতের জন্য প্রথমেই দরকার পড়ে জলীয় বাষ্প। যা সূর্যের তাপে নদী ও সমুদ্র থেকে উষ্ণ হয়ে বায়ুমণ্ডলের সাথে মিশে ধীরে ধীরে উপরে ওঠে আসে এবং উষ্ণতর হতে থাকে ও সেই সাথে হালকা হতে থাকে। সেই জলীয় বাষ্প হালকা হওয়ার কারণে উপরে উঠে গিয়ে বাতাসের ধূলিকণা, বালুর কণা ইত্যাদির সহায়তায় জমাটবদ্ধ হয়ে তৈরি করে মেঘ। এভাবে মেঘের আকৃতি বড় হতে হতে যখন ভারি হয়ে যায়, তখন হয় বৃষ্টি।
পানি যখন সূর্যের তাপে বাষ্প হয়ে যায় তখন তাকে বলে জলীয়বাষ্প । এই জলীয়বাষ্প একীভূত হয়ে তৈরি করে মেঘ । মেঘ যখন ঠাণ্ডা হয়ে পানির ফোঁটায় পরিণত হয় তখন তা পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে বৃষ্টি হয়ে মাটিতে পড়ে । অর্থাৎ সূর্যের তাপে মেঘ গলে বৃষ্টি পড়ে না , বরং সেই মেঘ আরও হালকা হয়ে উপড়ে উড়ে যায় । কিন্তু বর্ষাকালে বায়ুমণ্ডলীয় তাপ , চাপ বিভিন্ন কারণে সেই মেঘ ঠাণ্ডা হয়ে বৃষ্টিতে পরিণত হয় ।
বৃষ্টি হয় শীতলীকরন প্রক্তিয়ায়। আর সূর্য করে ঠিক উলটা কাজটা, বাষ্পীভূত করন।
প্রথমত জানতে হবে মেঘ কী! আপনি হয়তো মনে করছেন মেঘ হচ্ছে বরফের মতো কঠিন পদার্থ যা আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। কিন্তু মেঘ আসলে তেমন কিছু না। আপনি ফ্রিজের পানি গ্লাসে রাখলে এর চারপাশে ধোঁয়া উড়তে দেখেছেন? সেটিই হচ্ছে মেঘ!
সূর্যের তাপে জলাশয়ের পানি বাষ্প হয়ে আকাশে উঠে যায় এবং পরে সেখানকার ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় এই বাষ্প ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি করে। এই মেঘ আরও ঘনীভূত হয়ে কালো মেঘ তৈরি হয় যা থেকে বৃষ্টি ঝরে। অর্থাৎ মেঘ গলে যে বৃষ্টি তৈরি হয় সে ধারণাটি ঠিক নয়।