ইসলামের দৃষ্টিতে কায়েসের(প্রশ্নে ভুল আছে নাবিল সাহেব হবে) দৃষ্টিভঙ্গি পরশ্রীকাতরতার পরিচায়ক। পরশ্রীকাতরতার অর্থ অন্যের উন্নতি ও সুভাগ্য দেখে ঈর্ষা প্রকাশ করা। অর্থাৎ কারো ধন-দৌলত, সম্মান, ভালো ফল বা উচ্চ মর্যাদা দেখে ঈর্ষান্বিত হওয়া এবং তার ধ্বংস কামনা করাকে পরশ্রীকাতরতা বলা হয়।উদ্দীপকে জনাব নকীব স্বীয় উদ্যোগে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য এলাকার কতিপয় বন্ধুদের নিয়ে প্রতি শুক্রবার রাস্তাঘাট মেরামত ও সংস্কার করেন। অন্যদিকে তার এক বন্ধু নাবিল তার এ কাজগুলোতে অংশ না নিয়ে বরং বলেন, নকীব সাহেব নেতা হওয়ার জন্য এসব করছেন। এই উক্তির মাধ্যমে নাবিল সাহেবের পরশ্রীকাতরতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। পরশ্রীকাতরতা একটি মারাত্মক মানসিক ব্যাধি। এ ব্যাধি বহু কারণে সৃষ্টি হয়। যেমন শত্রুতা, অহংকার, নিজের অসদুদ্দেশ্যে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা, নেতৃত্বের লোভ ইত্যাদি। এসব কারণে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রতি হিংসা বিদ্বেষ করে থাকে। ইসলাম এ কাজগুলো হারাম ঘোষণা করেছে। পরশ্রীকাতরতার অপকারিতা সীমাহীন। হযরত আদম(অা.)এর পদমর্যাদা দেখে ইবলিশ তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয় । ফলে সে অভিশপ্ত হয় এবং আল্লাহ তায়ালার দয়া থেকে বঞ্চিত হয়। পরশ্রীকাতরতা মানুষের পুণ্য কাজগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। এ সম্পর্কে মহানবী (স.) বলেছেন," আগুন যেমন শুকনা কাঠকে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয় পরশীকাতরতা তেমনই পুণ্যকে ধ্বংস করে দেয়। "(মুসনাদি শিহাব)
পরশ্রীকাতরতা মানুষের শান্তি বিনষ্ট করে। মনে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রাখে। পরশ্রীকাতর ব্যক্তি আল্লাহ এবং মানুষের কাছে ঘৃণিত। কেউ তাকে ভালোবাসে না। কেউ তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে না। সমাজের লোকেরা তাকে এড়িয়ে চলে। পরশ্রীকাতরতা সমাজে ঝগড়া-ফাসাদ, মারামারি ও অশান্তি সৃষ্টি করে। মানুষের মনে অহংকার সৃষ্টি করে। অহংকার মানুষের পতন ঘটায়। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে পরশ্রীকাতরতা থেকে বেঁচে থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। কুরআনে বর্ণিত হয়েছে," আর হিংসুকের(পরশ্রীকাতরতার) অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই যখন সে হিংসা করে। "(সূরা আল ফালাক, আয়াত ৫)
সুতরাং বলা যায়, নাবিল সাহেব একজন পরশ্রীকাতর ব্যক্তি।
(রেফারেন্স: অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্য বই ইসলাম)