Waruf

Call

ইউরিয়া সার মূলত উদ্ভিদের নাইট্রোজেন পুষ্টি সরবরাহ করে।

ইউরিয়া সারের গঠনে নাইট্রোজেন যৌগ এমোনিয়া বিদ্যমান।

এই এমোনিয়াই মুলত নাইট্রোজেন সরবরাহ করে। এদিক থেকে ইউরিয়া সার পাউডার হোক বা গুটি হোক বা দানা হোক যাই হোকনা কেন তা একই পরিমান নাইট্রোজেন সরবরাহ করে। তবুই ইউরিয়া নাইট্রোজেন সরবরাহ করে কয়েকটি ধাপে।

ইউরিয়া চিরস্থায়ী কোন যৌগ নয়। এটি এমোনিয়াম সায়ানেটের পূনর্বিন্যাস যৌগ, তাই ইউরিয়া সহজে বাতাসে ভেঙ্গ এমোনিয়া পৃথক হয়ে যেতে থাকে। একারনে কারখানায় উৎপাদিত দানাদার ইউরিয়া জমিতে প্রয়োগ করলে তা দ্রুত বাতাসে বিয়োজিত হয়ে যায়। ফলে উদ্ভিদ যথেষ্ট পরিমান নাইট্রোজেন গ্রহন করার পূর্বেই সার বাতাসে উদ্বায়ী এমোনিয়া ছেড়ে অপচয় হয়ে যায়। 

কিন্তু ইউরিয়া যদি ছোট ছোট দানার পরিবর্তে অনেকটা বড় গুটি তৈরি করে ব্যবহার হয় তাহলে তা দ্রুত বাতাসে মিশতে পারেনা।

আমরা জানি ছোট কিছু দানা বা টুকরা ভিন্ন ভিন্ন তল সৃষ্টি করে ফলে মোট তল বা পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল বেড়ে যায়। আর তাই তা দ্রুত বিয়োজিত হতে পারে, কিন্তু সবগুলো দানা দিয়া একটি গুটি বানালে তল বা পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল কমে যাওয়ায় তা দ্রুত গলে বিয়োজিত হতে পারেনা। যেমন শক্ত চকলেট চুষে খেলে অনেক সময় লাগে, কিন্তু চিবিয়ে গুড়া করে দিলে দু মিনিটে গলে যায়। ঠিক এভাবেই গুটি ইউরিয়া দ্রুত বাতাসে বিয়োজিত হয়না। ফলে এটি মাটিতে উপস্থিত পানির সাথে মিশতে যথেষ্ট সময় পায়। এই সময়ে বিয়োজিত এমোনিয়া পানিতে দ্রবীভূত হয়ে এমোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড গঠন করে যা বাতাসে মেশেনা। একই সাথে উদ্ভিদ এটি শোষন করার যেমন যথেষ্ঠ সময় পায়, অন্য দিকে দ্রবীভূত পানির সাথেও সহজে গ্রহন করে নাইট্রোজেন পুষ্টির চাহিদা সহজে পুরন করতে পারে। এই কারনে উদ্ভিদ দ্রুত বড় হয়ে বর্ধিত ফলন দেয়। এজন্য দানা ইউরিয়ার পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার সাশ্রয়ী এবং ফলনও বেশি।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Jobedali

Call

দানাদার ইউরিয়ার পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার সুবিধাজনক কারণঃ

দানাদার ইউরিয়াকে গুটি ইউরিয়ায় রূপান্তর করার কারণ এতে ইউরিয়ার সাশ্রয় হয়।দানাদার ইউরিয়া দ্রুত গলে গাছের শিকড় অঞ্চলের বাইরে মাটির নিচে চলে যায়।এতে সারের অপচয় হয়।অপরদিকে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করে ২০-৩০ ভাগ নাইট্রোজেন সাশ্রয় করা যায়।ফলে সারের অপচয় রোধ হয়।
গুটি ইউরিয়া কোনো নতুন সার নয়। এটি গুঁড়া ইউরিয়া সারেরই রূপান্তর। বাংলাদেশেই উদ্ভাবিত একটি মেশিনের (ব্রিকেট মেশিন) মাধ্যমে গুটি ইউরিয়া সহজেই তৈরি করা যায়। বর্তমানে বাংলাদেশে দুই সাইজের গুটি ইউরিয়া তৈরি করা হয়। আউশ ও আমন মৌসুমের জন্য ১.৮ গ্রাম এবং বোরো মৌসুমের জন্য ২.৭ গ্রাম ওজনের গুটি। গুটি ইউরিয়ায় গুঁড়া ইউরিয়ার মতোই ৪৬ ভাগ নাইট্রোজেন বিদ্যমান। 
গুটি ইউরিয়া ব্যবহার কেন লাভজনক : গুটি ইউরিয়া বাজারে প্রচলিত গুঁড়া ইউরিয়ার তুলনায় অনেক বেশি লাভজনক। কারণ গুটি ইউরিয়া ব্যবহারে ধানের ফলন ১৫-২৫% বৃদ্ধি পায়, ইউরিয়া সার তিন ভাগের এক ভাগ লাগে তথা ২০-২৫% খরচ সাশ্রয় হয় এবং আগাছা দমনের খরচ ৩০-৫০% ভাগ কমে যায়। এক হেক্টর জমিতে গুটি ইউরিয়া ব্যবহারে ধানের ফলন অন্তত ১০০০ কেজি বাড়ে। অর্থাৎ কৃষক অতিরিক্ত ফলনের মাধ্যমে বাড়তি ১৫০০০ টাকা (প্রতি কেজি ধান ১৫ টাকা করে) আয় করতে পারবে।
গুটি ইউরিয়া প্রতি হেক্টরে আউশ আমন ধানে মাত্র ১১২ কেজি এবং উফশী বোরো ধানে ১৭০ কেজি প্রয়োগ করতে হয়। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ফার্টিলাইজার গাইড ২০১২ অনুযায়ী গুঁড়া ইউরিয়া আউশ ও আমন ধানে অন্তত প্রতি হেক্টরে গড়ে ২০০ কেজি ও বোরো ধানে ৪৩৪ কেজি প্রয়োগ করতে হয়। বোরো ধানে যদি ৪০০ কেজি গুঁড়া ইউরিয়াও প্রয়োগ করা হয় তাহলে কৃষকের খরচ পড়বে ৬৪০০ টাকা (প্রতি কেজি ১৬ টাকা করে) অথচ গুটি ইউরিয়া ১৭০ কেজি প্রদানে খরচ পড়ে মাত্র ৩০৬০ টাকা (প্রতি কেজি ১৮ টাকা করে)। অতএব, গুটি ইউরিয়া ব্যবহারে হেক্টরপ্রতি সাশ্রয় হয় ৩৩৪০ টাকা।
গুটি ইউরিয়ার উপকারিতা : গুটি ইউরিয়া ব্যবহারের উপকারিতা অনেক। গুটি ইউরিয়া একবার প্রয়োগ করলেই চলে, ধান পাকা পর্যন্ত আর প্রয়োগ করতে হয় না। গুটি ইউরিয়া ব্যবহৃত জমিতে ঘাস বা আগাছা কম হয়। খড়ে পুষ্টিমান বেশি থাকে। পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের উপদ্রব কম হয়। গুটি ইউরিয়া গুঁড়া ইউরিয়ার মতো তিনভাবে অপচয় হয় না। অর্থাৎ বাতাসে উবে যায় না, মাটির গভীরে চুইয়ে অপচয় হয় না এবং পানির সাথে বিলে বা নদী-নালায় চলে যায় না। ফলে পরিবেশ ভালো থাকে। সার কম লাগে বিধায় ভরা মৌসুমে সারের অভাব থাকে না। ইউরিয়া সার ২০-২৫% কম লাগে এবং ধানের ফলন ১৫-২৫% বৃদ্ধি পায়। কৃষক লাভবান হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ