শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

গরমকালে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। ঠিকভাবে পানি ও লবণ পূরণ করা হলে এটি কখনো গুরুতর আকার ধারণ করে না।  বেশির ভাগ ডায়রিয়া এমনিতেই সেরে যায়।  কিন্তু ডায়রিয়া হলে ওরস্যালাইন, খাওয়া এমনকি এর চিকিৎসা নিয়ে এখনো রয়ে গেছে কিছু ভুল ধারণা—

১. যাদের উচ্চ রক্তচাপ, তারা ওরস্যালাইন খেতে পারবেন কিনা? উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন রোগীরা ডায়রিয়ার আক্রান্ত হলে ওরস্যালাইন খেতে বিভ্রান্তিতে ভোগেন। কেননা স্যালাইনে লবণ আছে, তাদের আশঙ্কা ওরস্যালাইন খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে।  এটি গুরুতর ভুল ধারণা। প্রতিবার পাতলা পায়খানার সঙ্গে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণ বের হয়ে যায় এবং তা যথাযথভাবে পূরণ করা না হলে রোগীর পানিশূন্যতা, লবণশূন্যতা এমনকি রক্তচাপ কমে গিয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করে মৃত্যুও হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে ওরস্যালাইন খেতে নিষেধ নেই। 

২. ডায়াবেটিসের রোগীরা কি ওরস্যালাইন খেতে পারবেন না? ওরস্যালাইনে চিনি বা গ্লুকোজ থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীরা ওরস্যালাইন খেতে ভয় পান, মনে করেন, ওরস্যালাইন খেলে ডায়াবেটিস বাড়তে পারে।  কিন্তু মনে রাখতে হবে, ওরস্যালাইনে যে সামান্য চিনি বা গ্লুকোজ আছে, তা অন্ত্রে লবণ শোষণের কাজে ব্যয়িত হয়। সুতরাং ডায়রিয়ার সময় ডায়াবেটিস রোগীরা নির্দ্বিধায় ওরস্যালাইন খেতে পারবেন।

৩. কিডনি রোগীরা কি ডায়রিয়া হলেও মেপে পানি খাবেন? যারা কিডনির জটিলতায় ভোগেন তারা অনেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, কারণ স্বাভাবিকভাবে তাদের নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি মেপে খেতে বলা হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ডায়রিয়ার অধিক পরিমাণ পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, ফলে পানিশূন্যতার ফলে কিডনি রোগ আরও বাড়তে পারে।  সুতরাং প্রয়োজনে অতিরিক্ত তরল গ্রহণ করতে হবে।

৪. ডায়রিয়ার রোগীরা কি স্বাভাবিক খাবার খাবেন? অনেকেই বিভ্রান্তিতে ভোগেন, ডায়রিয়া হলে স্বাভাবিক খাবার খেতে পারবেন কিনা। আসলে ঘরে তৈরি পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত সব ধরনের স্বাভাবিক খাবারই খেতে মানা নেই। ভাত, মাছ, সবজি ইত্যাদি স্বাভাবিক ও সহজপাচ্য খাবার খেতে কোনো বাধা নেই। স্তন্যপানরত শিশুরা কোনো অবস্থাতেই বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করবে না।

৫. সারা দিনে এক প্যাকেট স্যালাইন খেলেই চলবে? স্যালাইন কতটুকু খেতে হবে তা নির্ভর করবে কতবার পাতলা পায়খানা হচ্ছে বা কতটুকু পানি হারাচ্ছেন তার ওপর। ডায়রিয়ার কারণে একজন মানুষ মাত্র কয়েক ঘণ্টায় এক দেড় লিটারের বেশি পানি হারাতে পারেন। সবচেয়ে সহজ হিসাব হলো প্রতিবার পায়খানা হওয়ার পর স্যালাইন খাওয়া এবং অল্প অল্প করে সারা দিন বার বার খাওয়া। এর বাইরে সারা দিন পানি ও তরল খাবার যেমন সুপ, ডাবের পানি ইত্যাদি খেতে হবে।

৬.  অনেক সময় ফুড পয়জনিংয়ের কারণে বমি বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে। মানুষ স্বভাবতই ফার্মেসি থেকে বমি বা পাতলা পায়খানা দ্রুত বন্ধের জন্য ওষুধ খান, যা একেবারেই ঠিক নয়। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ খাওয়া ঠিক হবে না, কারণ পয়জনিংয়ের ক্ষেত্রে বরং কিছু সময় বমি ও পাতলা পায়খানার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ পয়জন বের হয়ে যায়।

৭. অ্যান্টিবায়োটিক কি জরুরি? সব ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক জরুরি নয়। প্রয়োজন হলো, দেহের লবণ ও পানিশূন্যতা পূরণ।  দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যেতে পারে। 

৮. অনেকে শিরায় স্যালাইন নিতে ভয় পান। কিন্তু ডায়রিয়ায় মাত্রা যদি তীব্র হয় তাহলে শুধু মুখে স্যালাইন পান করে শরীরে সৃষ্ট পানিশূন্যতা পূরণ করা সম্ভব না।  তাই প্রয়োজনে শিরায় স্যালাইন নিতে হবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

হ্যাঁ অবশ্যই ডায়রিয়া হলে মানুষ মারা যেতে পারে বা মারা যায়। বলতে পারেন ডায়রিয়া একটি প্রাণঘাতী রোগ৷ যদি একটু ভুল করে ফেলেন তাহলে এক জন মানুষ এর মৃত্য পর্যন্ত হতে পারে। আসুন ডায়রিয়া /Diarrhoea সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিয়ঃ কিভাবে বুঝবেন ডায়রিয়ে /Diarrhoea হয়েছে ঃ ১ দিনে যদি ৩ বার পাতলা,পানি যুক্ত পায়খানা হয়। তাহলে বুঝতে হবে ডায়রিয়া /Diarrhoea হয়েছে। ডায়রিয়া হওয়ার কারণ সমূহ ঃ ডায়রিয়া মূলত ২ টা কারণে হয় ১.Infective Cause. 2.Non-infective cause. Infective Cause কে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথাঃ ১.Virul /ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। ২.Bacterial/ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। যে যে Virus/ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেঃ 1. Rota virus(বাচ্চা রা বেশি আক্রান্ত হয়। কারণ তারা প্রায় সব কিছু মুখে দেয়।) 2.Astro virus 3.Adeni virus এই ৩ টা ভাইরাস দ্বারা মানুষ বেশি ডায়রিয়া তে আক্রান্ত হয় বা হয়ে থাকে। যে যে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেঃ 1.E.coli 2.shigella. 3.Vibrio Cholerae(কলেরা সংক্রমণ ঘটায়) Non-Infective ডায়ারিয়া কে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে ঃ ১.Acute Diarrhoea ২.Chronic Diarrhoea Acute Diarrhoea যে যে কারণে হয় ঃ ১.Food poisoning ২.Drug Antibiotics ( ভুল/অতিরিক্ত Antibiotics ওষুধ খেলে ডায়রিয়া হয়ে থাকে) Chronic Diarrhoea যে যে কারণে হয়ে থাকে ঃ ১.Intestinal disease ২.Mal absorption ইত্যাদি ইত্যাদি কারণ গুলার জন্য ডায়রিয়া হয়ে থাকে। তাই আমাদের উক্ত বিষয় গুলাতে সতর্ক থাকতে হবে বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে। ডায়রিয়া লক্ষণ সমূহ ঃ ১. তরল,পানি যুক্ত পায়খানা হবে। ২.পায়খার সাথে মিউকাস/ আমাশয় & রক্ত পড়তে পারে। ৩. বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে। ৪.Electrolyte লস হবে যার গলে রোগী দূর্বল হয়ে পড়বে। ৫. Electrolyte লস হওয়ার ফলে রোগী নেতিয়ে পড়বে। ৬.ডিহাইডেশন( পানি শুন্যতা) এটা মূলত ডায়রিয়া রোগী মারা যাওয়া মূল কারণ। বার বার পায়খানা ও বমি হওয়ার গলে পানি শুন্যতা দেখা দেয়। যে কারণে ডায়রিয়া হলে খুব সতর্ক থাকতে হবে যাতে রোগী ল্যাথার্জিক/ নেতিয়ে পড়া না পড়ে। অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না। ফলে রোগী ডিহাইড্রেশন( পানি শুন্য হয়ে যায়।এটা আমরা সহজে বুঝতে পারি না। আমরা অনেকে না বুঝে ডায়রিয়া রোগী কে বাড়িতে রেখে দিয়৷ কিন্ত আমাদের ডায়রিয়া রোগ সম্পর্কে কোন ধারণ নাই। ডিহাইড্রেশন হয়েছে এটা সহজে বোঝা যায় না। তাই আমরা বুঝতে না পেরে ভুল করে ফেলি। এই ভুলের জন্য রোগী মারা যায়। তাই ডায়রিয়া দেখা দিলে দ্রুত নিকট তম হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। & বাড়িতে প্রচুর পরিমাণে খাবার সেলাইন খেতে দিবেন। ORS( oral redydration salts) বা ওর সেলাইন খেতে দিবেন। ডাবের পানি,চিড়া ভেজা,গুড়ের শরবত খেতে দিবেন। আপনার একটু সতর্ক পারে এক জনের জীবন বাঁচাতে। ধন্যবাদ। সুস্থ থাকু,সুস্থ রাখুন। এটা সসম্পূর্ণ আমার নিজের লেখা এই প্রথম নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখার চেষ্টা করেছি। যদি কোন ভূল হয় তাহলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দয়া করে। রাখী ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সাইন্স & মিডওয়াইফারি। ২য় বর্ষ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ