কি করলে আল্লাহ আমার পাপ দুনিয়া ও আখিরাতে গোপন রাখবেন?
মুসলিম শরিফে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে বান্দা অন্য বান্দার দোষ-ত্রুটি এ পার্থিব জীবনে গোপন রাখবে, আল্লাহতায়ালা কিয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন।’
বুখারি ও মুসলিমের অন্য জায়গায় অন্য একটি হাদিস এসেছে। হাদিসটি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘আমার সব উম্মতের গুনাহ মাফ হবে। কিন্তু দোষ-ত্রুটি প্রকাশকারীর গুনাহ মাফ হবে না। দোষ-ত্রুটি এভাবে প্রকাশ করা হয় : কোনো ব্যক্তি রাতের বেলা কোনো কাজ করবে। অতঃপর সকাল হবে। মহান আল্লাহ তার এ কাজ গোপন রাখবেন। সে (সকালবেলা) বলবে, হে অমুক! আমি গত রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে রাতযাপন করেছিল এমন অবস্থায় যে মহান আল্লাহ তার কাজগুলো গোপন রেখেছিলেন আর সকালবেলা আল্লাহর এই আড়ালকে সে সরিয়ে দিল।’
অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তিকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ধরে নিয়ে আসা হলো। সে শরাব পান করেছিল। তিনি হুকুম দিলেন, তাকে মারধর কর। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ তাকে হাত দিয়ে, কেউ তাকে জুতা দিয়ে এবং কেউ কাপড় দিয়ে মারধর করল। যখন সে ফিরে গেল, কিছু লোক বলল, আল্লাহ তোমাকে অপদস্থ করেছেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এরূপ বলো না, শয়তানকে তার ওপর বিজয়ী করো না।(বুখারি)
উপরোল্লিখিত আয়াত ও হাদিসগুলো থেকে প্রমাণিত হলো যে, কোনো মুসলিম অন্য কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে বেড়াতে পারবে না। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নবুয়তি জিন্দেগিতে মানবজাতিকে আখলাক শিক্ষা দিয়েছেন। অপরাধ মার্জনার তালিম ও মানুষের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখার শিক্ষা দিয়েছেন।