আমরা অনেক সময় দেখি বিভিন্ন টাওয়ারের উপরে লাল (লাইট) বাতি সেটার কারন কি? এটাি দ্বারা কি বুঝানো হয়?
একটা টাওয়ার ভূমি থেকে ১০০-২০০ মিটার হয়। যা অনেক উচু। আকাশ দিয়ে যখন কোন প্লেন বা হেলিকাপ্টার উড়ে যায় তখন কোন কারনবশত অপেক্ষাকৃত নিচ দিয়ে যেতে হয়। নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় যদি টাওয়ারের সাথে সংঘর্ষ হয়, তাহলে বড় ধরনের বিপদের সম্ভবনা থাকে। লাল আলো অনেক দূর থেকে দেখা যায়। তাই সংকেত সরূপ লাল বাতি ব্যবহার করা হয়, যাতে অনেক দূর থেকে দেখে পাইলট সতর্ক হতে পারে।
আলো এক ধরনের শক্তি বা বাহ্যিক কারণ, যা চোখে প্রবেশ করে দর্শনের অনুভূতি জন্মায়। আলো বস্তুকে দৃশ্যমান করে, কিন্তু এটি নিজে অদৃশ্য। আমরা আলোকে দেখতে পাই না, কিন্তু আলোকিত বস্তুকে দেখি। আলো এক ধরনের বিকীর্ণ শক্তি।
লাল বা লোহিত একটি রঙ বা বর্ণ। দৃশ্যমান আলোর সবচেয়ে দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (প্রায় ৬২৫-৭৪০ ন্যানোমিটার) আলো চোখে আপতিত হলে যে রঙ দর্শনের অনুভূতি জন্মায়, তা-ই হলো লাল। তরঙ্গদৈর্ঘ্য এর চেয়ে বেশি হলে তাকে অবলোহিত রশ্মি বলে, মানুষের চোখ এতে সংবেদনশীল নয়। আরজিবি বর্ণ ব্যবস্থায় লাল একটি মৌলিক রঙ। এর পরিপূরক বর্ণ হলো সাইয়ান। সাধারণ বর্ণ চাকতিতে লালের পরিপূরক বর্ণ সবুজ। আরওয়াইবি বর্ণ ব্যবস্থায় লাল একটি বিয়োগান্তক মৌলিক রঙ, কিন্তু সিএমওয়াইকে বর্ণ ব্যবস্থায় নয়।
আলোর একটি ধর্ম হচ্ছে scattering বা বিক্ষেপণ। আলো তার যাত্রাপথে বায়ুর অনু বা ধূলোবালি দ্বারা বিক্ষেপিত হয় অর্থাৎ ছড়িয়ে পরে। আলো কিরকম বিক্ষেপিত হবে তা নির্ভর করে তার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের উপর।
scattering = ∞1λ4
অর্থাৎ যে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশী তার বিক্ষেপণ কম।
সূর্যের সাদা আলো যে সাতটি রংয়ের সমণ্বয়ে তৈরী (বে নী আ স হ ক লা) তার মধ্যে বেগুনী, নীল - এগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম এবং কমলা, লাল - এদের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশী। ফলে নীল আলোর scattering হবার প্রবণতা সবচেয়ে বেশী (তাই আকাশ নীল দেখায়) এবং লাল আলোর সবচেয়ে কম। তাই এটি বায়ুতে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে অর্থাৎ অনেক দূর পর্যন্ত একে দেখা যায়। লাল রং অনেক দূর থেকে সহজেই চোখে পড়ে। যার কারণে ট্রাফিক লাইটে বা বিপদজনক কিছু সংকেতে লাল আলো ব্যবহার করা হয়।
সঙ্গত কারণেই উঁচু কিছুতে (যেমন- মোবাইল টাওয়ার, কুলিং টাওয়ার) লাল রংয়ের সতর্কীকরণ বাতি জ্বালানো হয় যাতে করে বিমান, হেলিকপ্টার এগুলো যেন তা এড়িয়ে চলতে পারে।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে যে কুলিং টাওয়ার ব্যবহার করা হয় সেগুলোর উচ্চতা ১৫০ মিটারের অধিক হয়ে থাকে। তাই সতর্কতার জন্য সেগুলোতে ও লাল রং করা হয় অথবা লাল রংয়ের বাতি জ্বালানো থাকে।
এছাড়া একটা টাওয়ার ভূমি থেকে ১০০-২০০ মিটার হয় । যা অনেক উচু। আকাশ দিয়ে যখন কোন প্লেন বা হেলিকাপ্টার উড়ে যায় তখন কোন কারনবশত অপেক্ষাকৃত নিচ দিয়ে যেতে হয়। নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় যদি টাওয়ারের সাথে সংঘর্ষ হয়, তাহলে বড় ধরনের বিপদের সম্ভবনা থাকে। কিন্তু যদি ঐসকল টাওয়ারের রং লাল-সাদা হয় তাহলে উপর বা নিচ, যেকোন দিক থেকে টাওয়ার স্পষ্ট দেখা যায় । কেননা, আকাশের রং নীল। নীল রংয়ের বিপরীতে লাল এবং সাদা রং স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে।
এজন্যই সকল মোবাইল অপারেটরদের টাওয়ারের রং ও লাল এবং সাদা থাকে।
এজন্য টাওয়ারের উপরে লাল বাতি দেয়া হয়।
শুধু উপরে লাল বাতিই মূল কারণ না, আরো একটা বিষয় লক্ষ্য করা যায় টাওয়ার এর ক্ষেত্রে। আর সেটা হলো টাওয়ার গায়েও কিন্তু লাল আর সাদা রঙ এর সংমিশ্রণ দেখা যায় সব সময়।
এর কারণ হলো, যেন কোন বিমান/প্লেন সহজেই বুঝতে পারে যে, এখানে টাওয়ার আছে।
আর তাতে করে দুর্ঘটনা ঘটার কোন সম্ভাবনা থাকে না। কারণ আকাশের নীলের মধ্যে লাল আর সাদা রঙ টা ভাল ফুটে ওঠে।
দৃশ্যমান আলোর সবচেয়ে দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (প্রায় ৬২৫-৭৪০ ন্যানোমিটার) আলো চোখে আপতিত হলে যে রঙ দর্শনের অনুভূতি জন্মায়, তা-ই হলো লাল।
লাল রং বিপদের প্রতীক,লাল রং অনেক দূর হতে দেখা যায়.টাওয়ার এর উপর লাল বাতি লাগার কারণ হলো আকাশ যান উড়ার সময় যেনো পাইলট সহজে বুঝতে পারে এবং সতর্ক হতে পারে যাতে টাওয়ার থেকে দূরত্ব অবলম্বন করে চলে যায়৷