হাইড্রার ২ ভাবে জনন হয়। একটি যৌন জনন এবং অপরটি অযৌন জনন।
অযৌন জনন : হাইড্রার দেহের মধ্যাংশ বা নিম্নাংশের বহিঃত্বকীয় ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ বিভাজিত হয়ে স্ফীত অংশের সৃষ্টি হয়। ঐ স্ফীত অংশে মুকুলের সৃষ্টি হয়, এবং মুকুলে ক্রমশ মেসোগ্লিয়া, এপিডার্মিস ও সিলেন্টেরনের উৎপত্তি ঘটে। শিশু হাইড্রা পুষ্টি গ্রহণ করতে থাকে এবং তার মধ্যে হাইপোস্টোম, দেহকাণ্ড ও কর্ষিকার সৃষ্টি হয়। অতঃপর শিশু হাইড্রা ও মাতৃ হাইড্রার মাঝে বৃত্তাকার খাঁজের সৃষ্টি হয় ও খাঁজটি গভীর হয়। যার ফলে মা ও শিশু হাইড্রা আলাদা হয়ে যায় এবং শিশু হাইড্রা পদচাকতিসম্পন্ন হয়ে স্বাধীন জীবনযাপন করে।
যৌন জনন : হাইড্রার উপরের অর্ধাংশের ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ বিভাজিত হয়ে মোচাকৃতির শুক্রাশয় গঠন করে। যার শীর্ষে থাকে নিপল ও মধ্যে থাকে শুক্রাণু। ইন্টারস্টিসিয়াল কোষের বিভাজনে স্পার্মাটোগোনিয়া, স্পার্মাটোগোনিয়া থেকে স্পার্মাটোসাইট, স্পার্মাটোসাইট থেকে স্পার্মাটিড এবং স্পার্মাটিড থেকে স্পার্ম সৃষ্টি হয়। একটি পরিণত স্পার্মে মস্তক, মধ্যখণ্ড ও লেজ থাকে।
এর নিচের অর্ধাংশের ইন্টারস্টিসিয়াল কোষ হতে উওগোনিয়া, উওগোনিয়া থেকে উওসাইট, উওসাইট থেকে উওটিড আর উওটিড থেকে ডিম্বাণু ও তিনটি পোলার ফসফেট বডি সৃষ্টি হয়। পোলার বডিগুলো পরে বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং ডিম্বাণুর চারদিকে জেলাটিনের আবরণ দেখা যায়।
সদ্যসৃষ্ট ডিম্বাণু ঝাঁকে ঝাঁকে শুক্রাণু কর্তৃক পরিবেষ্টিত হয়। এদের যেকোনো একটির সাথে ডিম্বাণু সৃষ্টির ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিক্ত হয়ে জাইগোট গঠন করে।
আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে- একই দেহে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর সৃষ্টি হলে তার দেহে স্বনিষেক ঘটে কিনা ? না, উভলিঙ্গ হাইড্রার দেহে অন্তঃ নিষেক হয় না । কারণ , একই সময়ে এদের উৎপত্তি হয় না ।