ধন্যবাদ আপনাকে

ইসলামের দৃষ্টিতে ছেলে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করতে পারে। এই স্বাধীনতা মহান আল্লাহ তায়লা আমাদের দিয়াছেন।
বিয়ে মুসলমানদের জন্য ফরজ। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর তোমরা তোমাদের মধ্যে অবিবাহিত নারী-পুরুষদের বিবাহ দাও।” [সূরা নূর, ২৪:৩২]
লুকিয়ে বিয়ে করার বিষয়ে মহানবী (সা.) স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:“যে নারী তার অভিভাবকের (বাবা-মা কিংবা বড়ভাই এক কথায় অবিভাবক) অনুমতি ছাড়া বিয়ে করবে তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল।” [হাদিসটি তিরমিযি (১০২১) ও অন্যান্য গ্রন্থকার কর্তৃক সংকলিত এবং হাদিসটি সহীহ]
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর এই ব্যাখ্যায় স্পষ্টই প্রমানিত যে, বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের বিনা অনুমতিতে পালিয়ে বিয়ে করাকে ইসলাম সমর্থৃন করে না। নবীজী (সা.) এই রূপ বিয়েকে সরাসরি বাতিল বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন। সুতরাং যে কাজ আল্লাহর রাসুল করতে নিষেধ করেছেন সেই কাজ থেকে আমরা সবাই বিরত থাকব ইন-শা-আল্লাহ।
আপনি আশা করছি আপনি আপনার জবাব পেয়েছেন।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

হাদিস অনুসারে পাত্রীর অভিবাককের উপস্থিতি বা অনুমোতি ছাড়া বিয়ে বৈধ নয়।

প্রচলিত আইনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র-পাত্রীর সম্মতিতে দুইজন স্বাক্ষীর সামনে অনুমোদিত কাজী বিয়ে পরালেই সেটা বৈধ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

বইঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), অধ্যায়ঃ ১১/ বিবাহ, হাদিস নম্বরঃ ১১০২

 

 

ওলী ছাড়া বিয়ে হয় না। 

১১০২. ইবনু আবী উমার (রহঃ) .... আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ্ বলেছেন, যে কোন মহিলা তার ওলীর অনুমতি ব্যতিরেকে বিয়ে করবে তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল। যদি এরপর স্বামী-তার সাথে সঙ্গত হয় তবে স্ত্রী মহরানার হকদার হবে। যেহেতু তার স্বামী তার লজ্জাস্থানকে হালাল মনে করে ভোগ করেছে। ওলীরা দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলে, শাসকই ওলী হবে, যার ওলী নেই। - ইরওয়া ১৮৪০, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১০২ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাঈদ আনসারী, ইয়াহ্ইয়া ইবনু আয়্যূব ও সুফইয়ান ছাওরী প্রমুখ হাফিজিুল হাদীস ইবনু জুরায়জ থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবূ মূসা বর্ণিত হাদীসটির (১১০২ নং) সনদে বর্ণনা বিরোধ রয়েছে। ইসরাঈল শরীক ইবনু আবদুল্লাহ, আবূ আওয়ানা, যুহায়র ইবনু মুআবিয়া, কায়স ইবনু রাবী (রহঃ) এটিকে আবূ ইসহাক- আবূ বুরদা- আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। আসবাত ইবনু মুহাম্মাদ ও যায়দ ইবনু হুবাব (রহঃ) এটিকে ইঊনুস ইবনু আবূ ইসহাক- আবূ বুরদা- আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

আবূ উবায়দা হাদ্দাদ (রহঃ) এটিকে ইঊনুস ইবনু আবূ ইসহাক- আবূ বুরদা- আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এতে আবূ ইসহাক (রহঃ)-এর উল্লেখ করেন নি। ইঊনুস ইবনু আবূ ইসহাক- আবূ বুরদা- আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা আছে। শু‘বা, ছাওরী (রহঃ) আবূ ইসহাক আবূ বুরদা (রহঃ) সুত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে, ওলী ছাড়া বিবাহ হয় না। সুফইয়ান (রহঃ)-এর কতক শাগরীদ এটিকে সুফইয়ান- আবূ ইসহাক- আবূ বুরদা- আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তা সহীহ্ নয়।

আমার মতে আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে যারা আবূ বুরদা- আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে রিওয়ায়াত করেছেন যে, ওলী ছাড়া বিবাহ হয় না।’ তাদের রিওয়ায়াতটি অধিকতর সহীহ। কেননা, তাঁরা আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে এটিকে বিভিন্ন সময়ে শূনেছেন। যদিও শু’বা ও ছাওরী অধিকতর স্মরণশক্তি সম্পন্ন এবং অধিকতর নির্ভরযোগ্য যারা এ হাদীসটি আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে রিওয়ায়ত করেছেন তাদের তুলনায়, তবে তাঁদের সকলের রিওয়ায়াতই আমার মতে অধিকতর সহীহ ও পরস্পর সমঞ্জস্যপূর্ণ। শুবা এবং ছাওরী (রহঃ) উভয়েই এই হাদীসটি আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে এক মজলিসে শুনেছেন। মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ)-এর রিওয়াতে এর প্রমাণ রয়েছে। মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) বলেন, আবূ দাউদ বলেছেন যে, শু’বা (রহঃ) বলেছেন, আমি সুফইয়ান ছাওরী কর্তৃক আবূ ইসহাক (রহঃ)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, আপনি কি আবূ বুরদা রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে বলতে শুনেছেন যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ওলী ছাড়া বিবাহ হয় না? তিনি তখন বললেন, হ্যাঁ। সুতরাং এই রিওয়ায়াতটি প্রমাণ করে যে, শু’বা ও ছাওরী (রহঃ) এই হাদীসটি একই সময়ে শুনেছেন।

রাবী ইসরাঈল (রহঃ) আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে রিওয়াতের ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য। মুহাম্মাদ ইবনু মুছান্না (রহঃ) বলেন যে, আবদুর রহমান ইবনু মাহদী (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, ইসরাঈল (রহঃ)-এর উপর যখন থেকে নির্ভর করেছি তখন থেকেই আবূ ইসহাক (রহঃ) থেকে বর্ণিত ছাওরীর রিওয়ায়াত সমূহ আমার ছুটে গেছে। কারণ, ইসরাঈল (রহঃ) আবূ ইসহাক (রহঃ) এর রিওয়ায়াত পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা করতেন। ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেন, এই বিষয়ে আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘‘ওলী ব্যতীরেকে বিবাহ হয় না।’’ এই হাদীসটি হাসান। ইবনু জুরায়জ এটিকে সুলায়মান ইবনু মূসা- যুহরী- উরওয়া আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
নিম্নের লেখাটি পাঠ করা যেতে পারে :

যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। এতে অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক। সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়া মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে গেছে। যদিও আপনাদের পরিবার কিছুই জানে না। কিংবা যদি তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১} 2469

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। কুমারী মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমার অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে, তখন রাসূল সাঃ সে মেয়েকে অধিকার দিলেন, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে রাখতেও পারে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৬, সুনানুল কুবরা নাসায়ী, হাদীস নং-৫৩৬৬, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৬৬}

হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা নবীজী সাঃ এর কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমাকে তার ভাতিজার কাছে বিয়ে দিয়েছে, যাতে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাবী বলেন, তখন রাসূল সাঃ বিষয়টি মেয়ের ইখতিয়ারের উপর ন্যস্ত করেন, অর্থাৎ ইচ্ছে করলে বিয়ে রাখতেও পারবে, ইচ্ছে করলে ভেঙ্গেও দিতে পারবে। তখন মহিলাটি বললেন, আমার পিতা যা করেছেন, তা আমি মেনে নিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল, মেয়েরা যেন জেনে নেয় যে, বিয়ের ব্যাপারে পিতাদের চূড়ান্ত মতের অধিকার নেই {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৪, মুসনাদে ইসহাক বিন রাহুয়াহ, হাদীস নং-১৩৫৯, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৩৫৫৫}

উল্লেখিত হাদীস ছাড়াও আরো এমন অনেক হাদীস রয়েছে, যা স্পষ্ট ভাষায় প্রমাণ করে যে, বিয়ের ক্ষেত্রে অভিভাবক নয়, প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে পিতা বা অভিভাবকের হস্তক্ষেপের অধিকার নেই। সুতরাং প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করে নিলে তা সম্পন্ন হয়ে যাবে। বিপরীতমুখী হাদীসের জবাব কি? যে সকল হাদীস দ্বারা একথা বুঝা যায় যে, অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সম্পন্ন হয় না, সেগুলোর অনেকগুলো জবাব মুহাদ্দিসীনে কেরাম ও ফুক্বাহায়ে কেরাম দিয়েছেন। প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি আমরা দেখে নেই, তাহলে উত্তর দিতে সুবিধা হবে , হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে মহিলাকে তার অভিভাবক বিয়ে দেয়নি, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল। এরপর স্বামী যদি তার তার সাথে মিলামিশা করে তবে সে মহরের অধিকারী হবে স্বামী তার সাথে [হালাল পদ্ধতিতে] মেলামেশা করার কারণে। আর যদি তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে যার অভিভাবক নেই, বাদশাই তার অভিভাবক বলে বিবেচিত হবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৮৭৯, সুনানে তিরামিজী, হাদীস নং-১১০২, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৮৭৯} হাদীসটির বিষয়ে মন্তব্য ইমাম বুখারী রহঃ বলেন, হাদীসটি মুনকার। {আলইলালুল কাবীর-২৫৭} ইমাম তিরমিজী রহঃ বলেন, হাসান। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০২} ইমাম তাহাবী রহঃ বলেন, হাদীসটি ফাসিদ। {শরহু মাআনিল আসার-৩/৭} ইবনে কাত্তান রহঃ বলেন, হাদীসটি হাসান। {আলওয়াহমু ওয়ালইহামু-৪/৫৭৭}
জবাব নং ১ আমরা শক্তিশালিত্বের দিক থেকে আমাদের বর্ণিত হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ থেকে বর্ণিত হাদীসটির বিষয়ে ইমাম বুখারী রহঃ থেকে মুনকার হওয়ার এবং ইমাম তাহাবী রহঃ থেকে ফাসিদ হওয়ার কালাম রয়েছে। তাই আমরা এর উপর আমল করি না। পক্ষান্তরে আমাদের উপরে বর্ণিত সহীহ মুসলিম ও মুয়াত্তা মালিকের বর্ণনাটি সহীহ।
জবাব নং ২. যেমন প্রশ্নে উল্লেখিত অভিভাবক ছাড়া মহিলা কর্তৃক বিয়ে সম্পন্ন না হওয়ার হাদীসটি হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাঃ এর। অথচ খোদ আয়শা রাঃ তার ভাই আব্দুর রহমানের মেয়ে হাফসাকে তার অভিভাবক আব্দুর রহমানকে ছাড়াই নিজে বিয়ে দিয়েছিলেন মুনজির বিন যুবায়েরের সাথে। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-২০৪০, তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৪২৫৫, সুনানুস সাগীর লিলবায়হাকী, হাদীস নং-২৩৭৪, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৩৫২২, সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৩৬৫৩, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৫} সুতরাং বুঝা গেল যে, উক্ত হাদীস দ্বারা খোদ বর্ণনাকারী হযরত আয়শা রাঃ নিজেই বিবাহ শুদ্ধ হয় না একথা বুঝান নি। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, বিয়ে অসম্পূর্ণ হয় অভিভাবক ছাড়া। এছাড়া হাদিসটিকে যদি সহিহ হিসেবেও ধরে নেয়া হয় ওয়ালি পিতামিতা ছাড়া অন্য কেউ হতে পারবে না একথা বলার সুযোগ নেই। অর্থাৎ ওয়ালি ছাড়া বিয়ে হবে না সত্য কিন্তু ওয়ালি পিতামাতা হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তাহলে আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি কেউ যদি ভালবেসে ফেলে এবং বাবা মা যদি মেনে না নেয় তাহলে অন্য কাউকে অভিভাবক বানিয়ে বিয়ে করা সম্পূর্ণ জায়েজ। ইসলামে বিয়ে সঠিক হবার শর্ত হল ছেলে মেয়ের ইচ্ছা থাকতে হবে ও বিয়ের সাক্ষী থাকতে হবে। বিয়েতে পিতা মাতার অনুমতি আছে কিনা এটা দেখার বিষয় না। এই হাদীসটার ব্যাখ্যা হল বিয়েতে পিতা মাতার অনুমতি থাকা ভাল। কিন্তু বিয়েতে পিতা মাতার অনুমতি না থাকলেও বিয়ে হয়ে যাবে। কারণ বিয়ে সঠিক হবার ক্ষেত্রে ছেলে মেয়ের নিজ ইচ্ছা ও সাক্ষী লাগে। আর অনেকেরই তো পিতা মাতা বেঁচে নাই তাই বলে কি তারা আর কোনদিন বিয়ে করতে পারবে না। হযরত আয়েশা তার ভাতিজী কে তার ভাইয়ের অনুমতি ছাড়াই বিয়ে দিয়েছেন। শুধুমাত্র একটা হাদীসের উপর ভিত্তি করে ইসলামের কোন বিধিবিধান রচিত হয় না। বিবাহ সংক্রান্ত অন্যান্য হাদীসে পিতা মাতার অনুমতি থাকার কথা বলা নাই। অর্থ্যাৎ বিয়েতে পিতা মাতার অনুমতি থাকলে ভাল, উনাদের অনুমতি না থাকলেও বিয়ে হয়ে যাবে। সূরা নিসার ১৯ নম্বর আয়াতে মেয়েদের জোরপূর্বক উত্তরাধিকার গ্রহণ অবৈধ ঘোষনা করা হয়েছে। তো ঐ আয়াত দ্বারাই তো বুঝা যায় বিয়ে তালাকের ব্যাপারে মেয়েদের মতামতই হল চূড়ান্ত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ