আমি অনেক খারাপ ছেলে আমি কাওকে ভালোবাসতে পারি না।  আমাকে কিছু নিয়ম দিন যাতে আমি  খুব তারাতারি সব কিছু বুজতে পারি আমি একজন ভালো মনের মানুষ হতে পারি। প্লিজ যদি দয়া করে একটু হেল্প করতেন।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

জীবন চলার পথে, পথের চারপাশে বিচিত্র চরিত্রের বহু মানুষের সাথে সখ্যতা রেখে পথ চলতে হয়।এই চারপাশের মানুষগুলোর মধ্যে নিজ পরিবারের সদস্য, আত্বীয়, বন্ধু, পাশবাড়ি প্রতিবেশী, সহকর্মী এই ধরনের নিকট জনের সংখ্যাই বেশি।তাদের সবার সাথেই একটা সু- সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পারা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। কারন, হাতের পাঁচ আঙুল যেমন সমান নয় কিন্তু সাথে নিয়ে চলতে হয় ঠিক তেমনি চারপাশের এই প্রিয়জনরাও কিন্তু এক এক জন এক এক মন-মেজাজ- স্বভাবের। কেউ একটু বেশি রাগি, কেউ নরম স্বভাবের, কেউ ঝগড়াটে, কেউ জগড়া থেকে মুক্ত, কেউ বেশি কথা বলে, কেউ কম কথা বলে, কেউ স্বার্থপর, কেউ উদার প্রকৃতির সেবক, কেউ ধনী, কেউ গরীব। এই বিচিত্র চিত্রের স্বভাবগুলোর সাথে মানিয়ে চলা কিন্তু মুড়ির মোয়ার মতো সহজ কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন, সবার আগে নিজেকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। আমার মতো সমাজের চারপাশের এই বিচিত্র চিত্রের মানুষদের সাথে সখ্যতা বজায় রাখে চলতে নিজেকে ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার কোন বিকল্প নাই। একজন ভাল মানের ভালমানুষ নিজেকে গড়ে তুলতে যে গুনগুলো থাকা প্রয়োজন মনে হচ্ছে তা নিচে আলোচনা করার চেষ্টা করছি - ১. সত্য কথা বলা: ভাল মানুষ হবার জন্য সবার সাথেই সবসময় সত্য কথা বলাটাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন মনে হয়।মজা করে মিথ্যা বলা, ডিপ্লোমেটিক ওয়েতে সত্যকে আড়াল করেও মিথ্যা কথা না বলা। তাছাড়া, রাসূল (সা) বলেছেন, “তোমরা অবশ্যই সত্য কথা বলবে। কারন সত্য সদ্গুণের দিকে এবং সদ্গুণ জান্নাতের পথে চালিত করে। যে সর্বদা সত্য কথা বলে এবং সত্যকে গুরুত্ব দেয়, আল্লাহ্র নিকট তার নাম সত্যবাদীদের খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়। মিথ্যা থেকে দূরে থাকো। কারন মিথ্যা পাপের দিকে এবং পাপ জাহান্নামের আগুনের দিকে চালিত করে। যে অনবরত মিথ্যা বলে এবং মিথ্যা বলা ইচ্ছা রাখে, আল্লাহ্র নিকট তার নাম মিথ্যাবাদীদের খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়।” [মুসলিম; খণ্ড : ৩২, হাদীস : ৬৩০৯] ২.হাসিমুখে কথা বলা: "হাসি" এমনিতেই রোগের প্রতিশেধক হিসাবে কাজ করে। সবসময় হাসিখুশি থাকতে পারাও বিরাট ব্যাপার।আর একজন ভালমানুষ সবার সাথেই হাসিমুখে কথা বলবেন। অন্যর জন্য কিছু করতে না পারলে অত্যন্ত হাসিমুখে কথা তো বলা যায়, তাইনা? ৩.উপকার করা: পেশি শক্তি/আর্থিক সামর্থ্য থাকলে স্বাধ্য মতো নিকট জনদের কম-বেশি নি:স্বার্থ উপকার করা।কোন প্রকার উপকার করতে না পারলেও নিদেন পক্ষে কোন প্রকার ক্ষতি না করা।উপকার করার এই মহৎ গুনটা ছিল নবী সা: এর গুনগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। ৪.ক্ষমা করা: পৃথিবীতে সবচাইতে কঠিন ও সবচাইতে সহজ এই উভয় গুনে গুনান্বিত কাজের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্ষমা করতে পারা। একজন ভাল লোকের কাছে ক্ষমা করে দেওয়াটা যতটা সহজ ঠিক ততটাই কঠিন একজন আত্বঅহংকারীর কাছে। ৫.হিংসা-বিদ্বেষ-লোভ ত্যাগ: পার্থিব জীবনে এগুলো আমাদের আষ্টে-পিষ্টে আছে। হিংসা-বিদ্বেষ-লোভ থেকে মুক্ত থাকা অনেক কঠিন একটা কাজ। এগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারলে ভাল মানুষ হবার গ্যারান্টি দেওয়া যেতে পারে। ৬. হক আদায় করা: আপনার প্রতি চারপাশের মানুষগুলো যেমন: পিতা- মাতা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই-বোন, মামা-ফুপু, বন্ধু-প্রতিবেশি ইত্যাদি যার যে হক আছে তা আদায় করা।কারো হক আদায় করার সামর্থ্য না থাকলে আন্তরিক ভাবে বুঝিয়ে বলা প্রয়োজনে নিজের ব্যার্থতার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেওয়া। ৭.অতীত ভুলে সামনে চলা: চলার পথে প্রিয়জনদের সাথে ঝগড়া,খুঁনসুটি,তর্ক,বিবেধ, অমিল হতেই পারে।অপ্রিয় সত্য যে রাগের মাথায় অনেক সময় নিজেদের মধ্যে রাগারাগি-হাতাহাতিও হয়ে যায়-যেতে পারে। ভুল যারই হোক, তা পেছনে ফেলে প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলতে হবে। ৮.ধর্মীয় জীবন: একজন ভালমানুষ অবশ্যই ধার্মিক হবে এটাই প্রত্যাশিত। রাসূল সা: আদর্শ মেনে আল্লাহর হুকুম গুলো যথাস্বাধ্য নিয়মিত মেনে চলা। নিদেন পক্ষে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা, হজ্জ/ যাকাত/রোজা সাধ্য থাকলে আদায় করা, কোরআন পড়া। ৯.বাজে অভ্যাস: প্রথমেই যেসব বাজে অভ্যাস অন্যকে আঘাত করে তা সবার আগে বাদ দিতে হবে।যেমন-কটু কথা বলা, অন্যর দোষ ধরা, মাদক সেবন, মুদ্রাদোষ, অন্যার ব্যাপারে অযথা নাক গলানো ইত্যাদি ত্যাগ করতে হবে। ১০. অন্যান্য: আরো কিছু গুন এক লাইন করে বলে যাই যা একজন ভাল মানুষের স্বভাবে থাকা ভালো - => নিয়মিত ব্যায়াম করা => স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া => ইতিবাচক মনোভাব থাকা => স্বার্থপর না হওয়া => উচ্চবিলাসী না হওয়া => সাদাসিদে জীবন-যাপন করা => নিজের কাজে পরিশ্রমী হওয়া => বৃক্ষরোপন সহ সামাজিক কাজগুলো করা => নিয়মিত ভাল বই পড়া পরিশেষে, এই গুনগুলো বললেই স্বভাবের সাথে ল্যাপ্টে যাবে এমন নয়। এই গুনগুলো অর্জনের জন্য নিয়মিত প্রত্যেকটি গুনের উপর অনুশীলন করতে হবে ঠিক গনিত অনুশীলনের মতো। উপরের গুনগুলো যে যত বেশি আয়ত্ব করতে পারবে সে তত ভালমানের ভালমানুষ হতে পারবে।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ