একজন অপরিচিত ছেলে ও মেয়ের মধ্যকার সম্পর্ক


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Yakub Ali

Call

বিবাহ পূর্ব ছেলে মেয়েদের প্রেম ভালবাসা

হারাম।

“স্বাধীনভাবে লালসা পূরণ কিংবা গোপনে লুকিয়ে প্রেমলীলা করবে না” (সূরা আল মায়িদা:

এরপর সূরা নূর এর ৩০ নং আয়াতে পুরুষদের চোখ নীচু রাখতে এবং লজ্জা স্থান হিফাজত করতে বলা হয়েছে।

৩১ নং আয়াতে নারীদেরও একই কথা বলা হয়েছে, পর্দা করার কথা বলা হয়েছে আর নারীরা কাদের সাথে সাক্ষাত করতে পারবে তাদের একটা তালিকা দেওয়া হয়েছে।

সূরা আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে পর্দা করার নির্দেশ আরো পরিস্কার ভাষায় বলা হয়েছে। যেখানে দৃষ্টি নীচু ও সংযত রাখা, লজ্জা স্থান হিফাজত করার কথা এবং পর্দা করার কথা বলা হয়েছে আর সূরা মায়িদাতে গোপন প্রেমলীলাকে নিষেধ করা হয়েছে সেখানে বিবাহ পূর্ব প্রেম বৈধ হতে পারে কি করে? এটা হারাম।

জিনা তথা অবৈধ শারীরীক সম্পর্ক হারাম। (সূরা ইসরা আয়াতঃ ৩২) (সূরা ফুরকানঃ ৬৮)জিনার নিকট যাওয়াই নিষেধ অর্থাৎ যে সকল জিনিস জিনার নিকটবর্তী করে দেয় তার কাছে যাওয়াই নিষেধ। বিবাহ পূর্ব প্রেম নর-নারীকে জিনার নিকটবর্তী করে দেয় আর জিনা মারাত্মক একটি কবিরা গুণাহ।

বিবাহপূর্ব প্রেম অনেক সময় বান্দাহকে শিরকের নিকটবর্তী করে দেয়। কারণ অনেক সময় তারা একে অপরকে এতটাই ভালবাসা শুরু করে দেয় যে প্রকার ভালবাসা পাওয়ার দাবীদার একমাত্র আল্লাহ। (সূরা বাকারাঃ১৬৫)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
প্রেম অর্থ ভালোবাসা। এ ভালোবাসা একটি  কাঙ্ক্ষিত বিষয় কিন্তু স্থান কাল পাত্র ভেদে এই কাঙ্খিত বিষয়টিও নাজায়েয হয়ে যায়। দীন ও ঈমানের ক্ষেত্রে ভালোবাসা অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান হিসেবে পরিগণিত। ভালোবাসা ব্যতিরেকে দীন ও ঈমান পূর্ণতা লাভ করতে পারে না। কারণ আল্লাহকে ভালোবাসা ঈমানের জন্য অলঙ্ঘনীয় প্রথম শর্ত। আল্লাহ তা‌য়ালা বলেন, যারা ঈমানদার তারা সবচেয়ে বেশী ভালোবাসে আল্লহকে( সূরা বাকারা-১৬৫) আর আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা আবশ্যক। কুরআনে কারীমে এ বিষয়টি বেশ স্পষ্ট করেই বলে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমাকে অনুসরণ কর (সূরা আলে ইমরান- ৩১) অর্থাৎ আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাকে অনুসরণ করার মাধ্যমে আমার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি করো।

অন্যদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পবিত্র ঐ সত্তার সপথ যার হাতে আমার প্রাণ সমর্পিত, তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা ও সকল মানুষ থেকে প্রিয় হবো। (সহীহ বুখারী; হা.নং ১৩, ১৪)

পিতা-মাতা, স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয় স্বজন সহ সকল মানুষেক আল্লাহর জন্য মহব্বত করা ঈমানের  অঙ্গ। এগুলোই হল বস্তুনিষ্ঠ প্রেম-ভালোবাসা। কিন্তু বর্তমানে প্রেম-ভালোবাসার নামে যা চলে তাকে কোন ক্রমেই প্রেম-ভালোবাসা নামে অভিহিত করা যায় না। কারণ প্রকৃত ভালোবাসার সাথে পাপাচারের সমন্বয় ও সহাবস্থান হতে পারে না। ভালোবাসা হবে নিরেট পুতপবিত্র। যাবতীয় পাপাচার থেকে মুক্ত। সুতরাং শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে প্রচলিত প্রেম-ভালোবাসা কোন ক্রমেই বৈধতার পর্যায়ে পড়ে না। কারণ এখানে পর্দা-বিধান লঙ্ঘন, পরনারীর প্রতি আসক্তি, অনর্থক সময় ও অর্থ ব্যয়সহ হাজার রকমের পাপাচারের সংমিশ্রণ ঘটে। ইসলামী শরীয়ত মতে জৈবিক প্রেম-ভালোবাসার একমাত্র সূত্র হল বৈবাহিক বন্ধন। বিবাহপূর্ব নারী-পুরুষের তথাকথিত প্রেম-ভালোবাসাকে ইসলাম সমর্থন করে না।

সারকথা, প্রেম ভালোবাসা চার শ্রেণীতে বিভক্ত- (১) ফরয ভালোবাসা, যেমন আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ভালোবাসা। (২) ওয়াজিব ভালোবাসা, যেমন মাতা-পিতা,স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয়-স্বজনের প্রতি ভালোবাসা। (৩) মুস্তাহাব ভালোবাসা, যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি ভালোবাসা। (৪) হারাম বা নিষিদ্ধ ভালোবাসা, যেমন প্রচলিত আবেগী প্রেম-ভালোবাসা। এ জাতীয় আবেগী ভালোবাসা কখনো কুফর পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়। আল্লাহ ত‌াআলা আমাদেরকে আবেগী এ কদর্য প্রেম-ভালোবাসার পাপাচার থেকে হিফাযতে রাখুন। (সূত্রঃ সূরা আলে ইমরান- ৩১, সহীহ বুখারী; হা.নং ১৩, ১৪, তাসহীলুল আফহাম ফী হুকমিল ইশকি ওয়ালগরাম; পৃষ্ঠা ২)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ