মানুষ মরে গেলে তার আত্মা কত দিন দুনিয়াতে থাকে, তার আত্মা তার পর কোথায় চলে যাবে ইসলাম এ বিষয়ে কোনো ধারনা দিয়েছে কি বিজ্ঞান কি বলে ??
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

বিজ্ঞান এর মতে, জীবন আর মৃত্যুর মাঝে পার্থক্য হচ্ছে মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা। যতক্ষন আমাদের মস্তিস্ক সঠিক ভাবে কার্যক্ষম থাকে ততক্ষন আমরা আমাদের অস্তিত্বকে অনুভব করতে পারি বা অন্য কথায় নিজেদের জীবিতবোধ করি। একজন মানুষের প্রতিটি অংগ সুস্থ থাকলেও যদি তার মস্তিস্ক ফাংশনাল না হয় তাহলে সে মৃত। আবার একজন মানুষের সম্পূর্ন শরীর প্যারালাইজড থাকলেও যদি তার মস্তিস্ক মোটামোটিভাবে ক্রিয়াশীল থাকে তাহলে সে তার অস্তিত্ব বুঝতে পারবে। এবার আপনার প্রশ্নের উত্তরে আসি। আসলে আমরা আত্না বলতে যে, স্পিরিচুয়াল স্বত্তার বা শক্তির কথা চিন্তা করি, বিজ্ঞানে তার কোন অস্তিত্ব নেই। দৈহিক কার্যক্রম ও মস্তিস্কের সমন্বয়ের ফলে, আমরা আমদের মাঝে অস্তিত্ব অনুভব করি এবং একটি জীবনীশক্তিবোধ করি। এই পুরো ব্যাপারটিই মস্তিস্কপ্রসূত। আত্না নামক কোন পৃথক স্বত্তা বা শক্তির কোন অস্তিত্ব এখনো বিজ্ঞান খুঁজে পায়নি।। মুসলামান ধর্মের মতো মৃত্যুর পর আত্না বেঁচে থাকে। কবরে আবার বডিতে প্রবেশ করে। বডি উঠে বসে সওয়াল জবাব দেয়। মৃত্যুর পরে আত্না এসে তার নিজের বাড়িতে ঘুরাফেরা করে। তার ছেলে মেয়েদের অবস্থা দেখতে পায়। ইত্যাদি ইত্যাদি। মৃত্যুর পর মানুষের রুহ বা আত্মা কোথায় যায় এবং কোথায় অবস্থান করে। কিয়ামত সংঘটিত হবার পরে বিচার শেষে মানুষ জান্নাত বা জাহান্নামে অবস্থান করবে। কিন্তু এর পূর্বে সুদীর্ঘকাল মানুষের আত্মা কোথায় অবস্থান করবে? কোরআন-হাদীসে এর স্পষ্ট জবাব রয়েছে। মৃত্যুর পরের সময়টিকে যদিও পরকালের মধ্যে গণ্য করা হয়েছে, তবুও কোরআন-হাদীস মৃত্যু ও বিচার দিনের মধ্যবর্তী সময়কে আলমে বরযখ নামে অভিহিত করেছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন- এবং তাদের পেছনে রয়েছে বরযখ- যার সময়কাল হচ্ছে সেদিন পর্যন্ত যেদিন তাদেরকে পুনর্জীবিত ও পুনরুত্থিত করা হবে। (সূরা মুমিনুন-১০০) এই আয়াতে যে বরযখ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, এর অর্থ হলো যবনিকা পর্দা। অর্থাৎ পর্দায় আবৃত একটি জগৎ- যেখানে মৃত্যুর পর থেকে আখিরাতের পূর্ব পর্যন্ত মানুষের রুহ্ অবস্থান করবে। ইসলাম পাঁচটি জগতের ধারণা মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছে। প্রথম জগৎ হলো, রুহ্ বা আত্মার জগৎ- যাকে আলমে আরওয়াহ্ বলা হয়েছে। দ্বিতীয় জগৎ হলো মাতৃগর্ভ বা আলমে রেহেম। তৃতীয় জগৎ হলো আলমে আজসাম বা বস্তুজগৎ- অর্থাৎ এই পৃথিবী। চতুর্থ জগৎ হলো আলমে বরযাখ বা মৃত্যুর পর থেকে আখিরাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যে সুক্ষ্ম জগৎ রয়েছে, যেখানে মানুষের আত্মা অবস্থান করছে। পঞ্চম জগৎ হলো আলমে আখিরাত বা পুনরুত্থানের পরে অনন্তকালের জগৎ। এ কথা স্পষ্ট মনে রাখতে হবে যে, রুহ বা আত্মার কখনো মৃত্যু হয় না। মৃত্যুর পর এই পৃথিবী থেকে আত্মা আলমে বরযখে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ আত্মা দেহ ত্যাগ করে মাত্র, তার মৃত্যু হয় না। আলমে বরযখের বিশেষভাবে নির্দিষ্ট যে অংশে আত্মা অবস্থান করে সে বিশেষ অংশের নামই হলো কবর।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ