শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
FoniVushon

Call

ভিন্ন ভিন্ন ছন্দের কবিতা লিখার নিয়মগুলো : বাংলা কবিতার ছন্দ প্রধানত তিন প্রকার। ১. স্বরবৃত্ত ছন্দ ২. মাত্রাবৃত্ত ছন্দ ৩. অক্ষরবৃত্ত ছন্দ স্বরবৃত্ত ছন্দ: স্বরবৃত্ত ছন্দে বদ্ধস্বর এক মাত্রা বহন করে। কোনো অবস্থাতেই এ ছন্দে বদ্ধস্বর দু’মাত্রা বহন করতে পারে না। তাছাড়া মুক্তস্বরের মাত্রা এক। কবিতার পঙ্ক্তি দিয়ে বিবেচনা করা যাক। ১. মামার বাড়ি আর যাবো না আর খাবো না মামীর গাল, কথায় কথায় পড়বে না আর আমার পিঠে অমন তাল। এখানে প্রতি পঙ্ক্তিতে তিনটি করে পর্ব এবং একটি করে অতিপর্ব আছে। প্রত্যেক পর্বে সমান সংখ্যক মাত্রা আছে এবং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে অতিপর্ব পর্ব থেকে কম সংখ্যক মাত্রা ধারণ করেছে। ছন্দ বিন্যাস করলে দেখা যায়, মামার বাড়ি/ আর যাবো না/ আর খাবো না/ মামীর গাল, কথায় কথায়/ পড়বে না আর/ আমার পিঠে/ অমন তাল। স্বরের উপরে লম্বা দাগগুলো মাত্রা চিহ্ন নির্দেশক। মুক্ত স্বরের উপরে শুধু একটি দাগ দিলেও বদ্ধস্বর বোঝাতে চাঁদের মতো চক্র রেখা এঁকে তার উপরে মাত্রা চিহ্ন দেয়া হয়েছে। প্রতি লাইনে আড়াআড়ি দাগ কেটে পর্ব নির্দেশ করা হয়েছে। পর্ব, অতিপর্ব ও উপপর্ব: কবিতার প্রতিটি লাইনে সমমাত্রার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশই হলো পর্ব। পঙ্ক্তি শেষের পর্বাংশকে অতিপর্ব বলা হয় যার মাত্রা সংখ্যা পর্বের মাত্রা সংখ্যা থেকে সর্বদাই কম। এ ধরনের পর্বাংশ লাইনের শুরুতে থাকলে আমরা তাকে উপপর্ব বলে চিহ্নিত করবো। উপরে প্রদত্ত উদাহণের ছন্দ বিন্যাস লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে, প্রতিটি পর্বের মাত্রা সংখ্যা চার, এবং অতিপর্বের মাত্রা সংখ্যা তিন। এই কাব্যাংশে কোনো উপপর্ব নেই। যদি কবিতাটি সম্পূর্ণ করার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে প্রতিটি বর্ধিত লাইনেও উপরের লাইনগুলির সমান সংখ্যক পর্ব একই মাত্রায় রাখতে হবে, এবং অতিপর্বেও উপরের লাইন অনুসারে তিন মাত্রা থাকবে। যেমন, মামার বাড়ি আর যাবো না আর খাবো না মামীর গাল, কথায় কথায় আমার পিঠে পড়বে না আর অমন তাল। সকাল বেলা জেগে আমি তাই তো গেলাম মায়ের ঘর, “ভায়ের বাড়ি যাওগে একা, আমার গায়ে ভীষণ জ্বর।” তাহলে স্বরবৃত্ত ছন্দের এই কবিতাটির কাঠামো দাঁড়াবে: ৪ + ৪ + ৪ + ৩ ২. যখন ওরা অপিশে যায় কিংবা চালায় তুমুল দোকানদারি তখন আমি ঢেউ সাজানো নদীর বুকে দিব্যি জমাই পাড়ি। (যখন ওরা/শামসুর রাহমান) মাত্রা বিন্যাস: যখন ওরা/ আপিশে যায়/ কিংবা চালায়/ তুমুল দোকান/ দারি তখন আমি/ ঢেউ সাজানো/ নদীর বুকে/ দিব্যি জমাই/ পাড়ি। কাঠামো: ৪ + ৪ + ৪ ৪ + ২ এখানে চার মাত্রার চারটি পর্ব এবং দুই মাত্রার একটি অতিপর্ব দিয়ে পঙ্ক্তি গঠিত হয়েছে। সাথে সাথে লক্ষণীয় যে শামসুর রাহমান একটি পঙ্ক্তি ভেঙে দু’টি লাইন করেছেন। কিন্তু পর্ব সংখ্যা প্রতি দুই দুই লাইনে সমান রেখেছেন। ইচ্ছা করলে প্রথম উদাহরণের কবিতাটি একই ভাবে ভেঙে দেয়া যায়। যেমন, মামার বাড়ি আর যাবো না আর খাবো না মামীর গাল, কথায় কথায় পড়বে না আর আমার পিঠে অমন তাল। এই নতুন আঙ্গিকে কবিতাটির কাঠামো দাঁড়াবে:

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ