এখানে জাতির পিতা বলতে বাঙালি সম্প্রদায় বা জাতির পিতার কথা বলা হয়েছে, মুসলিম জাতির নয়। প্রথমত জাতির পিতা বলার কারনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে সুতরাং তা না বলাই উচিৎ। দ্বিতীয়ত যদি বলতেই হয় তাহলে শুধু 'জাতির পিতা' না বলে 'বাঙালি জাতির পিতা' উল্লেখ করে বলা উচিৎ। তাহলে বিভ্রান্তির হাত হতে রক্ষা পাওয়া যাবে। *ধন্যবাদ

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
বিষয়টা নিছক রাজনৈতিক। শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব জাতির পিতা কি জাতির পিতা নন এটা নিছক একটি রাজনৈতিক বিতর্ক। জাতির পিতা উপাধিটিও একটি রাজনৈতিক উপাধি। বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে তাঁর অনেক বড় অবদান ছিল- এটা একটি অনস্বীকার্য বিষয়। এ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে একটি উপাধি দেয়া হয়েছে। এটি একটি উপমেয় উপাধি। কারণ আমরা সকলেই জানি, তিনি আমাদের বাংলেদেশর ষোল কোটি মানুষের প্রকৃত পিতা নন। জন্ম সূত্রে প্রত্যেকের পিতাই আলাদা। ধর্মীয় দৃষ্টকোণ থেকে তাঁর এ উপাধি স্বীকার করে নিলে স্বতন্ত্র কোনো পুণ্য হবে না। তদ্রূপ কেউ এ উপাধিকে স্বীকার না করলেও কোনো পাপ হবে না। উঠোন জুড়ে টই টই করে হেঁটে বেড়ানো শিশুটিকে আমরা আদর করে এসো বাবা বলে সম্বোধন করে কোলে তুলে নিই। এ সম্বোধনে শিশুটি আমাদের ঔরসজাত সন্তান বা জন্মগত পিতা হয়ে যায় না।এ সম্বোধনে কোনো পাপ-পুণ্য নেই। তদ্রূপ সম্বোধনহীনতায়ও নেই কোনো পাপ-পুণ্যের সংযুক্তি। বস্তুত দেশের কাণ্ডারী পরলোকগত এ মানুষগুলোকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের বিতর্ক হওয়াই সমীচীন নয়।একজন মানুষ যত খারাপই হোক তিনি আমাদের থেকে চলে গেলে তার ভাল গুণগুলোর কথাই হাদীসে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। তার খারাপ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করতে বারণ করা হয়েছে। কারণ দোষে গুণে মানুষ। নবী বিনে কোনো মানুষই দোষমুক্ত নয়। পরলোকগত মানুষগুলোর দোষ চর্চায় ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ নেই। কেউ যদি বঙ্গবন্ধু/জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান না বলে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা শেখ মুজিবুর রহমান রহ. বলে তবে তাঁর ভালবাসার কেউ হয়তো বিরাগভাজন হবেন। অথচ বঙ্গবন্ধু বা জাতির পিতা বলায় তাঁর কোনো লাভ হবে না। পক্ষান্তরে তাঁর নামের শেষে রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললে তিনি উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। কারণ এটি একটি দুআ। এখানে তাঁর উপর রহমত বর্ষণের প্রার্থনা করা হচ্ছে। মৃত মানুষের জন্য দুআ-প্রার্থনা পুণ্যের কাজ।  তিনি কবরে শায়িত আছেন। তিনি এখন রহমত ও সওয়াবের বড় মুখাপেক্ষী।একজন মানুষ যখন পৃথিবী থেকে চলে যান তখন তিনি বিষম অসহায় বোধ করেন। তিনি তাঁর ভালবাসার মানুষ এবং আপন মানুষগুলোর দিকে চাতক পাখির ন্যায় তাকিয়ে থাকেন যে, তারা তাঁর বিদেহী আত্মার প্রশান্তির জন্য বিশুদ্ধ কোনো উপঢৌকন পাঠায় কি না? আজ আমরা আমাদের পরলোকগত জাতীয় নেতৃবৃন্দের নামে যেসব বিষয়ের চর্চা করছি তাতে তাঁরা উপকৃত না হয়ে ব্যথিত হন, আনন্দিত না হয়ে দুঃখিত হন।একজন মানুষকে কষ্ট দিয়ে আর যাই হোক ভালবাসা হয় না। একজন মানুষকে বেদনা দিয়ে আর যাই হোক শ্রদ্ধা নিবেদন হয় না। হাদীসের ভাষ্য মতে মৃত ব্যক্তিদের নামে অবিধানিক কিছু করা হলে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আজ আমরা আমাদের জাতীয় নেতৃবৃন্দের ক্ষেত্রে মাত্রাহীন ভালবাসা দেখাতে গিয়ে তাঁদেরকে বিপরীত পক্ষের ঈর্ষার পাত্রে পরিণত করে দেই। ফলে সৃষ্টি হয় অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক। তাঁদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় অশোভন শব্দ-সম্বোধন। রাজনৈতিক এসব অপসংস্কৃতির অপনোদন হওয়া চাই।
ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ