আল্লাহ বলেছেন যে রমজান মাসে শয়তানকে বন্দি করা হয় । তাহলে যদি শয়তান বন্দি থাকে তাহলে মানুষ শয়তানি বা খারাপ কাজ করে কেন ।
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

শয়তান যদিও শৃঙ্খলাবদ্ধ কিন্তু তার মানে এই নয় যে, শয়তান একেবারে শেষ বা মরে গেছে বরং শয়তান জীবিত তারা মরে যায় না। তাদের ক্ষমতা রোধ হয়ে যায়। ব্যাপারটি ভালোভাবে বোঝার জন্য একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। বাঘের কথাই ধরুন। যে বাঘটি মুক্ত তার পক্ষে মানুষ হত্যা করার সম্ভাবনা খুবই বেশি এমনকি বাঘে পেলে হত্যা করে বৈকি! আপনার জীবন তখন বিপদাপন্ন কিন্তু যখন ওই বাঘটি খাঁচাবন্দি বা শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকবে তখন কিন্তু আপনি ওই বাঘ হতে নিরাপদ। তবে আপনার ওই নিরাপত্তা নির্ভর করে যতটুকু দূরত্ব আপনি বাঘের সাথে রেখেছেন তার ওপর। বাঘকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার পরেও আপনি যদি ওই বাঘের খুব কাছাকাছি চলে যান তাহলে আপনাকে হত্যা করার একটা সুযোগ কিন্তু ওই বাঘের জন্য থেকে যায়। সুতরাং যতটা সম্ভব, ওই বাঘের কাছ থেকে বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে তাহলেই আপনি নিরাপদ থাকবেন। একইভাবে আপনি যদি রমযান মাসে শয়তান হতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখেন তাহলে আপনিও নিরাপদ থাকতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻛُﻠُﻮﺍ ﻣِﻤَّﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺣَﻠَﺎﻟًﺎ ﻃَﻴِّﺒًﺎ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺘَّﺒِﻌُﻮﺍ ﺧُﻄُﻮَﺍﺕِ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥِ ۚ ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﻜُﻢْ ﻋَﺪُﻭٌّ ﻣُّﺒِﻴﻦٌ অর্থ: হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রয়েছে তা হতে তোমরা আহর করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করিও না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বাকারা, অধ্যায়-২, আয়াত-১৬৮)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

মানুষ গুনাহ বা খারাপ কাজ করতে করতে যখন অভ‍্যস্ত হয়ে যায়, তখন এটা তার স্বভাবে পরিণত হয়ে যায়। শয়তান যখন একটা মানুষকে দ্বারা খারাপ বা গুনাহর কাজ করাতে থাকে তথা মানুষ যখন বারবার শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে থাকে, তখন সে গুনাহ বা খারাপ কাজে অভ‍্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন শয়তান ঐ ব‍্যক্তির পিছু ছেড়ে দিলেও ঐ ব‍্যক্তি অভ‍্যাসের দরুন শয়তানের পিছু ছাড়ে না তথা খারাপ কাজ করা বন্ধ করে না (যতক্ষণ না পর্যন্ত আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত না হয়)। তাই যারা গুনাহের কাজে মারাত্মক অভ‍্যস্ত হয়ে পড়েছে, রমজান মাসে শয়তানকে বন্দি করে রাখার পরেও তারা গুনাহ তথা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে ভুল করে না, যতক্ষণ না আল্লাহ তাদের রহমত দান না করেন। শুক্রবার হলো রহমতের দিন (জুমার দিন) আর রমজান হলো রহমতের মাস (কুরআন নাযিলের মাস)। তাই শুক্রবারে ও রমজান মাসে বেশিরভাগ মানুষ আল্লাহর রহমতপ্রাপ্ত হয়ে ইবাদাতে মশগুল থাকে। আর যারা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়, রহমতের দিন বা রহমতের মাসেও তারা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে ভুল করে না। তাই শয়তানকে রমজান মাসে বন্দি করে রাখার পরও কিছু মানুষ খারাপ কাজ করে। আল্লাহর রহমত পেতে হলে কোমল হৃদয়ের অধিকারী (মানুষের দুঃখে দুঃখী, দয়ালু) হতে হবে, হৃদয়কে পাথর (নির্দয়, নিষ্ঠুর) করা যাবে না। ধন‍্যবাদ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ