shohanrand1

Call

জবাবে বলব, এর পেছনে আল্লাহ্‌র অনেক হিকমত রয়েছে। আমরা নীচে সেগুলির কয়েকটি উল্লেখ করছি: * বিশেষত মানব এবং জিন জাতিকে পরীক্ষা করার জন্য। তাদের মধ্যে কে ভাল আর কে ভাল নয়, তা যাচাই-বাচাই করা ইবলীস সৃষ্টির অন্যতম লক্ষ্য।[116] * বিপরীতমুখী বিষয়গুলি সৃষ্টির প্রতি আল্লাহ্‌র অসীম ক্ষমতা প্রকাশ। আল্লাহ যাবতীয় অকল্যাণের মূলোৎস ইবলীস নামক এই নিকৃষ্টতম সত্ত্বাটিকে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু তিনি এর বিপরীতে যাবতীয় কল্যাণের মূল সর্বোচ্চ সম্মানিত ফেরেশতা জিবরীল (‘আলাইহিস্‌সালাম)কেও সৃষ্টি করেছেন। এতে মহান আল্লাহ্‌র সীমাহীন ক্ষমতাই প্রকাশ পায়। যেমনিভাবে রাত-দিন, গরম-ঠাণ্ডা, আগুন-পানি, অসুখ-সুস্থতা, হায়াত-মউত, সুন্দর-অসুন্দর ইত্যাদি সৃষ্টিতে মহান আল্লাহ্‌র অপরিসীম ক্ষমতা প্রকাশ পায়। কারণ বিপরীতমুখী বিষয়গুলির অপরটি না থাকলে আল্লাহ্‌র হিকমত নষ্ট হয়ে যেত, তাঁর পূর্ণাঙ্গ আধিপত্য স্পষ্ট হত না।[117] * এর মাধ্যমে আল্লাহ ইবাদতের ক্ষেত্রে তাঁর বান্দাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে চান। কারণ তারা প্রতিনিয়ত ইবলীসের সাথে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ্‌র আনুগত্য এবং ইবলীস থেকে তাঁর নিকট আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে তারা ইবলীসকে ক্রোধান্বিত করবে। ফলে আল্লাহ তাদেরকে তার কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করবেন এবং এর মাধ্যমে তারা ইহলৌকিক ও পারলৌকিক প্রভূত কল্যাণ অর্জন করবে। কিন্তু ইবলীস না থাকলে এগুলি সম্ভব হত না। অনুরূপভাবে আল্লাহকে ভালবাসা, তাঁর উপর ভরসা, তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন, বালা-মুছীবতে ধৈর্য্যধারণ ইত্যাদি আল্লাহ্‌র প্রিয়তর ইবাদত; কিন্তু সেগুলি প্রবৃত্তি এবং শয়তানের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ছাড়া সম্ভয় নয়। ফলে ইবলীস সৃষ্টির কারণেই উক্ত ইবাদতগুলি বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।[118] * এর মাধ্যমে আল্লাহ্‌র বহু নিদর্শন প্রকাশ। কারণ যালেম এবং পাপী-তাপী কর্তৃক কুফর ও মন্দ কর্ম সংঘটিত হলে আল্লাহ্‌র অনেক নির্দশন প্রকাশ পায়। যেমনঃ ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি। এছাড়া ছামূদ জাতি এবং লূত্ব (‘আলাইহিস্‌সালাম)-এর ক্বওমকে সমূলে ধ্বংস, ইবরাহীম (‘আলাইহিস্‌সালাম)-এর জন্য আগুনের শীতল এবং শান্তিময় রূপ ধারণ, মূসা (‘আলাইহিস্‌সালাম)-এর হাতে সংঘটিত নানা নিদর্শনও ইবলীস সৃষ্টির মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে।[119] [116]. আল-হিকমাতু ওয়াত-তা‘লীলু ফী আফ‘আলিল্লাহ/২০৫। [117]. ইবনুল ক্বাইয়িম (রহেমাহুল্লাহ), মাদারিজুস্‌ সালেকীন, তাহক্বীক্ব: ইমাদ আমের (কায়রো: দারুল হাদীছ, প্রকাশকাল: ২০০৩ইং), ২/১৬১। [118]. আল-হিকমাতু ওয়াত-তা‘লীলু ফী আফ‘আলিল্লাহ/২০৫; হালিল ইনসান মুসাইয়্যার আও মুখাইয়্যার?/১৮-২৩। [119]. মাদারিজুস্‌ সালেকীন, ২/১৬৩।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ