শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call
গীবত ইসলামি শরিয়তে হারাম ও কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ধ্বংস তাদের জন্য, যারা অগ্র-পশ্চাতে দোষ বলে বেড়ায়। (সূরা হুমাজাহঃ ১)।

এর কারণে সমাজের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বিনষ্ট হয়, সমাজ বিপর্যয়ের দিকে ধাবিত হয়, সামাজিক মূল্যবোধ বিনষ্ট হয়, পারস্পরিক সম্পর্ক নষ্ট হয়, তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো গীবত, যা মানুষকে নিকৃষ্টতম প্রাণীতে পরিণত করে। তাই তো মহান আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে এই নিকৃষ্ট স্বভাব থেকে বিরত থাকার তাগিদ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ সূরা হুজরাতের ১২ নম্বর আয়াতে বলেন, আর তোমরা কেউ কারো গীবত করো না, তোমরা কি কেউ আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করবে? একে তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করবে। (সূরা হুজুরাতঃ ১২)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

 গিবত বা পরনিন্দা  হল কারো অনুপস্থিতিতে কারো নিন্দা করা বা কারো দোষত্রুটি নিয়ে আলোচনা করা।


বাহাই ধর্মে, খ্রিস্টান ধর্মে, ইসলাম ধর্মে ও ইহুদি মূলনীতিতে, পরনিন্দা একটি পাপ। বাহাই নেতাগণ একে এমন নিকৃষ্ট পাপ বলেছেন, যা আত্মার প্রাণ ধ্বংস করে দেয় এবং স্বর্গীয় ক্ষোভকে উস্কে দেয়।থমাস একুইনাস একে মারাত্মক পাপ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেছেন, কিন্তু তা এমন সব মারাত্মক পাপের অন্তর্ভুক্ত করেন নি, যা একজন আরেকজনের প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে করে থাকে। ইসলামে একে গীবত (غيبة) বলা হয়, এবং ইসলামে একে বড় পাপ হিসেবে ধরা হয়েছে এবং কুরআনে একে মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়ার মত ঘৃণিত কাজের সগে তুলনা করা হয়েছে। কুরআনের সূরা আহজাবের ১২ নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ

— 12, মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।, সূরা আহজাব (৪৯) আয়াতঃ ১২

ইহুদি ধর্মে, পরনিন্দা হোতজাত শেম রা (বদনাম ছড়ানো) নামে পরিচিত ও একটি বড় পাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।


বৌদ্ধধর্মে, পরনিন্দা সঠিক বক্তব্য আদর্শের সঙ্গে নীতিবিরুদ্ধ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

গীবত করা তো ইসলামের দৃষ্টিতে কবিরা গুনাহ। আর কবিরা গুনাহ হল এমন ধরণের গুনাহ যেটা আপনাকে জাহান্নামে নেবার জন্য যথেষ্ট যদি না আপনি নিজের ভুল শুধরে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা আদায় করে নিতে পারেন। গীবত করার সাথে তুলনা করা হয়েছে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়াকে। যেটা সভ্য সমাজে আমরা কখনোই করতে পারিনা। কিন্তু গীবত করার মাধ্যমে আমরা সমমানের অপরাধ করে চলেছি প্রতিনিয়তই। কাজেই গীবতের কুফল কি সেটা আপনি বুঝতে পারছেন। এটা আপনা ঈমান আমল কে নষ্ট করে ফেলবে। আপনাকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিবে। এটাতো গেল ধর্মীয় দিক। এবার সামাজিক দিক নিয়ে ভাবতে পারেন। ভেবে দেখুন আমাদের সমাজের বেশিরভাগ অপরাধই কিন্তু উল্টাপাল্টা কথার মাধ্যমে হয়ে থাকে। সেটা হতে পারে মিথ্যা কথা কিংবা গীবত। ইসলামে মিথ্যা বলা যেমন হারাম তেমনি গীবত করাও হারাম। আপনি কারো অনুপস্থিতিতে যদি তার বদনাম করেন অন্য কারো সাথে তাহলে এর মাধ্যমে আপনি মানুষে মানুষে শত্রুতা তৈরী করতে পারবেন। সমাজে বিশৃঙ্খলা বাড়বে। আর বিশৃঙ্খলা করার ফলে আপনার গুনাহর পাল্লা আরো ভারী হবে। আপনি যদি অন্য কারো সাথে ঐ লোকটার দোষ না ধরে সরাসরি তাকে তার ভুলগুলো সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিতেন তাহলে একদিকে সে যেমন নিজেকে শুধরে নেবার সুযোগ পেত অন্যদিকে তার সাথে অন্য কোন ব্যক্তির সম্পর্কও খারাপ হবার সম্ভাবনা থাকত না। আপনি নিজেও গুনাহগার না হয়ে বরং সওয়াব পেতেন। আপনার কারণে কোন লোক যদি নিজেকে শুধরে ভাল পথে চলে তাহলে এই ভালো পথে চলার পিছনে অবদান রাখার জন্য আপনিও আল্লাহর কাছ থেকে পুরষ্কার পাবেন। এভাবে গীবত না করলে যেমন সমাজের ভাল হবে তেমনি গীবত করলে ফল হবে উল্টো। সোজা কথা হল এর কুফলের কোন সীমা নেই। গীবত করলে এর প্রভাব যে কতটা বিস্তৃত হতে পারে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। হিন্দি সিরিয়াল যারা দেখে তারা ব্যাপারটা বুঝতে পারবে। ঐসব সংসারে যেসব অশান্তি দেখানো হয় তার পেছনেও কিন্তু গীবতই দায়ী। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। ধন্যবাদ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ