মাযহাবের ইমামগণ কি সাধারণ মানুষকে বলেছিলেন যে , সাধারণ মানুষ যেন তাকে (ইমাম) অনুসরণ করে??
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

সুন্নি মুসলিম সম্প্রদায়ে চারটি মাজহাব স্বীকৃত। ১। হানাফি মাজহাব। ২। মালিকি মাজহাব। ৩। শাফিয়ি মাজহাব। ৪। হাম্বলি মাজহাব। এই চার মাজহাবের চার ইমাম রয়েছেন, যারা পুরো মুসলিম সমাজেই বরেণ্য ও সম্মানিত। হানাফি, মালেকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি এই চার মাজহাবের চার ইমাম প্রায় সমসাময়িক কালের ইসলামী চিন্তাবিদ ও শরিয়তের ব্যাখ্যাকার। এই মাজহাব গুলোর ইমাম তারা কোরআন হাদিসের নির্যাস বের করে সাধারণ মানুষের জন্য অনেক সহজ করে দিয়েছেন। যারা একান্তই কোরআন হাদিসের বিধি বিধানগুলো জানেন না অথবা অন্য কোনোভাবে যার জানার সুযোগ নেই, তিনি যদি কোনো মাজহাবের অনুসরন করেন, তাহলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে মূল উদ্দেশ্য একটিই হতে হবে। সেটি হল কোরআন ও সুন্নাহর অনুসরন করা। মাজহাব কোনো দ্বীন নয়। আমাদের সম্মানীত চারজন মাজহাবী ইমামেরা কোরআন এবং সুন্নাহর অনুসরন করেছেন। তাদের সময়ে যেসব বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং যেখানে পবিত্র কোরআন এবং সহিহ হাদিসের নির্দেশনা পাননি, সেক্ষেত্রে তারা গবেষণা করেছেন। তারা একথাও বলেছেন, যদি আমার গবেষণার সাথে কোনো সাংঘর্ষিক হাদিস পাওয়া যায়, তাহলে সেটিই আমার মাজহাব, যদি আমার বক্তব্যের সাথে কোনো হাদিসের সাংঘর্ষিক অবস্থা হয়, তাহলে আমার বক্তব্যকে তোমরা দেয়ালের ওপারে ছুঁড়ে মারো। যেমন, আমাদের দেশে অতি প্রচলিত হচ্ছে হানাফি মাজহাব। সাধারণ লোক কেউ যদি মাজহাবের মাধ্যমে কোরআন সুন্নাহর অনুসরন করে তাতে কোনো সমস্যা নেই। আবু হানিফা, যিনি এই মাজহাবের ইমাম, তিনিও কিন্তু সুন্দর একটি মূলনীতি দিয়ে গিয়েছেন, তিনি বলেছেন, যদি সহিহ হাদিস পাও, তুমি যদি সেটি আমল করো, কিন্তু বাস্তবে যদি দেখা যায় আমার মাজহাবের একটি সিন্ধান্ত রয়েছে আল্লাহর রাসুলের হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক অথবা একটু উল্টো, রাসুলের (সাঃ) হাদিসের ওপর যদি আমল করো, তাহলে মনে রাখবে আমি ইমাম আবু হানিফার মাজহাব ঐটিই। মাজহাবের ক্ষেত্রে মূল কথাই হচ্ছে, আমাদের মাজহাবের সম্মানিত ইমামরা তারা কোরআন হাদিস সম্মত জীবনযাপন করেছেন, কিছু বিষয়ে গবেষণা করেছেন এবং তারা বলে গেছেন, যদি কোরআন হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তোমরা এই মাজহাবটি মানবে না। কারণ তারাতো এই একই দ্বীনের অনুসারী। সাধারণ মানুষ চাইলে যেকোনো একটি মাজহাব মানতে পারেন, কিন্তু মাজহাব মানা বাধ্যতামূলক এমন কথা মাজহাবের সম্মানিত ইমারাও বলে যান নি এবং সেটি সঠিকও নয়। কোনো জিনিসকে ফরজ বলতে হলে শরিয়তের বিধান লাগবে, যে বিষয়টি আল্লাহর রাসুলের (সাঃ) সময়ে ফরজ হয়নি, সাহাবাদের সময়ে ফরজ হয়নি, তাবিয়ানদের যুগে ফরজ হয়নি, পরবর্তিতে সেটি ফরজ করার মত সাধ্য আমাদের হাতে নেই। বিদায় হজের সময়তো রাসুল (সাঃ) একদিকে ভাষন দিচ্ছেন, অন্যদিকে আয়াত নাজিল হল যে, দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে, দ্বীনের সাথে নতুন কিছু সংযোজন করার প্রয়োজন নেই এবং সেই সুযোগও নেই। কেউ যদি কোনো মাজহাব মানতে চান, মানতে পারেন কিন্তু এটি বাধ্যতামূলক নয়। এছাড়া আরো চারটি মাজহাব রয়েছে। ৫। জাহিরি (সুন্নি)। ৬। জাফরি (শিয়া)। ৭। জায়েদি (শিয়া)। ৮। ইবাদি (খারেজি)।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ