বিয়ের পর স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের ব্যাপারে জানলে তাকে বর্তমান অবস্থার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করুন এবং খালেছ অন্তরে তাওবাহ করতে বলোন!এবিষয়টা জানার আগে আপনারা যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তা অটল থাকবে৷
আল্লাহর বাণী "মুমিনদের জন্য ব্যাভিচারী নারী হারাম"।
এ ব্যাপারে ব্যাখ্যাকারিগণের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলেন, অধিক সময় এ রকমই ঘটে থাকে বলে এ রকম বলা হয়েছে। আয়াতের অর্থ হল, সাধারণতঃ ব্যভিচারী ব্যক্তি বিবাহের জন্য নিজের মত ব্যভিচারিণীর দিকেই রুজু করে থাকে। সেই জন্য দেখা যায় অধিকাংশ ব্যভিচারী নারী-পুরুষ তাদেরই অনুরূপ ব্যভিচারী নারী-পুরুষের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম করতে পছন্দ করে। আর এ কথা বলার আসল লক্ষ্য হল, মু’মিনদেরকে সতর্ক করা যে, যেমন ব্যভিচার একটি জঘন্যতম কর্ম ও মহাপাপ, তেমনি ব্যভিচারী ব্যক্তির সাথে বিবাহ ও দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ক গড়াও অবৈধ। ইমাম শাওকানী (রঃ) এই মতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। এবং হাদীসসমূহে এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার যে কারণ বলা হয়েছে, তাতেও উক্ত মতের সমর্থন হয়। যে কোন এক সাহাবী নবী (সাঃ)-এর কাছে (আনাক বা উম্মে মাহযূল নামক) ব্যভিচারিণীকে বিবাহ করার অনুমতি চাইলে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। অর্থাৎ, তাঁদেরকে এ রকম করতে নিষেধ করা হল। এখান হতে দলীল গ্রহণ করে উলামাগণ বলেছেন যে, কোন পুরুষ কোন মহিলার সাথে বা কোন মহিলা কোন পুরুষের সাথে ব্যভিচার করে বসলে তাদের আপোসে বিবাহ হারাম। তবে তারা যদি বিশুদ্ধভাবে তওবা করে নেয়, তাহলে বিবাহ বৈধ। (তাফসীর ইবনে কাসীর)
সুতরাং -স্ত্রী যদি তাওবাহ করে তবে বিবাহ অবৈধ হবে না৷আর যদি এখনো না করে তবে তাওবাহ করার পরামর্শ দেওয়া হোক৷
আপনার স্ত্রীর বিবাহপূর্ব সম্পর্কটি হারাম হয়েছে৷ এজন্য তার কৃতকর্মের উপর লজ্জিত হয়ে তাওবা করা এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার প্রতি দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া আবশ্যক৷ তবে এর কারণে আপনাদের বিয়েতে এর কোন প্রভাব পড়বেনা৷ অর্থাৎ আপনাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বৈধ রয়েছে৷ কেননা সূরা নুরের ৩ নং আয়াতে মুমিন ও অসতি নারীর মাঝে বিবাহ হারামের যে নির্দেশনা রয়েছে তা পরবর্তী আয়াত দ্বারা মানসুখ (রহিত) হয়ে গেছে৷ واخْتَلَفَ السَّلَفُ في تَزْوِيجِ الزّانِيَةِ، فَرُوِيَ عَنْ أبِي بَكْرٍ وعُمَرَ وابْنِ عَبّاسٍ وابْنِ مَسْعُودٍ وابْنِ عُمَرَ ومُجاهِدٍ وسُلَيْمانَ بْنِ يَسارٍ وسَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ في آخَرِينَ مِنَ التّابِعِينَ: " أنَّ مَن زَنى بِامْرَأةٍ أوْ زَنى بِها غَيْرُهُ فَجائِزٌ لَهُ أنْ يَتَزَوَّجَها বিস্তারিত জানতে আহকামুল কুরআন লিল জাস্সাস দেখুন৷ এখন আপনার করণীয় হলো- স্ত্রী যদি তাওবা করে থাকে এবং তার কর্মে বাস্তবেই তা বোঝা যায়, তাহলে তাকে নিয়েই সংসার করা৷ কারণ মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকে, এবং ভুল থেকে ফিরে আসলে তাকে ক্ষমা করা উচিত৷ আর যদি তাওবা না করে কিংবা তাওবা করেছে কিন্তু কর্মে বাস্তবে তা বোঝা যায় না৷ তাহলে উভয় পরিবারের মুরব্বিদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা৷