অনেক সময় জামআতে ফরজ নামাজে ইমাম সাহেব সূরা পাঠ করোন না (উচ্চস্বরে)। তখন আমি মনে মনে পড়বো? নাকি ইমাম সাহেব আমার বদলে পড়ছেন আমি চুপ থাকবো কোনটা?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

মুক্তাদীকে কোন কিরাতই পড়তে হবে না। কারণ ইমামের কিরাত-ই মুক্তাদীর কিরাত। ইমাম সূরা ফাতিহার পর বাকি সূরা মিলালে যেমন তা মুক্তাদীর পক্ষ থেকে হয়ে যায়, তেমনি সূরা ফাতিহা পড়লেও তা মুক্তাদীর পক্ষ থেকে হয়ে যাবে। মুক্তাদীর আলাদাভাবে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে না, সেই সাথে অতিরিক্ত সূরাও মিলাতে হবে না। কারণ তিলাওয়াত করলে পিছনে চুপ থাকার নির্দেশ পবিত্র কুরআনে যেমন এসেছে, তেমনি সহীহ হাদীসেও এসেছে। সেই সাথে ইমামের সকল কিরাতই মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট হয় মর্মে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। হযরত জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, যার ইমাম রয়েছে, তার ইমামের কিরাত মানেই হল তার কিরাত। (মুয়াত্তা মালিক, হাদীসঃ ১২৪, মুসনাদে আহমাদ, হাদীসঃ ১৪৬৪৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীসঃ ৮৫০) ইমামের কেরাতই মুক্তাদির পক্ষে যথেষ্ট এটি সাহাবা, তাবেয়ীন ও তাবে-তাবেয়ীন-যুগের ‘আমলে মুতাওয়াতির’ (যুগ পরম্পরায় চলে আসা ব্যাপক ও অনুসৃত কর্মধারা)-এর মাধ্যমে প্রমাণিত। এর বিশুদ্ধতা তঁদের কাছে ছিল এক স্বীকৃত বিষয়। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, যায়েদ ইবনে ছাবিত, জাবির ইবনে আবদুল্লাহ ও আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) প্রমুখের আমলও এ অনুযায়ীই ছিল। যদি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মুক্তাদিকে ইমামের পেছনে কুরআন পড়ার নির্দেশ দিতেন, তাহলে তাদের সেটা জানা থাকত এবং তারা সে অনুযায়ীই আমল করতেন আর মানুষকে শেখাতেন। অথচ তাদের আমল ছিল ইমামের পেছনে কুরআন না পড়া এবং তারা মানুষকে এরই তালীম দিয়েছেন। (উমদাতুল ক্বারীঃ ৬৭:৩ ফাতহুল মুলহিমঃ ২০:২ ইলাউস সুনানঃ ৪৩:৪ তাবারীঃ ৩৭৮ : ১১ তাফসীর ইবনে কাসীরঃ ১ :২৮১) একারণে এই বিষয়ে হানাফী মাযহাবের ফাতওয়া হলো, যে কোন ধরনের নামাযে মুক্তাদির জন্য যে কোন কিরাত ওয়াজিব নয়। বরং মুক্তাদী চুপ থাকবে। কেউ যদি ইমামমের পিছনে কিরাত পড়ে তাহলে তার নামায আদায় হয়ে গেলেও মাকরূহের সহিত আদায় হবে। হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা বুরহানুদ্দীন মরগনানী (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ, মুক্তাদী ইমামের পিছনে কিরাত পড়বে না। (শরহ বেদায়াতুল মুবতাদীঃ ১/৫৫) মাউসূআতুল ফিকহিয়্যা-এর মধ্যে রয়েছে অর্থাৎ, এবং হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কিরাম এই দিকে গিয়েছেন যে, মুক্তাদী ইমামের পিছনে কোন অবস্থায় কিরাত পড়বে না। এমন কি নিরবে কিরাত পড়ার নামাযেও। এবং ইমামের পিছনে কিরাত পড়া মাকরূহে তাহরীমী। (আল মাউসূআতুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়্যাঃ ৩৩/৫৩)

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ