আসসালামু আলাইকুম।  আজ আপনাদের কাছে খুব সিরিয়াস একটা বিষয়ে পরামর্শ চাইতে আসছি। অনেক আলেম বা দ্বীনি ভাই আছেন, প্লিজ আমাকে সাহায্য করবেন।


সংক্ষেপেই বলিঃ

আমাদের এলাকার কয়েকজন পরিবার ১৯৮০-৮৫ এমন সময়ে এক দরবেশ/পীর এর খোজ পায়। সেই দরবেশ/পীর নাকি অনেক কারামত দেখাইত। এসব দেখে তারা সেই দরবেশ এর অনুসরণ শুরু করসে। যাই হোক, সেই দরবেশ এর কাছে নাকি আল্লাহ স্বপ্নযোগে কিছু নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার মধ্যে একটা হচ্ছে নামাজ বাংলায় পড়তে হবে।যেহেতু তাদের ভাষা বাংলা, সো তারা বাংলায় নামাজ পড়বে এবং আল্লাহ নাকি সেই পীরকে স্বপ্নে বাংলায় সুরা শিখাইসেন। এবং বাংলায় নামাজ বলতে এমনটা ভাববেন না যে, তারা কুরআন এর বাংলা অনুবাদ পড়ে, ওই দরবেশ স্বপ্নযোগে নাকি কি কি শিখসে, সেইগুলাই সুরা হিসেবে বানাইসে এবং তারা সেই অনুযায়ী নামাজ পড়ে। আযান থেকে শুরু করে সব তারা বাংলায় পড়ে।
আর তারা যে আযান দেয় বা যা সূরা পড়ে সেইগুলা যদি আমরা মুসলিম রা পড়ি তাইলে আমাদের ঈমান চলে যাবে। কারণ তারা উদ্ভট সব জিনিস পড়ে।
তারা নামে মুসলিম বাট সত্যি হচ্ছে তাদের ঈমান নাই।


এইখানে সবথেকে দুঃখের বিষয় হচ্ছে আমার বাবাও এই জিনিসটা ফলো করে, শুধু ফলো করে না, মনে প্রাণে বিশ্বাস করে।
বাংলায় নামাজ পড়ে এমন লোক এখন পর্যন্ত ৪জন বেচে আছে, তাদের মধ্যে আমার বাবাও একজন। আর তারা প্রত্যেকেই দুনিয়াবি শিক্ষায় উচ্চ শিক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত। আর হ্যা, তারা তাদের এই বাংলায় নামাজ পড়ার জন্য ছোট একটা মসজিদ ও বানাইয়া রাখসে। অন্যান্য মসজিদেও নামাজ পড়ে তারা, বাট পড়ে বাংলাতেই।


আগে ছোট ছিলাম তাদের এইসব ব্যাপার বুঝতাম না, শুধু আম্মু বলত যে ওই মসজিদ এর আশে পাশেও যাবি না, আমি তাই ওইদিকে যাইতাম না। আম্মু আরবি শিখাইত আর বাসায় হুজুর পড়াইতে আসতেন।

আমি ছোটবেলা থেকে শুধু জানতাম যে তারা বাংলায় নামাজ পড়ে, কিন্তু বড় হওয়ার পর ধীরে ধীরে যখন তাদের সকল কিছু জানতে পারলাম তখনো বুঝি নাই যে ব্যাপার টা এতটা সিরিয়াস। বুঝিনাই যে তারা নামে মুসলিম, বাট তারা নিজেরাও জানেনা যে তাদের ঈমান নাই। আর সবচাইতে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে তারা সত্যকে বুঝার কোন চেষ্টাই করছে না।


এখন একজন সন্তান হিসেবে কিভাবে আমার বাবাকে আমি জাহান্নামী হতে দেখতে পারি? আমি আব্বুকে কিভাবে বুঝাবো, বা বুঝাইলেও তিনি আমার কথা গুলা গুরুত্ব দিবেন কিনা, আমি কিচ্ছু বুঝতেসি না। মানসিকভাবে খুব কষ্টে আছি ভাই, বুঝাইতে পারতেসিনা কি পরিমাণ টেনশনে আছি আমি। এমন অবস্থায় যদি তার মৃত্যু হয়, তাইলে আমি তার জন্য আল্লাহর কাছে দুয়া পর্যন্ত করতে পারব না। খুব বেশি পেরেশানি তে আছি ভাই।

আপনারা যদি একটু সাজেশন দিতেন,যে কিভাবে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করা যায়। তাহলে খুব উপকৃত হতাম।


জাযাকাল্লাহু খাইরান। আর সবাই আমার বাবা এবং বাকি লোকদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন প্লিজ। আল্লাহ যেন সবাই হেদায়েত দান করেন এবং সঠিক আমল করার তৌফিক দান করেন।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
e~m~o~n

Call

দেখেন এটা আপনাদের ভুল কারন সবাই জানে যত কিছুই হোক আল্লাহর সাথে কাউকে মিলাতে নেই এতে শিরক হয়। সকল শিরক কারী জাহান্নামী তাই যারা এরূপ করে তাদের ইমানের দোষ আছে।যতকিছুই হোক না কেন আগে ইমান ঠিক করেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

প্রথমতঃ তারা যে আজান দেয় বা যা সূরা পড়ে সেই গুলা যদি আমরা মুসলিমরা পড়ি তাহলে আমাদের ঈমান চলে যাবে। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা প্রিয় নবী (সাঃ) কে প্রথমে এই বলে সকল মানুষকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে বলেছেন যে, পারলে তারা যেন কোরআনের সমমর্যাদার কোন গ্রন্থ বানিয়ে দেখায়ঃ বলুন! যদি সকল মানুষ ও জিন মিলে কোরআনের অবিকল কিছু বানিয়ে আনার চেষ্টা করে, তবুও তারা পারবেনা, এমনকি যদি তারা একে অপরকে সাহায্যও করে। (সূরা আল-ইসরাঈলঃ ১৭:৮৮) দ্বিতীয়তঃ সেই দরবেশ এর কাছে আল্লাহ স্বপ্নযোগে কিছু নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার মধ্যে একটা হচ্ছে নামাজ বাংলায় পড়তে হবে। এটা হচ্ছে তার ভন্ডামি। নামাজ একটি ইবাদত। ইবাদতের মাঝে যা কিছু করা হয়, সবই উক্ত ইবাদতের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং তার মাঝে দোয়া করা সেটিও ইবাদতের অংশ। আর ইবাদত আরবি ভাষায়ই আদায় করতে হয়। অন্য ভাষায় ইবাদত আদায় হয় না। যেমন নামাজ, হজ্বের তাকবির, আজান, ইকামত ইত্যাদি। সুতরাং অন্য ভাষায় দোয়া করলে নামাজ হবে না। বরং দোয়া আরবি ভাষায়, বা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত দোয়াই কেবল করা যাবে। নামাজে দোয়া করতে হলে আরবি দোয়াই করা এটিই বিধান। (আদদুররুল মুখতারঃ ২/২৩৩-২৩৪, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়াঃ ২/৩, বাহরুর রায়েকঃ ১/৫৭৬) নফল নামাজে চাই তা তাহাজ্জুদ হোক বা অন্য নামাজ হোক সিজদায় গিয়ে কুরআন সুন্নাহে বর্ণিত দোয়া করা যাবে। বা কুরআনে বা হাদিসে আছে এমন দুআর সমার্থক শব্দের দুআ করা যাবে। বা আখেরাতের জন্য দুআ করা যাবে। কিন্তু দুনিয়াবী দুআ করা যাবে না। আরবি ছাড়া অন্য ভাষায়ও দুআ করা যাবে না। দুনিয়াবী দোয়া করলে বা আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় দুআ করলে নামায ভেঙ্গে যাবে। তৃতীয়তঃ এখন একজন সন্তান হিসেবে উপরিউক্ত রেফারেন্স অনুযায়ী বাবাকে বুঝান। হেদায়েতের মালিক আল্লাহ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ